ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১

পণ্যের চেয়ে গ্রাহক বেশি

প্রকাশিত: ১৮:৫৬, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

পণ্যের চেয়ে গ্রাহক বেশি

বাজারে নিত্যপণ্যের দাম অত্যধিক হওয়ায় টিসিবির পণ্য কিনতে বাড়ছে মধ্যবিত্ত ও প্রান্তিক মানুষের ভিড়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে টানা ১০ মাস ধরে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে রয়েছে। সর্বশেষ গত জানুয়ারিতে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ। বাজারে সবজি ছাড়া অন্য পণ্যের দাম সেভাবে কমেনি। বরং গত দেড় মাসের মধ্যে চালের দাম কেজিতে ৮-১০ টাকা বেড়েছে। খুচরা দোকানে সহজে পাওয়া যায় না বোতলজাত সয়াবিন তেল। এমন পরিস্থিতিতে ভর্তুকি মূল্যে দেওয়া টিসিবির পণ্যের চাহিদা বেড়েছে বহুলাংশে। নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ঢাকা ও চট্টগ্রামে গত বছর ২৪ অক্টোবর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ট্রাকের পণ্য বিক্রি চালু রাখা হয়। টানা ৩৯ দিন বন্ধ থাকার পর রাজধানীর ৫০টি ও চট্টগ্রামের ২০টি স্থানে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ভর্তুকি মূল্যে পুনরায় পণ্য বিক্রি শুরু করেছে টিসিবি। প্রায় প্রতিটি ট্রাকের পেছনে শত শত লোকের ভিড় প্রতিনিয়ত লেগেই থাকে। একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য নিচ্ছেন। বিশৃঙ্খলা ও ধাক্কাধাক্কি নিয়মিত ঘটনা।
বিশেষ করে লম্বা বিরতি দিয়ে পণ্য বিক্রি শুরু করায় নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষ ভিড় করছেন বেশি। উদ্দেশ্য, ট্রাক থেকে কম দামে সয়াবিন তেল, মসুর ডাল, ছোলা ও খেজুর ক্রয়। প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কেনার সুযোগ পান কিছু নারী ও বয়োজ্যেষ্ঠ ক্রেতা। টিসিবির একটি ট্রাকে ২৫০ পরিবারের পণ্য থাকে। শেষ পর্যন্ত অনেকেই পণ্য কেনার সুযোগ পান না। এই চিত্র দেখা গেছে প্রায় সব জায়গায়। ভোক্তাসাধারণের টিসিবি পণ্যের মান ও পরিমাণ নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। প্রান্তিক মানুষ জানায়, অধিকাংশ সময় কোথায় কখন পণ্য দেওয়া হবে, তা আগেভাগে জানানো হয় না।
টিসিবির পণ্য নিতে একজন ক্রেতার মোট খরচ হয় ৫৮৮ টাকা। বাজার থেকে একই পরিমাণ পণ্য কিনতে প্রায় এক হাজার টাকা লাগে। অর্থাৎ টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনলে ৪১২ টাকার মতো বেঁচে যায়। এই প্যাকেজে প্রতিলিটার সয়াবিন তেল ১০০ টাকা, মসুর ডাল প্রতিকেজি ৬০, চিনি ৭০, ছোলা ৬০ ও এক কেজি খেজুর ১৫৫ টাকায় বিক্রি করা হয়। মূলত আসন্ন রমজান মাস উপলক্ষে ছোলা ও খেজুর বিক্রি করা হচ্ছে।
আমাদের দেশে রোজার সময় ভোক্তারা সাধারণত যে খাবার ও পানীয় গ্রহণ করেন, সেগুলোর ওপর বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। নাগরিকদের জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে বিশেষ করে বিদেশী ফলমূলে ফরমালিন পরীক্ষাও করতে হবে। এ সময় ফলমূল, পানীয়-জুস, সিরাপ, মুড়ি, খেজুর, কার্বোনেটেড বেভারেজ, ভোজ্যতেল, সরিষার তেল, ঘি, পাস্তুরিত দুধ, নুডলস, সেমাই, পানি, ডেক্সট্রোজ মনোহাইড্রেট এবং ইফতারি সামগ্রীর মান ও দাম নিয়ন্ত্রণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আসন্ন রমজানে সারাদেশ থেকে খাদ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষার মাধ্যমে রোজাদারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করাও আবশ্যক।

×