
সবজির দাম কমছে
বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবজির দাম কমছে। গত আমন মৌসুমে চালের উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। সবজির উৎপাদন হয়েছে বেশি। চাল সংরক্ষণশীল, পচনশীল নয়। দীর্ঘদিন মজুদ করে রাখা যায়। তাই কারসাজি করে এর দাম বাড়ানো যায়। কিন্তু সবজি পচনশীল। ২-৩ দিনের বেশি ধরে রাখা যায় না। তাই ব্যবসায়ীদের কারসাজি তেমন চলে না। উৎপাদন মৌসুমে বাজার সয়লাব হয়ে যায় রকমারি সবজিতে। ফলে মূল্য হ্রাস পায়।
গত পঞ্জিকা বর্ষে দীর্ঘতম খরা, পরবর্তী বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে শাক-সবজির উৎপাদন ব্যাহত হয়েছিল। অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়েছিল মূল্য। পরে কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আশানুরূপ উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। এখন সবজির ভরা মৌসুম। বাজারে শীতের সবজির বিপুল সমারোহ। হরেক রকম সবজির বৈচিত্র্যময় পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। সরবরাহ বাড়ছে প্রতিদিন। ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে সবজির দাম।
এখন সব ধরনের সবজির দামই ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে এসেছে। বর্তমানে একটি ফুলকপির দাম ১৫-২০ টাকা। শিম ২০-২৫ টাকা কেজি। করলার কেজি ৫০-৬০ টাকা। এক কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়। একটি লাউয়ের দাম ২৫-৩০ টাকা। টমেটোর কেজি নেমে এসেছে ২০ টাকায় এবং কাঁচা মরিচের কেজি ৪০ টাকায়। এক মাস আগে এগুলোর দাম ছিল দ্বিগুণের বেশি। এর কারণ ছিল সরবরাহ সংকট। এখন দরপতন ঘটেছে সবজির।
খামারপ্রান্তে এর দাম বাজার দরের অর্ধেকের কম। কৃষকদের অভিযোগ, সবজি বিক্রি করে উৎপাদন খরচও উঠে আসছে না। এই মূল্যবৃদ্ধি ও দরপতনের চালচিত্র হরহামেশাই আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত আমাদের জানা থাকা দরকার। দেখতে হবে বিভিন্ন সবজির উৎপাদন খরচ কত? কত এর গড় বিক্রয়মূল্য? আর তাতে কৃষকের লাভ কত? তাতে মৌসুমি মূল্যবৃদ্ধি ও দর পতনে ধৈর্যশীল হতে পারবেন আমাদের কৃষক ও ভোক্তাগণ। বিভিন্ন সবজির দামের ন্যায্যতা তারা অনুভব করতে পারবেন।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের উদ্যোগে সম্প্রতি বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন খরচ, এদের খামারপ্রান্তের বিক্রয়মূল্য, লাভ ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা সম্পর্কে গবেষণা হয়েছে। এ গবেষণার একটি প্রধান অংশীদার প্রতিষ্ঠান ছিল বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। ওই ইনস্টিটিউটের কৃষি অর্থনীতি বিভাগ সমীক্ষা পরিচালনা করছে সবজির উৎপাদন খরচ এবং এর লাভজনকতা নিয়ে। তারা যে তথ্য উপস্থাপন করেছে, তাতে দেখা যায় সবজির উৎপাদন লাভজনক।
কিন্তু খামারপ্রান্তে এর লাভ কম। কারণ, এর ওপর যানবাহন ও বাজারজাতকরণ খরচ, মধ্যস্বত্বভোগীদের মুনাফা এবং পচনশীলতার আর্থিক ক্ষতি যোগ করে নির্ধারণ করা হয় খুচরা বিক্রয়মূল্য। সবজি একটি পচনশীল পণ্য। এর পরিমাণ প্রায় ৩০ শতাংশ। সে কারণে খুচরা পর্যায়ে সবজির দাম খামারপ্রান্ত থেকে বেশি। নিষ্ফল মৌসুমে সবজির দাম চড়া থাকে। তখন ভোক্তারা থাকেন হতাশার মধ্যে। আবার উৎপাদনের ভরা মৌসুমে ভোক্তারা থাকেন স্বস্তিতে। অস্বস্তিতে থাকেন উৎপাদনকারী কৃষক।
গত তিন বছর ধরে পেঁয়াজের উচ্চমূল্যে ভোক্তারা নাকাল। এর উৎপাদন খরচ প্রতি কেজি প্রায় ২২ টাকা। খামারপ্রান্তে এর গড় মূল্য ৩০ টাকা। লাভ প্রায় ৮ টাকা প্রতি কেজি। খুচরা পর্যায়ে এর দাম হতে পারে ২৫-৩০ শতাংশ। অপচয়সহ সর্বোচ্চ প্রায় ৫০-৫৫ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হলেও এর গড়মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৫০-৫৫ টাকা কেজি।
সেক্ষেত্রে পেঁয়াজের দামে ধারাবাহিক উল্লম্ফন এবং পরপর দুই বছর ডাবল সেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরি হাঁকানোর বিষয়টি উদ্বেগজনক। দুই বছর আগে এবং এ বছর আলুর উচ্চ মূল্যের বিষয়টিও এখানে উল্লেখযোগ্য। উৎপাদন খরচের ভিত্তিতে এবং সংরক্ষণ ও বিপণন খরচ যোগ করে আলুর সর্বোচ্চ মূল্য হতে পারত ৩৫-৪০ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আলু আমদানি করা হলেও এর গড়মূল্য দাঁড়ায় ৩৫-৪০ টাকা।
অথচ এবারের নিষ্ফল মৌসুমে ভোক্তাদের মূল্য দিতে হয়েছে প্রতি কেজি ৭০/৮০ টাকা। এটি ব্যবস্থাপনা সমস্যা। এতে ব্যবসায়ীদের কারসাজি আছে। এখানে সিন্ডিকেট ক্রিয়াশীল। এ সিন্ডিকেটের অতি মুনাফা আদায়ের কারসাজিকে অকার্যকর করার ক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপ ছিল অপর্যাপ্ত। ফলে এ সংকট প্রলম্বিত হয়েছে। তাতে ভোক্তারা ঠকেছে। এখন আবার আলু/ পেঁয়াজের ভরা মৌসুমে খামারপ্রান্তে মূল্য কমে গেছে। তাতে উৎপাদক কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
আলু খাদ্যশস্যের অন্তর্ভুক্ত। পেঁয়াজ মসলা জাতীয় ফসল। এগুলো সবজিরও অন্তর্ভুক্ত। চাহিদার তুলনায় কম উৎপাদন, আমদানির অনিশ্চয়তা, অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি ও বাজারে সরবরাহ-সংকটের কারণে এ দুটো পণ্যের দাম অনেক সময় হয়ে পড়ে আকাশচুম্বী। খুচরা মূল্যের সঙ্গে যৌক্তিক মূল্যের ব্যবধান হয় অনেক বেশি।
পণ্যমূল্যের অস্থির অবস্থায় কৃষক ও ভোক্তাদের পথনির্দেশ করতে পারে পণ্যের উৎপাদন খরচ ও সরকার নির্ধারিত যৌক্তিক মূল্য। উৎপাদন খরচের সঙ্গে কৃষকের লাভ, মধ্যবর্তী বাজারজাত খরচ ও মুনাফা যোগ করে বাজারজাতকরণের বিভিন্ন ধাপে নির্ধারণ করা হয় পণ্যের যৌক্তিক মূল্য। আমদানিকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে আমদানি মূল্যের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ বাজারজাত খরচ ও মুনাফা যোগ করা হয়।
বাজারে পণ্য সরবরাহ কম হলে যৌক্তিক মূল্যের চেয়ে খুচরামূল্য বেশি হয়। আবার উৎপাদন মৌসুমে পণ্য সরবরাহ বেড়ে গেলে যৌক্তিক মূল্যের চেয়েও কমে যায় খুচরা মূল্য। পণ্যের নিষ্ফল মৌসুমে যখন বাজারে দাম চড়া থাকে, তখন যৌক্তিক মূল্যের কথা অনেকে বলে থাকেন। কিন্তু যখন বাজারে দাম কম থাকে, তখন যৌক্তিক মূল্যের কথা বলতে তেমন শোনা যায় না। বর্তমানে বাজারে সবজির দাম খুবই নেমে গেছে। ক্ষেত্র বিশেষে তা যৌক্তিক মূল্যের অনেক কম। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক।
উদাহরণস্বরূপ, ফুলকপি ও বাঁধাকপির প্রতি কেজি উৎপাদন খরচ এবার কমবেশি ১০ টাকা। এর সঙ্গে ন্যূনতম বিশ শতাংশ মুনাফা যোগ করে খামার প্রান্তে এর যৌক্তিক মূল্য হওয়া উচিত অন্তত ১২ টাকা কেজি। কিন্তু গ্রামের কৃষক এখন ৫ টাকাও পাচ্ছেন না। এবার আলুর উৎপাদন খরচ প্রতি কেজি সাড়ে ১৭ টাকা। তার সঙ্গে কৃষকের লাভ যোগ করে এর প্রতি কেজি যৌক্তিক মূল্য হওয়া উচিত ২০ টাকা। অথচ খামার প্রান্তে এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৭/৮ টাকা কেজি।
ফেসবুক পেইজ ‘কৃষকের কৃষি ভুবনে’ (গ্রুপ সদস্য সংখ্যা ১৯.৬ হাজার) পোস্ট করা এক মন্তব্যে কৃষক মো. সাকিল খান লিখেছেন, ‘২০২৫ সাল ইতিহাস হয়ে থাকবে কৃষকের লোকসানের বছর হিসেবে। পেঁয়াজ, আলু, বেগুন, ফুলকপিসহ সব ধরনের পণ্য বিপণনে কৃষকদের মাথায় হাত’। শুধু কথায় নয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে কাজেও প্রকাশ পাচ্ছে কৃষকদের ক্ষোভ।
মূল্য ধসে বিক্ষুব্ধ হয়ে ক্ষেতের মুলা/কপি সেনি-দা দিয়ে কুপিয়ে কেটে খেতেই মিশিয়ে দিতে দেখা যাচ্ছে গ্রামের কৃষকদের। কেবল বাংলাদেশেই নয়, উৎপাদন মৌসুমে ফসলের মূল্য হ্রাস পায় পৃথিবীর অনেক দেশেই। কিন্তু বাংলাদেশের মতো এত বেশি তলানিতে নামে না কোথাও। এত তীব্র অনুভূত হয় না কৃষকের বিলাপ।
বাংলাদেশের চাষকৃত সবজির সংখ্যা প্রায় ৯৫। প্রধান সবজির সংখ্যা ৩০-৩৫টি। মোট উৎপাদন এলাকা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুসারে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ১.১৬ মিলিয়ন হেক্টর। তাতে বছরে উৎপাদন হয় ২৪.১৭ মিলিয়ন টন সবজি। জনপ্রতি দৈনিক সবজি প্রাপ্তির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৮৯ গ্রাম। তবে বিবিএস প্রদত্ত তথ্য অনুসারে জনপ্রতি দৈনিক সবজি গ্রহণের পরিমাণ ২০২ গ্রাম (এইচআইইএস ২০২২)। এই দুই উৎসের পরিসংখ্যানের মধ্যে বিস্তর ফারাক। এ ক্ষেত্রে উৎপাদনের তথ্য অতি মূল্যায়িত বলে মনে করা অস্বাভাবিক নয়।
পৃথিবীর ৩৫টি দেশে বর্তমানে বাংলাদেশের ফল ও সবজি রপ্তানি হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দেশগুলো হলোÑ যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, ইতালি ও অন্য ২৮টি দেশ। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় শাকসবজির উৎপাদন ব্যয়বহুল। সে তুলনায় বাংলাদেশ থেকে সবজির আমদানি সুবিধাজনক। এক্ষেত্রে বিদেশী বাজারে বাংলাদেশী সবজি রপ্তানি সম্প্রসারণের সম্ভাবনা উজ্জ্বল।
তবে এর জন্য বিদেশী বাজার-চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে মানসম্মত সবজির নিরন্তর সরবরাহ নিশ্চিত করা দরকার। সে লক্ষ্যে দরকার ভালো মানের সবজি উৎপাদন। চাই সংগ্রহোত্তর যথাযথ ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ। এ ছাড়া বিদেশে সবজি পরিবহনের জন্য পর্যাপ্ত বিমান ও কার্গো স্পেস নিশ্চিতকরণের সঙ্গে এর ভাড়া হ্রাস করাও সবজি রপ্তানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। সর্বোপরি যা প্রয়োজন, সেটি হলো বিদেশে বাংলাদেশী সবজির বাজার সম্প্রসারণের জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা। সম্প্রতি বাংলাদেশে অর্গানিক সবজি আবাদ হচ্ছে।
বিদেশে এগুলোর বেশ কদর আছে। দেশের অভ্যন্তরেও এগুলোর চাহিদা আছে বেশ। সম্প্রতি ঢাকায় নিরাপদ সবজি বাজারজাতকরণের জন্য ফারমার্স মার্কেট চালু করা হয়েছে। তাতে অর্গানিক সবজির চাহিদা বাড়ছে। বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী মিশনগুলো এর বাজারজাতকরণে ভালো ভূমিকা রাখতে পারে। এ লক্ষ্যে বিদেশী বাজার ও পণ্যমূল্য সম্পর্কে আমাদের রপ্তানিকারকদের নিয়মিত অবহিত রাখা প্রয়োজন।
খাদ্য হিসেবে সবজির জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কারণ সবজির পুষ্টিমান সম্পর্কে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ বিদ্যমান। সবজিতে আছে ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’। আছে প্রোটিন। আছে ক্যালসিয়াম ও লৌহ। সবজি বিভিন্ন অনুপুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ। এটি চোখে দেখা যায় না। কিন্তু শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। এর অভাবে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। দৈহিক বৃদ্ধি হয় ব্যাহত।
ভিটামিন ‘এ’-র অভাবে রাতকানা, আয়োডিনের অভাবে গলগ- এবং আয়রনের অভাবে রক্তশূন্যতা ইত্যাদির প্রতিকার হচ্ছে খাবার হিসেবে সবজি গ্রহণ। তা ছাড়া সবজি আমিষ জাতীয় খাদ্যের আত্তীকরণে সহায়ক। এটি পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতাও বৃদ্ধি করে। সবজিতে চর্বি ও শর্করার হার কম থাকায় শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে তা অত্যন্ত সহায়ক।
এতে কোলেস্টেরল তেমন না থাকায় হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপজনিত শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি কম থাকে। তা ছাড়া সবজি পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতাও বৃদ্ধি করে। সবজিতে কিছু ফাইটোকেমিক্যাল বিদ্যমান থাকায় টিউমারসহ অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে তা অত্যন্ত সহায়ক।
অপুষ্টির সমস্যা সমাধানে সবজি গ্রহণ খুবই কার্যকর। এর জন্য চাই নিরাপদ সবজি। উৎপাদন ব্যবস্থায় বিষাক্ত রাসায়নিকের ব্যবহার সীমিত মাত্রার মধ্যে রাখতে হবে। সবজির জৈব চাষকে উৎসাহিত করতে হবে। সবজির ফুডভ্যালু চেইনকে সংক্রামক জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। সবজি ধোয়ার ক্ষেত্রে দূষিত পানির ব্যবহার পরিহার করতে হবে।
কোল্ডস্টোরেজ এবং ‘শীতল চেইন পরিবহনের সুবিধা’ বৃদ্ধি করে উৎপাদনকারী থেকে ভোক্তা পর্যন্ত নিরাপদ সবজি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে সবজির প্রাক-উৎপাদন, উৎপাদনকাল এবং ফসল কর্তনোত্তর প্রক্রিয়াজাতকরণে উত্তম কৃষি কার্যক্রম (গুড অ্যাগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিসেস, জিএপি) অনুশীলন করতে হবে। ভোক্তাদের জন্য মানসম্পন্ন সবজি সরবরাহ করতে উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের পরিবেশ উন্নত করতে হবে।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শাক-সবজির চুক্তিভিত্তিক চাষ হচ্ছে। অনেক শিক্ষিত তরুণ এগিয়ে এসেছে সবজি চাষে। তারা উপযুক্ত মূল্যে বিক্রি করছে উৎপাদিত সবজি। এগুলো দেশের বড় বড় সুপার মার্কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিক্রির জন্য। বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে। এ প্রক্রিয়াকে নীতি ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে উৎসাহিত করতে হবে। তাতে মানসম্মত সবজির উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। রপ্তানি আয় বাড়বে। দেশের ভোক্তারাও ন্যায়সংগত মূল্যে সবজি ক্রয় করতে পারবে। তাতে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতসহ উপাদেয় সবজি গ্রহণ সম্ভব হবে। দূর হবে পুষ্টি সমস্যা।
লেখক : কৃষি অর্থনীতিবিদ, সাবেক উপাচার্য, ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজ, সাবেক মহাপরিচালক, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ
গবেষণা ইনস্টিটিউট