ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১

মিডিয়া অ্যাডভোকেসিতে ফান্ডরেইজিং এবং অডিয়েন্স রিসার্চ

প্রকাশিত: ২১:৫৭, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মিডিয়া অ্যাডভোকেসিতে ফান্ডরেইজিং এবং অডিয়েন্স রিসার্চ

ছবিঃ সংগৃহীত।

ফান্ডরেইজিং 
ফান্ডরেইজিং বা তহবিল সংগ্রহ হলো একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা তাদের কার্যক্রম চালানোর জন্য অর্থ সংগ্রহ করে থাকে। এটি বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমের জন্য হতে পারে, যেমন: সামাজিক সেবা, শিক্ষা, গবেষণা, বা অন্যান্য নন-প্রফিট কার্যক্রম। ফান্ডরেইজিং সাধারণত ব্যক্তিগত দানে, প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান, সরকারি সাহায্য, অথবা অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে করা হয়।

ফান্ডরেইজিংয়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট প্রজেক্ট বা উদ্যোগের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করা, যাতে সে উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা যায়। এটি সাধারণত বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ বা সুযোগের সম্মুখীন হয়, যেমন:

ক্যাম্পেইন আয়োজন: তহবিল সংগ্রহের জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং দাতা আকর্ষণ করা হয়।
অনলাইন ফান্ডরেইজিং: সোশ্যাল মিডিয়া, ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম (যেমন কিকস্টার্টার বা গোফান্ডমি) এর মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ।
ইভেন্ট বা গালা: দাতাদের আকর্ষণ করতে বিভিন্ন ধরনের ইভেন্ট, পার্টি বা গালা আয়োজন করা হয়, যাতে তাদের থেকে দান সংগ্রহ করা যায়।
ফান্ডরেইজিং সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যাতে প্রতিষ্ঠান তার দাতাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পারে এবং ভবিষ্যতে তাদের সাহায্য পেতে পারে।

অডিয়েন্স রিসার্চ এবং মিডিয়া অ্যাডভোকেসি (Audience Research and Media Advocacy)

অডিয়েন্স রিসার্চ (Audience Research)
অডিয়েন্স রিসার্চ হলো সেই প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মিডিয়া প্রতিষ্ঠান বা অন্যান্য সংস্থা তাদের শ্রোতা বা দর্শকদের আচরণ, পছন্দ, আগ্রহ এবং অন্যান্য দিক সম্পর্কে গবেষণা ও বিশ্লেষণ করে থাকে। এর উদ্দেশ্য হলো শ্রোতা বা দর্শকদের ভালোভাবে বুঝে মিডিয়া কনটেন্ট বা প্রোডাক্ট তৈরি করা, যা তাদের চাহিদা এবং আগ্রহের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

অডিয়েন্স রিসার্চের কিছু প্রধান উপাদান হলো:

ডেমোগ্রাফিক ডেটা: শ্রোতা বা দর্শকদের বয়স, লিঙ্গ, শিক্ষা, আয় এবং অবস্থান ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করা।
পছন্দ এবং আগ্রহ: তাদের পছন্দ, শখ, এবং মিডিয়া উপভোগের ধরণ (যেমন টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়া, নিউজ পেপার) বুঝে দেখা।
মনোবৈজ্ঞানিক উপাদান: দর্শকদের মানসিকতা, মূল্যবোধ এবং বিশ্বাস সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা।
প্রযুক্তিগত অভ্যস্ততা: শ্রোতাদের প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রবণতা (যেমন সোশ্যাল মিডিয়া, মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার) জানা।
এটি মিডিয়া প্রতিষ্ঠান বা মার্কেটিং সংস্থাগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে তারা তাদের কনটেন্ট বা পণ্যকে লক্ষ্য শ্রোতার কাছে আরও কার্যকরভাবে পৌঁছে দিতে পারে।

মিডিয়া অ্যাডভোকেসি (Media Advocacy)
মিডিয়া অ্যাডভোকেসি হলো এমন একটি কৌশল, যার মাধ্যমে মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কোনো সামাজিক, রাজনৈতিক, বা আর্থিক ইস্যু সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয় এবং সেই ইস্যুর প্রতি সমর্থন বা চাপ সৃষ্টি করা হয়। এর মাধ্যমে জনগণের মনোভাব পরিবর্তন, নীতিগত পরিবর্তন বা আইনি সংস্কার আনা সম্ভব হয়।

মিডিয়া অ্যাডভোকেসির কিছু মূল দিক হলো:

জনসচেতনতা সৃষ্টি: একটি ইস্যুর ব্যাপারে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং তাদের চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করা।
প্রভাব বিস্তার: মিডিয়া কভারেজের মাধ্যমে সরকার বা অন্য কোনো শক্তিশালী সংস্থার উপর চাপ সৃষ্টি করা।
ভালোর প্রচার: সামাজিক উন্নতি বা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো প্রচার করা, যেমন স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, পরিবেশ সুরক্ষা ইত্যাদি।
ক্যাম্পেইন সংগঠন: মিডিয়া ব্যবহার করে সামাজিক আন্দোলন বা ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা, যেমন লিঙ্গ সমতা, শিক্ষার অধিকার, পরিবেশ রক্ষা ইত্যাদি।
মিডিয়া অ্যাডভোকেসি মূলত সমাজে পরিবর্তন আনার জন্য মিডিয়া কার্যকরভাবে ব্যবহার করা, যাতে মিডিয়া জনগণের মতামত এবং চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে। এটি একটি শক্তিশালী টুল, যা জনগণের মধ্যে সামাজিক এবং রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

উদাহরণ: সামাজিক ইস্যু যেমন "জলবায়ু পরিবর্তন", "মানবাধিকার" বা "স্বাস্থ্য সচেতনতা" নিয়ে মিডিয়া অ্যাডভোকেসি প্রচারণা চালানো, যাতে জনগণ এবং সরকারের মধ্যে এ ব্যাপারে আগ্রহ এবং পদক্ষেপ নেয়া হয়।

 

মুহাম্মদ ওমর ফারুক

×