ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১

কীটনাশকের আগ্রাসন

প্রকাশিত: ২০:০১, ২১ মার্চ ২০২৫

কীটনাশকের আগ্রাসন

দেশের কৃষকরা আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমাদের খাদ্যের জোগান হয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তাদের এই ত্যাগের মূল্যায়ন যথাযথভাবে হয় না। এক জরিপে দেখা যায়, হাসপাতালে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৬৪ শতাংশই কৃষক। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর প্রধান কারণ কীটনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ও অতিরিক্ত ব্যবহার। অধিক ফলনের আশায় কৃষক ব্যাপকহারে কীটনাশক ব্যবহার করে। যদিও এটি ফসলকে কীট-পতঙ্গের হাত থেকে রক্ষা করে, কিন্তু অতিরিক্ত ও অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ফলে মাটি পানি ও বায়ু দূষণ ঘটে। যা মানব স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপরে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। কৃষক প্রায়ই সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে কীটনাশক প্রয়োগ করার ফলে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হন, যা পরবর্তীতে দীর্ঘমেয়াদে শ্বাসকষ্ট ও ক্যান্সারে রূপ নেয়। এছাড়াও বাজারের ৭০ শতাংশ খাবারে ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহৃত হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। এই পরিস্থিতিতে, সরকারের নীতিগত হস্তক্ষেপ ও কঠোর নিয়ন্ত্রণ, কীটনাশকের বিকল্প হিসেবে বায়োপেস্টিসাইড বা প্রাকৃতিক নাশক ব্যবহারের প্রচলন, কৃষকদের কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন, নিরাপদ ও জৈবিক বালাইনাশক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা এবং সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম ব্যবহারে প্রশিক্ষণ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কৃষক বাঁচলে কৃষি বাঁচবে, কৃষি বাঁচলে দেশ বাঁচবে। তাই কৃষকের জীবন রক্ষায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা সময়ের দাবি।

হাবিব আল মিসবাহ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

×