ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১

বিলকিস নাহার মিতুপুলিশ আরও সক্রিয় হোক

প্রকাশিত: ২০:০৬, ৫ মার্চ ২০২৫

বিলকিস নাহার মিতুপুলিশ আরও সক্রিয় হোক

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর সারাদেশে শুরু হয়েছে নানা রকম অরাজকতা। বাড়ি-ঘর ভাঙচুর, পুড়িয়ে দেওয়া, ধর্মীয় উপাসনায় আঘাত করা ইত্যাদি। তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয় এবং তারা কোনো প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। দেশের মানুষের ভাবনা ছিল তারা এবার স্বাধীনভাবে বাঁচবে কিন্তু দেশের মানুষের এই আশা পূরণ হলো না। গণ-অভ্যুত্থানের সাত মাস পার হলেও নানা প্রকার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কমার পরিবর্তে কয়েকগুণ বেড়েই চলেছে যা আমরা রাজধানীসহ দেশের সব অঞ্চলে লক্ষ্য করছি। পথে-ঘাটে ছিনতাই, রাহাজানি, ধর্ষণ, বাস ডাকাতি সবকিছু  বেড়েই চলছে। অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে  কোনো প্রকার শাস্তির সম্মুখীন হচ্ছে না। গত কয়েকদিন আগে ঢাকাতে বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা দেখতে পেয়েছি। এছাড়া খুলনা মহানগরে একের পর এক খুন হয়েই চলছে যার কোনো সুরাহা হয়নি। অপরাধীরা প্রতিনিয়ত সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে আর শঙ্কায় আতঙ্কিত হচ্ছে  সাধারণ জনগণ। কয়েকদিন আগে থানায় ঢুকে এক ওসি কে খুন করে অপরাধীরা। পুলিশ এতই অপারগ  যে নিজেদের নিরাপত্তা দিতেও তারা ব্যর্থ হয়েছে। সারাদেশে চলেছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’। এমন পরিস্থিতিতেও দেশে খুন, ছিনতাই ঘটেছে। চলন্ত বাসে নারীকে ধর্ষণ করা হয় আবার সেই ধর্ষক আদালত  থেকে মুক্তি পায়, এক্ষেত্রে স্পষ্ট দেশের আইনশৃঙ্খলার অধঃপতন ঘটেছে। সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে থাকে এই বুঝি তাদের জীবন বিপন্ন হলো! ফুটপাত দখল, পণ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধি এসব  ক্ষেত্রেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায় না। ছোট শিশু গুম হচ্ছে নারী চলাফেরা করতে ভয় পাচ্ছে। দেশের এই উদ্বেগজনক সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপারগতার কারণেই অপরাধীরা আরও সাহস পাচ্ছে এবং অপরাধ ক্রমান্বয়ে বাড়িয়েই চলছে। পেশাদার ডাকাত বা ছিনতাইকারীরা অপরাধ যেমন করছে তেমনি কেউ কেউ ব্যক্তিগত আক্রোশ বা রাজনৈতিক কারণে অপরাধে জড়াচ্ছে। পুলিশকে আমরা দেখি গণপিটুনি দিতে কিন্তু অপরাধীকে যথাযথ শাস্তি দেওয়া হয় না যার কারণে অপরাধী মহল একের পর এক অপরাধ ঘটিয়ে যাচ্ছে।
দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সক্রিয় ভূমিকা দেখতে পাইনি। অতিদ্রুত দেশের সকল নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সোচ্চার হতে হবে এবং কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে যেন কোনো অপরাধী পার না পায়। অপরাধ দমেন জন্য ‘জিরো-টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্বলতারই সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্বল মনোভাব বর্জন করে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে শীঘ্রই। দেশের প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের সম্পদ। মনে রাখতে হবে নাগরিকের সুস্থ, সুন্দর জীবন ফিরিয়ে দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা অপরিসীম।

সরকারি বি এল কলেজ, খুলনা থেকে

×