ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১

নারীর নিরাপত্তা ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি

এস এম রেদোয়ানুল হাসান রায়হান

প্রকাশিত: ১৯:২২, ৬ মার্চ ২০২৫

নারীর নিরাপত্তা ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি

বর্তমান সময়ে নারীর নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে নারীরা নানা ধরনের সহিংসতা, হয়রানি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। কর্মস্থল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন এমনকি নিজের বাড়ির আশপাশেও তারা নিরাপদ নন। নারীর প্রতি সহিংসতা শুধু ব্যক্তিগত বা পারিবারিক সমস্যা নয়; এটি একটি সামাজিক ব্যাধি, যা উন্নয়ন সামগ্রিক অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়ন প্রয়োগ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনও জরুরি। এখনো অনেক পরিবারে মেয়েদের স্বাধীনভাবে চলাফেরার অনুমতি দেওয়া হয় না। কারণ তারা ভয় পান সমাজের নেতিবাচক মনোভাব হয়রানির বিষয়ে। অন্যদিকে অপরাধীরা অনেক সময় শাস্তি এড়িয়ে যায়, ফলে তাদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়।

নারী নির্যাতন হয়রানি রোধে প্রয়োজন

সচেতনতা বৃদ্ধি : পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের সব স্তরে নারীর প্রতি সম্মানজনক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে হবে।

কঠোর আইন প্রয়োগ : ধর্ষণ, হয়রানি নারীর প্রতি সহিংসতার শাস্তি দ্রæ কার্যকর করতে হবে। এমন কাছে যারা লিপ্ত হয় তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বাধ্যতামূলক করা উচিত, যাতে এদের থেকে সবাই শিক্ষা নিতে পারে।

নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা : গণপরিবহন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্মস্থলে সিসিটিভি স্থাপন নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা জরুরি। কারণ নারী সবচেয়ে বেশি হেনস্তা হয় এইসব জায়গাগুলোতে। একটু আশপাশে তাকালেই দেখতে পাই বিভিন্ন অফিসে হয়রানির স্বীকার হচ্ছে, কর্মক্ষেত্রে গিয়েও পড়ছে ঝুঁকির মুখে। আফসোস আমরা আমাদের আবার মানুষ বলি।

নারীর আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণ : মেয়েদের আত্মরক্ষার কৌশল শেখানোর উদ্যোগ নেওয়া দরকার। যাতে যে কোনো বিপদে তারা নিজের জন্য কিছু করতে পারে। মুখ বুঝে বুক ফাঁটা কষ্ট নিয়ে চলে আসতে না হয়।

মিডিয়ার ইতিবাচক মিকা : নারীদের প্রতি সম্মানজনক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে গণমাধ্যমকে সচেতন মিকা পালন করতে হবে।

আমাদের সমাজে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে, তারা শিক্ষা, কর্মসংস্থান অন্যান্য ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারবে না। তাই শুধু আইন নয়, দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই, নারীরা যেন ভয়ের মধ্যে নয়, বরং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জীবনযাপন করতে পারেন।

 

লেখক : শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

×