
এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। ভালো-মন্দ, সুস্থতা-অসুস্থতা নিয়েই আমাদের জীবন। আমরা যখন অসুস্থ হয়ে যাই তখন আমাদের একমাত্র ভরসার জায়গা হলো হাসপাতাল। অসুস্থ হওয়ার দু-একদিনের মধ্যেই রোগীকে নিয়ে তার পরিবার হাজির হয় নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে তারা কি তাদের যথোপযুক্ত চিকিৎসা পায়? উত্তর হলো না। সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ হলো চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত সরঞ্জাম না থাকা, চিকিৎসকদের অবহেলা, কর্তৃপক্ষের গাফিলতি। অনেক চিকিৎসক সরকারি ডাক্তার হওয়া সত্ত্বেও প্রাইভেট ভাবে রোগী দেখছেন। তাদের মধ্যে টাকা রোজগারের যে প্রবণতা রয়েছে তা হাসিল করার জন্য হাসপাতালে রোগীদের উপযুক্ত চিকিৎসা দিচ্ছেন না। ঠিক সেই কারণেই বলতে গেলে অনেকটা বাধ্য হয়েই রোগীদের প্রাইভেট চিকিৎসা নিতে হচ্ছে এবং তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
এ ছাড়া সরকারি হাসপাতালের নোংরা, অপরিষ্কার পরিবেশে থাকতে গিয়ে রোগীরা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। ২৪-২৫ অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতের জন্য বাজেট রাখা হয়েছে ৪১ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৫ দশমিক ২ শতাংশ এবং জিডিপির ০ দশমিক ৭৪ শতাংশ। প্রতি বছরই স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ থাকে কোটি কোটি টাকা, কিন্তু বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর অবস্থার উন্নতি হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। টাকাগুলো কী আদৌ স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করা হয়?
মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পর রোগী এবং তার স্বজনদের হতে হয় হয়রানির শিকার। অনেক সময় রোগী সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। সাধারণ জনগণের সুস্থতার কথা বিবেচনা করে সরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধি করা উচিত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, সরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হোক।
মরিয়ম ফেরদৌস
কুষ্টিয়া