ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১

ঢাকার দিনরাত

মারুফ রায়হান

প্রকাশিত: ১৯:৪৭, ১০ মার্চ ২০২৫

ঢাকার দিনরাত

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে বুধবার। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থল ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকা। ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ৪৪৯ কিলোমিটার। উৎপত্তিস্থলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৬। এটি মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হিসেবে বিবেচিত। ভূমিকম্পে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে গত ১০ দিনে ৪ বার দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হলো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের আশপাশে ও দেশের ভেতরে ছোট বা মাঝারি আকারের ভূমিকম্প বেড়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে এবং আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ৫৩টি ভূমিকম্প হয়। এটি ছিল আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এভাবে ছোট বা মাঝারি ভূমিকম্পের সংখ্যা বেড়ে যাওয়াটা বড় ভূমিকম্পের পূর্বলক্ষণ বলে মনে করছেন ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা। ঐতিহাসিক ভূমিকম্পের পরম্পরা বিশ্লেষণ এবং দিন দিন সংখ্যা বৃদ্ধির কারণেই এমনটা মনে করছেন তাঁরা।

ইফতারের আগে তীব্র যানজট

সব অফিস প্রায় একই সময়ে ছুটি হয়। আর ইফতারির সময় তো পূর্বনির্ধারিতই। বাসায় ইফতারি করতে ছোটা অফিসফেরত ঢাকাবাসী বরাবরের মতোই রমজানে নাজেহাল হচ্ছেন তীব্র যানজটে। এক শুক্রবার ছাড়া বাকি ৬ দিনই রমজান মাসে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটে নাকাল হচ্ছেন ঢাকাবাসী। মেট্রোরেলেও যাত্রীদের বাড়তি চাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমি উত্তরা থেকে জনকণ্ঠ ভবনে আসতে-যেতে মেট্রোরেলেই চড়ছি। সম্ভবত ঢাকার বাসেও এমন গায়ে গা লাগা মানুষের ভিড় থাকে না। মেট্রোরেল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বলেই কিছুটা রক্ষে। তা না হলে গরমে সিদ্ধ হতে হতো। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রমজানের নতুন অফিস সূচির কারণে ইফতারের আগে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতের জন্য একই সময়ে ছোটায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব এলাকার প্রধান প্রধান সড়কের পাশাপাশি অলিগলিতেও তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ যানজটের কারণে অনেক যাত্রীকে বাসে থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। এই অবস্থা ইফতারের আগ পর্যন্ত কম-বেশি অব্যাহত থাকায় গাড়ির বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে দেখা যায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশদের।
প্রায় প্রতিদিনই রাজধানীর কাওয়ানবাজার, শাহবাগ, মহাখালী, বনানী, গুলশান, বাড্ডা, হাতিরঝিল, মতিঝিল, বেইলি রোড, মগবাজার, পল্টন, গুলিস্তান, ধানমন্ডি, মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকায় তীব্র যানজটের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

পবিত্র রমজান মাসে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি চলছে
এদিকে মেট্রোরেলেও যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপের কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের। অফিস ছুটির পর থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত ব্যাপক ভিড় দেখা যায় মেট্রোরেলের স্টেশনগুলোতে। সড়কে তীব্র যানজটের কারণে অনেকে মেট্রোরেলমুখী হওয়ায় বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। বিকালে মতিঝিল থেকে উত্তরাগামী মেট্রোরেলে অফিস ফেরত যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। অফিসপাড়া মতিঝিল থেকে যাত্রীতে ঠেসে আসায় পরের স্টেশনগুলো থেকে যাত্রী কম ওঠার সুযোগ পেয়েছেন। ফলে প্রতিটি ট্রেন ও স্টেশনে যাত্রীদের চাপ তুলনামূলক বেড়ে যাওয়ায় পা রাখার জায়গাও যেন থাকে না।

বক্তব্যের প্রতিবাদে কুশপুত্তলিকা দাহ

রাজধানীর লালমাটিয়ায় প্রকাশ্যে ধূমপান করা নিয়ে দুই তরুণীকে লাঞ্ছনার ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন আন্দোলনকারীরা।
সোমবার (৩ মার্চ) ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ ব্যানারে একদল বিক্ষোভকারী লালমাটিয়ায় ওই ঘটনার স্থানে প্রতিবাদ জানান। পরে মিছিল সহকারে তারা জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে জড়ো হয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা দাহ করেন এবং তার অপসারণ দাবি করেন।
এর আগে গত শনিবার (১ মার্চ) রাজধানীর লালমাটিয়ায় এক চায়ের দোকানে প্রকাশ্যে ধূমপান করছিলেন দুই তরুণী। এ সময় নামাজে যাচ্ছিলেন এমন কিছু ব্যক্তি তাদের বাধা দেন এবং কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় ও গরম চা ছুড়ে মারা হয়।
পরদিন (রবিবার) সাংবাদিকরা এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি, তারা (দুই তরুণী) সিগারেট খাচ্ছিলেন, আর কিছু লোক নামাজে যাচ্ছিলেন। তারা বাধা দেওয়ায় তাদের ওপর চা ছুড়ে মারা হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘পাবলিক প্লেসে ধূমপান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই অপরাধ। সবাইকে অনুরোধ করব, কেউ যেন উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান না করে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এই বক্তব্যের পর ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মানবাধিকার কর্মী ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেন, এটি ভুক্তভোগীদের প্রতি দোষারোপমূলক বক্তব্য, যা নিপীড়নকে ন্যায্যতা দেয়। বিক্ষোভকারীরা দাবি জানান, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। দুই তরুণীর ওপর হামলার ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে। নারীদের প্রতি নিপীড়ন ও হয়রানির ঘটনায় প্রশাসনকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এখনো পর্যন্ত সরকার বা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পক্ষ থেকে নতুন কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

রোজায় গরুর মাংসের চাহিদা
এবং সুলভ মূল্যে বিক্রি

পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি কর্মসূচির আওতায় বিক্রি করা গরুর মাংসের মান নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সন্তুষ্টি ও আক্ষেপ দুটোই রয়েছে।
কেউ কেউ মাংস কিনে বলছেন, শুধু এই জায়গাতেই (অধিদপ্তরের পণ্য বিক্রির গাড়ি) ৬৫০ টাকা দিয়ে এক কেজি গরুর মাংস কেনা যায়। ঢাকার কোথাও এই দামে গরুর মাংস বিক্রি করা হয় না।
 কেউ আবার আক্ষেপ করে বলছেন, এক কেজিতে প্রায় আধা কেজি পরিমাণই হাড্ডি, কলিজা কিংবা অন্য কিছু। শুধু মাংসের পরিমাণ আরও বেশি হলে মানুষ সত্যিকারভাবেই উপকৃত হতো। সোমবার (৩ মার্চ) খামারবাড়ি গোলচত্বরসংলগ্ন ইস্পাহানি চক্ষু হাসপাতালের সামনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সুলভ মূল্যে দুধ-ডিম-মাংস বিক্রির কর্মসূচি থেকে পণ্য কিনতে যাওয়া মানুষ গরুর মাংস নিয়ে এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তবে ডিম ও দুধ নিয়ে মানুষের মধ্যে সন্তুষ্টি দেখা গেছে। বাজার থেকে কিছুটা কম দামে পেয়ে বাড়তি ডিম-দুধও কিনে নিচ্ছেন কেউ কেউ।
একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদক লেখেন : ‘রিক্সাচালক বাবুল মিয়া খালি রিক্সা নিয়ে পণ্য বিক্রির গাড়ির কাছে এসে রাস্তার একপাশে দাঁড় করিয়ে সারিতে দাঁড়ালেন। তখন মানুষ কম থাকায় পণ্য কেনার সারি খুব বেশি লম্বা ছিল না। প্রায় ১০ মিনিটের মাথায় তিনটি পণ্য গাড়িতে থাকা বিক্রয়কর্মীর কাছ থেকে বুঝে নিলেন বাবুল মিয়া। পণ্যগুলো পেয়ে তাঁর মুখে হাসি হাসি ভাব।

ছিন্নমূল মানুষের জন্য ইফতারির ব্যবস্থা করেছে কিছু সংগঠন
কাছে গিয়ে কী কী কিনলেন জিজ্ঞেস করতেই জানালেন, গরুর মাংস এক কেজি, এক লিটার দুধ আর এক ডজন ডিম কিনেছেন। পকেটে আর টাকা না থাকায় মুরগি আর কেনা হয়নি বলেও জানালেন বাবুল মিয়া। বাবুল মিয়া বলেন, তিনটা পণ্য কিনতে তাঁর প্রায় সাড়ে আটশ’ (৮৪৪ টাকা) টাকা লেগেছে। পকেটে এর বেশি আর টাকা ছিল না। আজকে সকাল থেকে রিক্সা চালিয়ে প্রায় ৩০০ টাকা রোজগার করেছেন। এ ছাড়া আগের কয়েক দিনের কিছু টাকা জমানো ছিল। বাবুল মিয়ার সঙ্গে কথা বলার সময় লাইনে দাঁড়ানো অন্যরা তাঁকে পাশ থেকে জিজ্ঞেস করছিলেন, গরুর গোশত নাকি বেশি ভালো না। কেনা কী ঠিক হবে? তাঁদের উদ্দেশে বাবুলের জবাব, ‘শুধু এহানেই ৬৫০ টাকায় গরুর গোস্ত পাবেন। আর কোথাও না।’
ওইদিন সাড়ে ১০টার দিকে গাড়ি থেকে পণ্য কেনা এক নারীকে দুইবার বিক্রয়কর্মীর কাছ থেকে গরুর মাংসের প্যাকেট বদলে নিতে দেখা গেছে। তবু ওই নারী অধিদপ্তরের বিক্রি করা মাংস নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। শেষে ওই নারীকে অধিদপ্তরের কর্মীদের উদ্দেশে বলতে শোনা গেছে, ‘হাড্ডি, কলিজা আর ছাবা দিয়াই ভরাই রাখসেন, আসল মাংস তো একেবারে কম। মাংস কম দিয়া গরিব মাইনসেরে ঠকাইয়া লাভ কী?’ পরে ওই নারীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি নাম পরিচয় জানাতে রাজি হননি। ওই জায়গায় বিক্রি তদারকির দায়িত্বে থাকা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক লিয়াকত হোসেন বলেন, সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে বিক্রি শুরু করা হয়। আজ তাঁরা খামারবাড়িতে সাড়ে ৯টায় বিক্রি শুরু করেছেন। সেখানে আজ ৬০ কেজি গরুর মাংস, ৮৮ কেজি ড্রেসড ব্রয়লার, ২১১ লিটার দুধ ও ১৮৩ ডজন ডিম (বাড়তি এক হালিসহ ২২০০পিস) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শুরুতে মানুষের উপস্থিতি বেশি ছিল বলেও জানান তিনি। ওই জায়গায় সাড়ে ১১টার দিকে গরুর মাংস শেষ হয়।
ঢাকায় ২৫টি স্থানে ১-২৮ রমজান পর্যন্ত সুলভ মূল্যে প্রাণিজাত পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এলাকাগুলো হচ্ছে সচিবালয়ের পাশে (আবদুল গণি রোড), খামারবাড়ি (ফার্মগেট), ষাটফুট রোড (মিরপুর), আজিমপুর মাতৃসদন (আজিমপুর), নয়াবাজার (পুরান ঢাকা), বনশ্রী, হাজারীবাগ (সেকশন), আরামবাগ (মতিঝিল), মোহাম্মদপুর (বাবর রোড), কালশী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিক নগর গলির মুখে), শাহাজাদপুর (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি বনানী, কামরাঙ্গীরচর চর, খিলগাঁও (রেলক্রসিংয়ের দক্ষিণে), নাখালপাড়া (লুকাস মোড়), সেগুনবাগিচা (কাঁচাবাজার), বসিলা (মোহাম্মদপুর), উত্তরা (হাউস বিল্ডিং), রামপুরা (বাজার), মিরপুর ১০, কল্যাণপুর (ঝিলপাড়), তেজগাঁও, পুরান ঢাকা (বঙ্গবাজার) ও কাকরাইল।

অবাঞ্ছিত অনভিপ্রেত

ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আগাগোড়া দেখলে মন ভার হয়ে আসে ব্যক্তিস্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত হতে দেখে। কয়েকজন যুবক পথে বাসকারী লম্বা দাড়ি-চুলধারী মলিন বেশের বয়স্ক ব্যক্তির চুলদাড়ি কেটে দিচ্ছেন জোর করে। তারপর লোকটির পোশাক খুলে নতুন পোশাক পরিয়ে দিচ্ছেন। এদেশে ভবঘুরে বা ভাসমান মানুষ, কিংবা নিজের মধ্যে থাকা তথাকথিত পাগলেরও নিজের মতো করে থাকার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। জোরপূর্বক এই নিপীড়ন একটা ভয়াবহ ক্রাইম। যারা মানুষের স্বাধীন ইচ্ছার বিরুদ্ধে এগুলো করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া চাই। কেননা এদের মন বলে কিছু নেই। এরা বুঝতেই পারে না- একজন মানুষকে জবরদস্তি করে এসব তথাকথিত লোক দেখানো ভালো কাজ করতে গেলে মনের ওপর যে প্রভাব পড়ে তার দ্বারা ব্যক্তিটি আরও অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। এরা ইউটিউবার লাইক সিকার। এদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।

ভালো কাজের হোটেলের
ইফতার আয়োজন

আপনি কি জানেন, রাজধানীর পথে থাকা ছিন্নমূল মানুষ কিংবা পথচারীরা বিনামূল্যে ইফতার পাচ্ছেন? তাও আবার কোনো দানের শর্ত ছাড়াই! শুধু একটি প্রতিশ্রুতি দিলেই পাওয়া যাচ্ছে একবেলার খাবারÑ ‘আমি আজ ভালো কিছু করব’ বা ‘আমি ইতোমধ্যেই ভালো কিছু করেছি।’
‘ভালো কাজের হোটেল’ নামের এই অনন্য উদ্যোগ ছড়িয়ে গেছে পুরো ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায়। প্রতিদিন ৩,০০০ মানুষের জন্য ইফতার সরবরাহ করা হচ্ছে এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে।
কারা পাচ্ছেন এই ইফতার?
রিক্সাচালক, ফেরিওয়ালা, ভিক্ষুক, চা-দোকানদার ও ছিন্নমূল শিশুরা।
যারা পথের মধ্যে আটকা পড়েছেন বা হাতে বেশি টাকা নেই।
যে কোনো সাধারণ পথচারী, যারা ভালো কাজের প্রতিশ্রুতি দেন।
কোথায় কোথায় ইফতার বিতরণ হচ্ছে: কারওয়ান বাজার, কমলাপুর, মতিঝিল, বাসাবো, সাতরাস্তা, বনানী, কড়াইল বস্তি, রবীন্দ্র সরোবর, মিরপুর ২, মোহাম্মদপুর। ভালো কাজের হোটেল কারওয়ান বাজার পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, কেউ এখানে নিয়মিত খাচ্ছেন, আবার নতুন অনেকেই যুক্ত হচ্ছেন।
এক পথচারী রফিক বলেন, ‘ঢাকায় জরুরি কাজে এসে হাতে বেশি টাকা ছিল না, রাস্তার পাশে ইফতার বিতরণ দেখে পেলাম একবেলার খাবার!’ আরেকজন ভিক্ষুক সবির মিয়া জানালেন,‘সব আল্লাহর রহমত, মেহমানের মতো বসিয়ে হাতে তুলে খাওয়াইছে!’
ইফতার আয়োজনে কী থাকে: কখনো মুরগির রোস্ট আর বিরিয়ানি, কখনো ভুনা খিচুড়ি, আবার কখনো গরুর মাংস-পোলাও। প্রতিদিন শরবত বিতরণ করা হয়।
সাহরির ব্যবস্থাও আছে! প্রতিদিন ৫০০ জনের জন্য সাহরি রান্না হয়। মেন্যুতে থাকে গরুর মাংস, ডিম ও সাদা ভাত।
এই উদ্যোগ কীভাবে চলছে: ২,০০০ স্বেচ্ছাসেবকের মাসিক চাঁদা ও অনুদানের মাধ্যমে। কেউ বিকাশে টাকা পাঠান, কেউ সরাসরি খাবার কেনার জন্য সহায়তা করেন।
২০১৯ সালে কমলাপুর রেলস্টেশনে সপ্তাহে একদিন ইফতার দিয়ে শুরু হওয়া এই উদ্যোগ এখন হাজারো মানুষের আশ্রয় হয়ে উঠেছে।

০৯ মার্চ ২০২৫
[email protected]

×