ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১

রিক্সাচালকদের প্রতি সদাচরণ

প্রকাশিত: ২০:০২, ১৪ মার্চ ২০২৫

রিক্সাচালকদের প্রতি সদাচরণ

রমজান মাস মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। এই মাসে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইবাদত, দান-খয়রাত এবং ভালো আচরণের মাধ্যমে নিজেদের উন্নত করার চেষ্টা করি। রমজানের পবিত্রতা শুধু ব্যক্তিগত ইবাদতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি সামাজিক দায়িত্ববোধ ও মানবিক মূল্যবোধেরও প্রতীক। এ মাসে আমাদের উচিত সবাইকে সহানুভূতি ও সম্মানের সঙ্গে দেখা, বিশেষ করে সমাজের যারা কঠোর পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করেন, যেমনÑ রিক্সাচালকদের প্রতি সদাচরণ করা। রিক্সাচালকরা আমাদের সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তারা দিনরাত পরিশ্রম করে আমাদের যাতায়াতের সুবিধা প্রদান করেন। বিশেষ করে রমজান মাসে, যখন গরম ও দীর্ঘ সময়ের রোজা রাখা হয়, তাদের কাজ আরও কঠিন হয়ে ওঠে। এই সময়ে তাদের প্রতি আমাদের আচরণে বিশেষ সতর্কতা ও সহানুভূতি প্রদর্শন করা উচিত।
প্রথমত, রিক্সাচালকদের সঙ্গে কথা বলার সময় নম্র ও সম্মানজনক আচরণ করা জরুরি। তাদের কাজের কষ্টকে সম্মান এবং তাদের প্রতি ধৈর্য ধারণ করা আমাদের কর্তব্য। অনেক সময় রাস্তায় যানজট বা অন্যান্য সমস্যার কারণে রিক্সাচালকদের গতি ধীর হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে তাদের সঙ্গে রাগারাগি বা অসৌজন্যমূলক আচরণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। বরং তাদের কষ্টকে বুঝতে হবে এবং সহানুভূতিশীল আচরণ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, রমজান মাসে রিক্সা ভাড়া নিয়ে বিশেষ সচেতনতা প্রয়োজন। এ মাসে আমাদের উচিত রিক্সাচালকদের সঙ্গে সঠিক ও ন্যায্য ভাড়া নিয়ে আলোচনা করা। অনেক সময় রিক্সাচালকরা তাদের পরিবারের প্রয়োজনে অতিরিক্ত পরিশ্রম করেন। তাই তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের অসদাচরণ বা ভাড়া নিয়ে বিতর্কে জড়ানো উচিত নয়। বরং প্রয়োজনে কিছু বেশি ভাড়া দেওয়ার মাধ্যমে তাদের সহায়তা করা যেতে পারে। তৃতীয়ত, রমজান মাসে দান-খয়রাতের মাধ্যমে রিক্সাচালকদের সাহায্য করা একটি মহৎ কাজ। অনেক রিক্সাচালক আর্থিক সংকটে থাকেন। এই সময়ে কিছু আর্থিক সাহায্য বা ইফতারের সময় খাবার দেওয়ার মাধ্যমে তাদের পাশে দাঁড়ানো যায়। এটি শুধু তাদের কষ্ট লাঘব করবে না, বরং আমাদের আত্মারও পরিশুদ্ধি ঘটাবে। রমজান মাসে রিক্সাচালকদের প্রতি সদাচরণ শুধু তাদের প্রতি দায়িত্বই নয়, বরং এটি আমাদের মানবিক মূল্যবোধেরও প্রতিফলন। এই মাসে আমরা যেন তাদের কষ্টকে সম্মান করি, তাদের সঙ্গে নম্র আচরণ করি এবং প্রয়োজনে তাদের সাহায্য করি। এতে করে আমরা একটি সুন্দর ও সহানুভূতিশীল সমাজ গঠনে অবদান রাখতে পারব। রমজানের প্রকৃত শিক্ষা হলো মানবতার সেবা করা এবং সবাইকে সম্মান দেওয়া। তাই আসুন, এই পবিত্র মাসে রিক্সাচালকদের প্রতি সদাচরণের মাধ্যমে আমরা আমাদের সমাজকে আরও সুন্দর করে গড়ে তুলি।

সাদিয়া সুলতানা রিমি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

×