
অনেক উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশ ক্রমশ অভেদ্য এক ‘দীর্ঘমেয়াদি ঋণের চক্রে’ আটকে পড়ছে। এ কথা দেশের কিছু অর্থনীতিবিদ অনেক দিন ধরেই বলে আসছেন এবং বলছেন, বিদেশী ঋণ না নিয়ে নিজস্ব অর্থ ও উন্নয়ন দর্শনে বাংলাদেশের উন্নয়ন কাজ করা হোক। তাদের কথা কেউ আমলে নেয় না পাগলের প্রলাপ আ্যখ্যা দিয়ে। কিন্তু এখন সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর এজেন্ট হিসেবে বাংলাদেশের মতো সম্ভাবনাময় দেশকে ঋণের জালে আটকে রাখার মূল হোতা বিশ্বব্যাংকও স্বীকার করছে, নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর সম্মিলিত বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ১.৪৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। যার বড় অংশই জনগণের মৌলিক সেবার পরিবর্তে ঋণ পরিশোধে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং বাংলাদেশও একই পরিস্থিতিতে পড়েছে। আরেক এজেন্ট আইএমএফ বলছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি ডলার অতিক্রম করেছে এবং দেশটি প্রতি বছর ঋণ পরিশোধে কয়েক বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে, যা স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মোট বাজেটের চেয়ে বেশি। উল্লেখ্য, দীর্ঘমেয়াদি ঋণচক্র (লং টার্ম ডেবট সাইকেল) হলো অর্থনীতির এমন একটি পর্যায় যেখানে সরকার, ব্যক্তি বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ক্রমাগত ঋণগ্রহণের মাধ্যমে ব্যয় নির্বাহ করে। কিন্তু এই ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করতে গিয়ে নতুন ঋণ গ্রহণের প্রয়োজন হয়। তাই আরও ঋণ নেয়। এভাবে সময়ের সঙ্গে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং একটি চক্র তৈরি হয়, যা থেকে নিস্তার পাওয়া একসময় প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এ কারণেই বিশ্বের এক নম্বর পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বহুদিন ধরেই বিশ্বের সবচেয়ে ঋণগ্রস্ত দেশ। দেশটির জাতীয় ঋণের পরিমাণ বিশ্বের যে কোনো দেশের তুলনায় বেশি, ২০২৪ সালের হিসাবে ৩৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। দেনা করতে করতে দেশটির এমন অবস্থা হয়েছে যে নিজের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে হেন অন্যায় কাজ নেই, যা সে করছে না। দেশটির সরকার ও জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিরাও স্বীকার করেন যে, এই করতেই করতেই দেশটির ভেতরে পচন ধরেছে এবং ক্যান্সারের দ্বিতীয় স্টেজে অবস্থান করছে।
দেশী-বিদেশী পরিসংখ্যান বলছে, আগামী ৩ বছরে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বাড়বে ৬৩ শতাংশ। এর অর্থ হচ্ছে, ভ্যাটের নামে সাধারণ জনগণের রক্তচুষে আদায় করা কর-রাজস্বের সিংহভাগই ব্যয় হবে ঋণের সুদ পরিশোধে। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের বকেয়া বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ৬২ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো বহুপক্ষীয় ঋণদাতাদের কাছে ৫৯ শতাংশ, বাকিটা দ্বিপক্ষীয় ঋণদাতাদের কাছে। উল্লেখ্য, ঋণের মেয়াদপূর্তির পর মূল অর্থের ঋণ পরিশোধ শুরু হয়, যার মেয়াদ ২০-৩০ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। ঋণ বিতরণের পরই সুদ পরিষেবা শুরু হয়। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ-আইডিবির পাশাপাশি গত ১৫ বছরে রাশিয়া, ভারত ও চীন বাংলাদেশের প্রধান ঋণদাতা হয়ে উঠেছে। বর্তমানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য রাশিয়ার কাছে সরকারের ঋণের পরিমাণ প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার। এদিকে গত ডিসেম্বরে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়নের ব্যাংকের (এডিবি) কাছ ১.১ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা পাওয়ার পরও চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (প্রথম ৬ মাসে, জুলাই-ডিসেম্বর) উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাংলাদেশের ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে ৬৭.১১ শতাংশ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পেয়েছে ২.২৯৮ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬.৯৮৯ বিলিয়ন ডলার।
দীর্ঘমেয়াদি ঋণচক্রের কুফল আলোচনার আগে একটি বিষয় বলা দরকার। বাংলাদেশের অনেক গণমাধ্যম আলো করা থাকা অনেক অর্থনীতিবিদ, যারা বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ-এডিবির মতো ঋণের কারবারি, আন্তর্জাতিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজবাজ করেন বা করেছেন, তারা প্রায়ই বলেন যে বাংলাদেশের বিদেশী ঋণের পরিমাণ এখনো উদ্বেগজনক নয়, সীমার বাইরে নয়, এমন করলে ঠিক হয়ে যাবে, আশঙ্কার কিছু নেই ইত্যাদি ইত্যাদি। তাদের এসব কথাবার্তা অনেকে অভয়বাণী মনে করে নিশ্চিন্ত হয়। কিন্তু অর্থনীতি শাস্ত্রের আলোকে যাচাই করলে এসব অভয়বাণীর উদ্দেশ্য নিয়ে শঙ্কা হয়। একটি ছোট্ট উদাহরণ দিই। ২০০৯-১০ অর্থবছরে মোট রাজস্ব বাজেটের ১৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ খরচ হয়েছিল সুদ পরিশোধে, যা ২০২০-২১ অর্থবছরে দাঁড়ায় ২১ শতাংশে। অথচ চলমান ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে সরকারের মোট রাজস্বের অর্ধেকের বেশি খরচ হয়েছে শুধু সুদ পরিশোধে। এ সময়ে সুদ পরিশোধ করা হয় ৫৮ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮৪ শতাংশ বেশি এবং সরকারের মোট রাজস্ব ব্যয়ের ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ। এর মধ্যে ৮৮ দশমিক ৫ শতাংশ বা ৫১ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয় অভ্যন্তরীণ ঋণের বিপরীতে। বাকি ৬ হাজার ৭০২ কোটি টাকা গেছে বিদেশী ঋণের সুদ পরিশোধে। বলা হচ্ছে, অতিরিক্ত ঋণ ও সুদহার বেড়ে যাওয়ায় এমন হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যেসব অর্থনীতিবিদ ‘উদ্বেগ নাই’ ‘এমন হলে ওমন হবে’ কিংবা ‘এমন করলে আশঙ্কার কিছু নেই’ বলে সরকারকে আরও ঋণ নিতে উৎসাহিত করেন, তারা রাজস্ব ব্যয়ের অর্ধেকের বেশি ঋণ পরিশোধের ব্যাখ্যা কিভাবে দেনÑ সেটাই প্রশ্ন। তারা নিশ্চয়ই এটুকু বোঝেন যে, সারা মাস বা বছরজুড়ে অর্থ আয়ের সময় কৃত ঋণের সুদ পরিশোধের পরিমাণ বাড়তে থাকলে থাকা-খাওয়া কিংবা উন্নয়ন খাত, যা-ই বলি তাতে তো টান পড়ে এবং এই টান বাড়তে বাড়তে গলায় ফাঁসের মতো আটকে গেলে দমবন্ধ অবস্থা হয়। বাংলাদেশেরও অনেকটা তেমন অবস্থা হয়েছে। আগামীতে আরও হতে পারে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গত কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি ঋণচক্র একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠেছে। যার প্রমাণ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মাথাপিছু বিদেশী ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫৭ ডলার, যা ২০২০-২১ অর্থবছরে দাঁড়ায় ৪৮২ ডলার, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫৫৮ ডলার এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মাথাপিছু বিদেশী ঋণের পরিমাণ ৬০৫ ডলার (৭৩,৫৩০.২৪ টাকা, অভ্যন্তরীণ ঋণ মিলিয়ে দেড় লাখ টাকার বেশি)। সব মিলিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের মোট বিদেশী ঋণের পরিমাণ ১০৩ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে সরকারি খাতে ঋণ ৮৩ বিলিয়ন ডলার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই ঋণের পরিমাণ আরও বেড়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বৈশ্বিক ইতিহাসে দেখা গেছে, কিভাবে অতিরিক্ত ও অনিয়ন্ত্রিত ঋণ একটি দেশে অর্থনৈতিক মন্দা, মুদ্রাস্ফীতি ও সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে। ধনী ও সম্পদশালীদের ওপর কর না বাড়িয়ে, সম্পদ কর আরোপের পক্ষে জোরালো অবস্থান না নিয়ে যেসব অর্থনীতিবিদ বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ-আইডিবির ঋণ নিয়ে উন্নয়নকাজ ও বাজেট ঘাটতি মেটানোকে উদ্বেগের বিষয় নয় বলে সরকারকে মন্ত্রণা দেন, তারা ভালো করেই জানেন যে, পৃথিবীতে ৯০ বছর পরপর যে মহামন্দা আসে, সেটা আসলে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার দীর্ঘমেয়াদি ঋণচক্রের অন্তর্নিহিত ফল। তারা আরও জানেন যে, ১৯২৯-৩০ সময়কালে দীর্ঘমেয়াদি ঋণচক্রের ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমি তৈরি হয়েছিল। আর ২০১৯-২০ সময়কালের পর শুরু হয় বর্তমান বিশ্বজুড়ে যুদ্ধপরিস্থিতি, কোভিড-১৯ মহামারি এখানে বাড়তি সংযুক্তি। অর্থনীতির এমন পরিস্থিতিতে সমাজে মধ্যবিত্ত শ্রেণি ‘নিজের স্বার্থকে’ বেশি গুরুত্ব এবং ‘কায়দা করে বেঁচে থাকা’র কৌশল নেন। অন্যদিকে দরিদ্ররা মনে করেন, ‘ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন’ দেখে কী হবে, যেভাবে জন্মেছি সেভাবে মরতে পারলেই বাঁচি। বাংলাদেশে এই দুই শ্রেণির এখন এ অবস্থা চলছে। তাই বেশিরভাগ মানুষই এখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি অদৃষ্টবাদী, হতাশ, নিরাশ। বিষয়টি নিত্যদিন চলাফেরায় অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে একটু কান পাতলেই বোঝা যায়। এসবই আসলে জাতীয় অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদি ঋণ চক্রের অভিশাপ।
সে যাই হোক, বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণচক্রের নেতিবাচক প্রভাবের মধ্যে রয়েছে।
১. ঋণের সুদ পরিশোধের বোঝা বৃদ্ধিÑ
বাংলাদেশ প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ করে। এ সুদের বোঝা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা জাতীয় বাজেটে উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ কমিয়ে দিচ্ছে এবং অবকাঠামো, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করছে।
২. মুদ্রাস্ফীতি ও মুদ্রার অবমূল্যায়নÑ
বৈদেশিক ঋণের অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা ও ঋণের ওপর সুদ পরিশোধের জন্য মুদ্রা ছাপানোর প্রবণতা মুদ্রাস্ফীতি বাড়ায়। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্র যখন ব্যাপক সরকারি ব্যয়ের কারণে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির সম্মুখীন হয়েছিল, তখন তাদের মুদ্রার মূল্য হ্রাস পেয়েছিল।
৩. বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধির ওপর নেতিবাচক প্রভাবÑ
বেসরকারি খাতের জন্য ঋণ পাওয়ার সুযোগ কমে যাচ্ছে সরকার বড় অংশের ঋণ গ্রহণ করায় এবং উচ্চ সুদহার নির্ধারণ করছে। এতে শিল্প ও কৃষি খাতে বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে। যা দীর্ঘমেয়াদের জন্য প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
৪. সার্বভৌম ঋণ সংকটের ঝুঁকিÑ
অনিয়ন্ত্রিত ঋণগ্রহণ অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করে। যেমনÑ গ্রিস, আর্জেন্টিনা এবং শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, যারা উচ্চ ঋণের কারণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং অন্যান্য সংস্থার কঠোর শর্তযুক্ত সহায়তার মুখোমুখি হচ্ছে, যা তাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা কমিয়ে দিচ্ছে।
এমন এক অবস্থায় অনেকের প্রশ্ন হতে পারে, বাংলাদেশের আসলে এখন করণীয় কী? সংক্ষেপে বলা যায়Ñ
১. ঋণ ব্যবস্থাপনায় কৌশলগত পরিকল্পনাÑ
* স্বল্প সুদের দীর্ঘমেয়াদি ঋণ গ্রহণ করা
* উচ্চ সুদের ঋণ পরিশোধে অগ্রাধিকার দেওয়া
* বাজেটের ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর নীতিমালা গ্রহণ করা।
২. রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি ও কর সংস্কারÑ
* কর ফাঁকি রোধ ও করজালের সম্প্রসারণ
* প্রত্যক্ষ করের ওপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি
* সরকারি ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
৩. রপ্তানি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের উৎস বাড়ানোÑ
* পণ্য ও সেবার বহুমুখীকরণ
* রপ্তানিযোগ্য শিল্পের জন্য বিশেষ প্রণোদনা
* রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য অভিবাসন নীতি সহজ করা
৪. সরকারি ব্যয়ের দক্ষ ব্যবস্থাপনাÑ
* অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় কমানো
* অবকাঠামো ও মানবসম্পদ উন্নয়নে ব্যয়ের অগ্রাধিকার
* দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ।
৫. বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধিÑ
* সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) মডেলের সম্প্রসারণ
* শিল্প ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণচক্র থেকে মুক্ত রাখতে চাইলে পরিকল্পিত ও দূরদর্শী নীতি গ্রহণ করা জরুরি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সুদূরপ্রসারী অর্থনৈতিক নীতিমালা গ্রহণের মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা সম্ভব। এক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও কাজটি আসলে তাদের নয়, রাজনৈতিক সরকারের। কিন্তু গত ৫৪ বছর ধরে রাজনৈতিক সরকারগুলো কিছুই করেনি। যে-ই ক্ষমতায় এসেছে কথিত দাতাদের ঋণ নিয়ে দাতা ও নিজেরা ভাগাভাগি করে বেশির ভাগই বিদেশে পাচার করেছে এবং জনগণকে উচ্ছিষ্ট হিসেবে কিছু দিয়েছে। তাই পরিবর্তিত বিশ্ব ও দেশীয় প্রেক্ষাপটে ঋণের বিষয়টি এখন গভীরভাবে ভেবে দেখার সময় এসেছে।
লেখক : অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়