ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১

টরন্টোর চিঠি

জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্টস

ড. শামীম আহমেদ

প্রকাশিত: ২১:০১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্টস

ফ্রিডরিখ ম্যার্টস

২০২৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জার্মানির ফেডারেল নির্বাচনে ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (CDU) এবং ক্রিশ্চিয়ান সোশ্যাল ইউনিয়নের (CSU) রক্ষণশীল জোট বিজয়ী হয়েছে, প্রায় ২৮.৫% থেকে ২৯% ভোট পেয়ে। এই ফল CDU নেতা ফ্রিডরিখ ম্যার্টসকে সম্ভাব্য চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হিসেবে অবস্থান দিচ্ছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, চরম ডানপন্থি অল্টারনেটিভ ফিউর ডয়চল্যান্ড (অভউ) বিশাল উত্থান ঘটিয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে, প্রায় ১৯.৫% থেকে ২০.৮% ভোট পেয়ে, যা তাদের আগের সমর্থনের প্রায় দ্বিগুণ। ক্ষমতাসীন সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (SPD) বড় ধরনের পতনের সম্মুখীন হয়েছে, মাত্র ১৬.৪% ভোট অর্জন করেছে, অন্যদিকে গ্রীন পার্টি (Greens) ১১.৬% এবং বামপন্থি দল (Left) উন্নতি করে ৮.৮% ভোট পেয়েছে।

উদারপন্থি ফ্রি ডেমোক্রেটিক পার্টি (FDP) সংসদীয় প্রতিনিধিত্বের জন্য প্রয়োজনীয় ৫% সীমা অতিক্রম করতে ব্যর্থ হয়েছে। যার ফলে দলটির নেতা ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনার পদত্যাগ করেছেন। ঈউট/ঈঝট-এর এই জয় তাদের পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করেনি। যার ফলে একটি জোট সরকার গঠনের প্রয়োজন হবে। সম্ভাব্য জোট অংশীদারদের মধ্যে ঝচউ এবং গ্রীন পার্টি রয়েছে। ম্যার্টস বলেছেন, তারা উগ্র ডানপন্থি অভউ’র সঙ্গে জোট বাধবেন না। তবে, জোট আলোচনা জটিল হতে পারে।

কারণ মার্জের প্রস্তাবিত কর হ্রাসের অর্থনৈতিক নীতির বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অংশীদাররা, বিশেষ করে যারা ধনী নাগরিকদের ওপর উচ্চ করের পক্ষে, আপত্তি তুলতে পারেন। এছাড়া, ঈউট/ঈঝট-এর সঙ্গে ঝচউ-এর সহযোগিতার বিষয়ে দলের অভ্যন্তরে মতপার্থক্যও একটি স্থিতিশীল সরকার গঠনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
নির্বাচনের ফল জার্মানির পররাষ্ট্রনীতির ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ঊট) অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক, ন্যাটোর প্রতিশ্রুতি এবং রাশিয়ার প্রতি দেশের অবস্থানের ক্ষেত্রে। ফ্রিডরিখ ম্যার্টস ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে এবং ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদার করতে চান। তার এই দৃষ্টিভঙ্গি সবুজ দলের সমর্থন পেতে পারে।

তবে ঝচউ-এর কিছু অংশের মধ্যে সামরিক ব্যয় এবং প্রতিরক্ষা নীতির বিষয়ে মতপার্থক্যের কারণে বিরোধিতা হতে পারে। অভউ-এর বিশাল সাফল্য রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে পরিবর্তন করেছে, যা জার্মানির ভবিষ্যৎ অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। জার্মানির ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোর ভূমিকা এখন বিশেষ পর্যবেক্ষণের বিষয়, বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে তিক্ত সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে।

ম্যার্টসের নীতি জার্মানির বৈশ্বিক প্রভাব বাড়ানো এবং ইউরোপের স্বায়ত্তশীলতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিচ্ছে, যা বিদ্যমান জোট ও প্রতিরক্ষা কৌশলের পুনর্মূল্যায়নে নেতৃত্ব দিতে পারে। রাশিয়ার প্রতি নতুন সরকারের নীতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। কারণ, জার্মানিকে ইউক্রেনের প্রতি তার সমর্থন বজায় রাখার পাশাপাশি মস্কোর সঙ্গে জটিল সম্পর্ক সামাল দিতে হবে।

নির্বাচনের ফল আরও দৃঢ় নীতির দিকে অগ্রসর হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে তবে চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা নির্ভর করবে জোট চুক্তি এবং নতুন সরকারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমীকরণের ওপর। বেশ কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে বিশ্ব রাজনীতি অনেকটাই নেতৃত্ব নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি দেখেছি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তাদের অভ্যন্তরীণ এবং বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে গেছে, যা বিস্ময়কর। সেই বিবেচনায় জার্মানির নির্বাচনে বিজয়ী ম্যার্টস কেমন ব্যক্তি এবং তার রাজনৈতিক অভীক্ষা কী তার বিশ্লেষণ জরুরি।  
জার্মানির নির্বাচনে বিজয়ী ফ্রিডরিখ ম্যার্টস প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতিকে শাসন করবেন তার ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (ঈউট) দলের রক্ষণশীল শিকড়ে ফিরে গিয়ে, ব্যবসার ওপর আরোপিত সীমাবদ্ধতা শিথিল করে এবং অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ঈউট দলের মধ্যে মধ্যপন্থি সাবেক চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যার্টস তার উন্মুক্ত অভিবাসন নীতির কঠোর সমালোচনা করতেন।

তাছাড়া সংসদে নানা বিতর্কে চরম ডানপন্থি অভউ দলের সমর্থন গ্রহণ করার কারণে মার্কেলের তীব্র সমালোচনা করতেন। মার্কেল ও ম্যার্টসকে ঈউট-র দুটি ভিন্ন আদর্শের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পশ্চিম জার্মানির গ্রামীণ সাউয়ারল্যান্ডের বাসিন্দা এবং পেশায় ব্যবসায়ীক আইনজীবী ম্যার্টস মার্কেলের তুলনায় অধিক রক্ষণশীল। বিপরীতে, পূর্ব জার্মানি থেকে আসা এবং পেশায় বিজ্ঞানী মার্কেল ছিলেন অপেক্ষাকৃত উদারপন্থি। ম্যার্টসের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা বেশ সমৃদ্ধ।

২০১৬ সালে তিনি বিশ্বের বৃহত্তম সম্পদ ব্যবস্থাপনা কর্পোরেশন ব্ল্যাকরকের জার্মান কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক বোর্ডের চেয়ারম্যান হন। এছাড়াও, তিনি বহু কর্পোরেট বোর্ডে কাজ করেছেন, যা তাকে আর্থিকভাবে ধনী বানিয়েছে। তবে ৬৯ বছর বয়সী ফ্রিডরিখ ম্যার্টস এর আগে কখনো সরকারি কোনো পদে অধিষ্ঠিত হননি।
এই লড়াকু বক্তা একজন রাষ্ট্রনায়কসুলভ ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে চান। তিনি আত্মবিশ্বাসী যে, যুক্তরাষ্ট্রের খামখেয়ালি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কার্যকরভাবে সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবেন, যাকে তিনি ‘নিয়মিতভাবে অনিয়ন্ত্রিত’ বলে অভিহিত করেছেন। মধ্য-বামপন্থি চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বাধীন তিন-দলীয় জোট সরকার দুর্বল হয়ে পড়ার পর, বিরোধী ঈউট/ঈঝট জোটের প্রধান হিসেবে ম্যার্টস বিদায়ী সরকারের বিরুদ্ধে অত্যন্ত আগ্রাসী ভূমিকা পালন করেন।

জরিপগুলো দীর্ঘদিন ধরেই ম্যার্টসকে সাবেক চ্যান্সেলর শলৎসের বিরুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার জন্য উপযুক্ত প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করেছে। যদিও ম্যার্টসের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা সবসময়ই ছিল মাঝারি মাত্রার। সম্প্রতি শলৎসের শাসনামলের তিন বছরকে ম্যার্টস জার্মানির জন্য হারিয়ে যাওয়া তিনটি বছর বলে অভিহিত করেছেন তিনি। 
তার কঠোর প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো জার্মানির সীমান্ত অবৈধ অভিবাসীদের জন্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা, এমনকি তারা আশ্রয় চাইলেও এবং যাদের বহিষ্কার করা হবে তাদের আটক রাখা। এছাড়া তিনি কিছু ইউক্রেনীয় যুদ্ধ শরণার্থীদের ‘সামাজিক পর্যটক’ উল্লেখ করেছিলেন। তার দলের সাবেক প্রধান মার্কেল যেখানে উদারপন্থি হিসেবে ইসলাম এখন জার্মানিরও অংশ বলেছিলেন, সেখান থেকে ম্যার্টস সরে এসেছেন।

গত মাসে, ম্যার্টস সংসদে চরম ডানপন্থি অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (অভউ) দলের সমর্থন নিয়ে অভিবাসন কঠোর করার একটি প্রস্তাব পাস করান, যা তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি করে এবং জার্মানির রাস্তায় ব্যাপক বিক্ষোভের সূত্রপাত ঘটায়। উল্লেখ্য, এটি ঈউট দলের দীর্ঘদিনের নীতি ভেঙে ফেলেছিল, যেখানে অভউ-এর মতো বিতর্কিত দলের সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতা করা হতো না।

ম্যার্টস আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, গাঁজা বৈধকরণ বাতিল করবেন বলে জানিয়েছেন, যা তার কঠোর ডানপন্থি অবস্থানকে ইঙ্গিত করে। তিনি লিঙ্গ-নিরপেক্ষ সম্বোধন, নীতি ও লিঙ্গ সংবেদনশীল ভাষাকেন্দ্রিক উদারতার বিপক্ষে এবং পারমাণবিক শক্তিতে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার কথাও বলেছেন। 
নির্বাচনি প্রচারের সময়, শলৎস ম্যার্টসকে ‘উগ’ হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেন এবং অভিযোগ তোলেন যে, অভউ-র সঙ্গে তার সম্পর্ক ইঙ্গিত দেয় যে তিনি একদিন চরম ডানপন্থি দলটির সঙ্গে সরকার গঠন করবেন, যা ম্যার্টস দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। জার্মান সংবাদ সাময়িকী উবৎ ঝঢ়রবমবষ মন্তব্য করেছে যে, ম্যার্টস ব্যক্তিগতভাবে দ্বন্দ্বকে গুরুত্ব দেন এবং মাঝে মাঝে রাগান্বিত হয়ে পড়েন।

তারা লিখেছে, ‘যদি ম্যার্টস একজন ষাঁড় যোদ্ধা হতেন, তবে তিনি হয়তো তার লালকাপড় নিজের পেটের সামনে ধরতেন।’ ম্যার্টস, যিনি একজন রোমান ক্যাথলিক, জন্মগ্রহণ করেন ১১ নভেম্বর ১৯৫৫ সালে এবং তিনি নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়ার সৌয়ারল্যান্ড অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকা ও ঘন অরণ্যের মাঝে বসবাস করেন। ছয় ফুট ছয় ইঞ্চি (১৯৮ সেন্টিমিটার) লম্বা ভিড়ের মাঝে সহজেই নজরে পড়ে যান।

তিনি একজন লাইসেন্সপ্রাপ্ত পাইলট, যিনি মাঝে মাঝে নিজের ব্যক্তিগত জেট বিমান ওড়ান। তিনি ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে শার্লট ম্যার্টসের সঙ্গে বিবাহিত, যিনি একজন বিচারক। এই দম্পতির তিনজন প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান রয়েছে। ১৯৮৯ সালে তিনি ইউরোপীয় সংসদে নির্বাচিত হন এবং এরপরই বুন্ডেস্টাগে প্রবেশ করেন, যেখানে তার গুরু ছিলেন প্রয়াত সিডিইউ-র প্রভাবশালী নেতা উলফগ্যাং শ্যোবলে। 
মুক্তবাজারপন্থি উদারনৈতিক হিসেবে তিনি কর্পোরেট কর হ্রাস এবং প্রশাসনিক জটিলতা কমিয়ে জার্মান শিল্প খাতকে চাঙা করার পক্ষে। এই বিষয়ে তিনি ২০০৮ সালে ‘Dare More Capitalism’ (আরও পুঁজিবাদে সাহসী হোন) শিরোনামের একটি বই প্রকাশ করেন। বার্লিনের ফ্রি ইউনিভার্সিটির রাজনৈতিক বিশ্লেষক অ্যান্টোনিয়াস সুরিসের মতে, ম্যার্টস তার দীর্ঘ ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতাকে রাজনীতিতে  একটি মূল শক্তি হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছেন। তিনি নিজেকে রাজনীতির বাইরের একজন ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করতে ভালোবাসেন। তিনি নিজেকে একজন অভিজ্ঞ করপোরেট নেতা হিসেবে দেখতেও ভালোবাসেন।

শলৎসের মতো কেবল একজন পেশাদার রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচয় দিতে চান না। তার জীবনবৃত্তান্ত ও সম্পদের প্রাচুর্য তাকে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হওয়ার অভিযোগের মুখে ফেলেছে। তবে তিনি এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে দাবি করেছেন যে, তিনি ‘উচ্চ-মধ্যবিত্ত শ্রেণির’ অন্তর্ভুক্ত।
জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্টস ক্ষমতা গ্রহণের প্রাক্কালে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ইসলামপন্থি উত্থানের বিষয়ে তার সরকার এখনো কোনো নির্দিষ্ট অবস্থান ঘোষণা করেনি। তবে, জার্মানি ঐতিহ্যগতভাবে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ওপর গুরুত্বারোপ করে আসছে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া গণবিক্ষোভের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন ঘটে এবং নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।

তখন জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক কাঠামো রক্ষার গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেছিলেন। ফ্রিডরিখ ম্যার্টস অভিবাসন, মুসলমান অভিবাসী ও নিরাপত্তা বিষয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন। সুতরাং, তার প্রশাসন বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবে বলে ধারণা করা যায়, বিশেষত যদি এটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও অভিবাসনের ওপর প্রভাব ফেলে।

যদিও এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসেনি, তবে জার্মানির গণতন্ত্র ও সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে এটি অনুমান করা যায় যে, তারা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা, গণতান্ত্রিক শাসন ও মানবাধিকার ভুলণ্ঠিত হলে এর বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারে। এছাড়া, ফ্রিডরিখ ম্যার্টস বাংলাদেশ সম্পর্কে কোথাও কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য করেননি।

তবে, সম্প্রতি জার্মান রাজনৈতিক আলোচনায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গ এসেছে। ইলন মাস্ক কিছু বিতর্কিত সরকারি ব্যয়ের তালিকা প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের গোপন বরাদ্দকৃত তহবিলের কথা উল্লেখ ছিল। অন্যদিকে, জার্মানিতে অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে যে আন্দোলন চলছে, তাতে ম্যার্টসের কঠোর অবস্থানের যোগসূত্র রয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে, ম্যার্টস এবং ডানপন্থি অভউ অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে বার্লিনে প্রায় ১,৬০,০০০ মানুষ বিক্ষোভ করেছিল।

যদিও এটি সরাসরি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, তবে এটি জার্মান অভিবাসন নীতির ভবিষ্যৎ প্রবণতার ইঙ্গিত দেয়, যেখানে মুসলমানদের জার্মানিতে আশ্রয় প্রার্থনা এবং সেখানে বসবাস কঠিন হবে বলেই আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে। 
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

[email protected]

×