ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১

প্রযুক্তি ডিভাইসের প্রসার ঘটলেও শিল্পায়নে পিছিয়ে বাংলাদেশ

সাদিয়া সুলতানা রিমি

প্রকাশিত: ১৯:৩৯, ২১ মার্চ ২০২৫

প্রযুক্তি ডিভাইসের প্রসার ঘটলেও শিল্পায়নে পিছিয়ে বাংলাদেশ

কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাব এবং অ্যান্ড্রয়েড ফোন এখন বাংলাদেশের মানুষের হাতে পৌঁছে গেছে। যা ব্যক্তি সম্মিলিত উভয় পর্যায়ে ডিজিটাল যোগাযোগকে অনেক সহজ বিস্তৃত করেছে। এখন দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে টাকা লেনদেন করতে ব্যাংক পোস্ট অফিসে লাইন দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। কারণ অনলাইন ব্যাংকিং মোবাইল লেনদেন ব্যবস্থা এটিকে মাত্র কয়েক মিনিটের কাজ করে দিয়েছে। আগে যেখানে প্রিয়জনদের চিঠি পাঠিয়ে উত্তর পাওয়ার জন্য সপ্তাহের পর সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হতো, এখন প্রতিদিন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সহজেই যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে।

তবে প্রযুক্তির প্রসার এবং উন্নত ডিভাইসের সহজলভ্যতা সত্তে¡ আমাদের দেশে এখনো অনেক মানুষ তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) দক্ষতার অভাবে ভুগছেন। বিশেষ করে দেখা গেছে, বর্তমান সময়ের তরুণরা মোবাইল ফোনে গেম খেলা, গান শোনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্রাউজ করেই বেশিরভাগ সময় ব্যয় করছে। কিন্তু তারা নিজেদের আইসিটি দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত সময় বা প্রচেষ্টা ব্যয় করছে না। এখানে আইসিটি দক্ষতা বলতে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ব্যবহার করে চিঠি, নিবন্ধ, প্রতিবেদন, জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) ইত্যাদি তৈরি করার সক্ষমতাকে বোঝানো হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে অনেক তরুণের সঙ্গে কথা বলেছি, যাদের কম্পিউটার ব্যবহারে অদক্ষতা আমাকে অবাক করেছে। অথচ কম্পিউটার গেম খেলার ক্ষেত্রে তাদের গতি অত্যন্ত বেশি। গেম বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণযোগ্য, তবে সেটি যদি আসক্তির পর্যায়ে চলে যায়, তাহলে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে। অন্যদিকে কম্পিউটারে বাংলা ইংরেজিতে টাইপ করার দক্ষতা অর্জন ভিডিও গেম বা প্লে স্টেশনের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দেশের অভিভাবকদের বিষয়ে আরও সচেতন হওয়া দরকার। অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের দিনের পর দিন কম্পিউটার মোবাইল ফোনে অপ্রয়োজনীয় কাজ করার সুযোগ না দেওয়া। বরং, তারা যেন কম্পিউটার ল্যাপটপ ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে পারে, সে বিষয়ে উৎসাহিত করা উচিত। কারণ, বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের অনেক তরুণ-তরুণী ভালো চাকরি পাচ্ছে না শুধু তাদের দুর্বল আইসিটি ইংরেজি দক্ষতার কারণে।

বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যেও আইসিটি দক্ষতার অভাব রয়েছে। এখনো দেশের অধিকাংশ সরকারি অফিস ফাইল কাগজপত্রের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল, যা আমলাতান্ত্রিক জটিলতার জন্য দায়ী বলে অনেকে মনে করেন। -মেইল বিনিময়, ইন্টারনেট ব্রাউজিং এবং অন্যান্য ডিজিটাল কার্যক্রম সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে এখনো তেমন জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। অথচ, আইসিটি তথ্যপ্রযুক্তি-সক্ষম সেবার দক্ষতা বাংলাদেশের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করতে পারে। একই সঙ্গে দক্ষ যুবকদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।

 

লেখক : শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

×