ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১

বন্ধ হোক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ

প্রকাশিত: ১৯:৩৮, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বন্ধ হোক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ

রাশিয়া ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকট তৈরি হয়। ৮ দশমিক ৮ মিলিয়নের বেশি ইউক্রেনীয় জীবন বাঁচাতে দেশ ছেড়েছে এবং লক্ষাধিক অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত। বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে এ আক্রমণ  আগ্রাসন হিসেবে বিবেচিত। সম্প্রতি সৌদি আরবে মার্কিন ও রুশ কর্মকর্তাদের প্রথম দফার প্রাথমিক আলোচনায় জানা যায়, চলতি মাসেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি শান্তিকামী মানবতার জন্য অত্যন্ত আশাজাগানিয়া সংবাদ। কিন্তু ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে সংলাপ হওয়ায় এ বৈঠককে ‘বৈধতা’ দিতে নারাজ জেলেনস্কি। এ কারণে জেলেনস্কি পূর্বনির্ধারিত সৌদি আরব সফরে যাচ্ছেন না বলে জানা যায়। যখন রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া আলোচনায় ব্যস্ত, তখন তুরস্ক সফরে যান জেলেনস্কি। সম্প্রতি তুরস্ক সফরে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায়ও একই কথা বলেছেন তিনি। তবে যুদ্ধ বন্ধে জেলেনস্কির ইতিবাচক মনোভাব সাংবাদিকদের নজর এড়ায়নি। এদিকে ক্রেমলিন বলেছে, প্রয়োজন পড়লে জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনায় বসবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। সবদিক থেকেই এক ধরনের মানবিক সমীরণ বইছে মধ্যপ্রাচ্যে।
রাশিয়াও ‘হিংস্র বর্বরতা’ বন্ধ করতে চায়। রিয়াদে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের আলোচনার পর একটি সমঝোতা চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী’। দুনিয়াবাসী আশাবাদী, বিশ্বের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি ট্রাম্প শান্তিপূর্ণ মানবিক ধরিত্রী গড়তে এগিয়ে আসবেন খুব দ্রুত। অন্যদিকে জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনকে বাদ রেখে ওয়াশিংটন ও মস্কো যেন চুক্তির শর্তাবলি নির্ধারণ না করে, তা নিশ্চিত করতে চায় কিয়েভ। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা থেকে কিয়েভকে বঞ্চিত করার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন ট্রাম্প। আমরা জানি, পৃথিবীর সকল যুদ্ধবিগ্রহ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার অন্যতম মূল হাতিয়ার হলো হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা পারস্পরিক সম্মানবোধের আলোকে করতে হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি রিয়াদে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে খুব দ্রুত কাজ শুরু করার জন্য রুবিও এবং লাভরভ যত দ্রুত সম্ভব দুদেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের দল নিযুক্ত করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। বিশ্বের যুদ্ধবিগ্রহ অঞ্চলে সফলভাবে মধ্যস্থতা করতে সক্ষম একটি বৈশ্বিক শক্তি হয়ে উঠতে চান সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া সফল আলোচনার পর  যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার ভবিষ্যৎ নিয়েও আশার আলো উঁকি দিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে। কিন্তু কতদিনে যুদ্ধ বন্ধ হবে, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে আমরা আশাবাদী থাকতে চাই।

×