![সুলতান মেহমেদ খান: দুর্ভেদ্য কনস্টান্টিনোপল বিজেতা সুলতান মেহমেদ খান: দুর্ভেদ্য কনস্টান্টিনোপল বিজেতা](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/13---2025-02-12T205042421-2502121450.jpg)
ছবিঃ সংগৃহীত।
সুলতান মেহমেদ দ্বিতীয়, যিনি 'ফাতিহ' বা 'বিজয়ী' নামে পরিচিত, অটোমান ইতিহাসে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তাঁর জীবন ও শাসনামল সাম্রাজ্যটির বিস্তৃতি, রাজনৈতিক কার্যক্রম এবং ধর্মীয় সহিষ্ণুতার জন্য স্মরণীয় হয়ে রয়েছে।
মেহমেদ দ্বিতীয় শৈশবে তার পিতার অধীনে প্রশাসনিক দক্ষতা অর্জন করেন এবং রাজনৈতিক কাজে হাত লাগান। তিনি অটোমান সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে পাঠান এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের সাথে পরিচিত হন। তাছাড়া, তার ধর্মীয় শিক্ষা ও দার্শনিক চিন্তা খুবই শক্তিশালী ছিল। তিনি আরবি, ফারসি, লাতিন এবং গ্রিক ভাষায় পারদর্শী ছিলেন, যা তাকে একটি পাণ্ডিত্যপূর্ণ শাসক হিসেবে গড়ে তোলে।
১৪৪৪ সালে সুলতান মুরাদ (তার বাবা) স্বেচ্ছায় সিংহাসন ত্যাগ করলে, মেহমেদ তখন ১২ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন। যদিও এক বছর পর ১৪৪৬ সালে তার পিতার অনুরোধে সিংহাসন ত্যাগ করেন, পরবর্তীতে ১৪৫১ সালে পিতার মৃত্যুর পর তিনি আবার সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন।
সুলতান মেহমেদ দ্বিতীয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক কাজ ছিল কনস্টান্টিনোপল (বর্তমানে ইস্তাম্বুল) বিজয়। ১৪৫৩ সালে, দীর্ঘ ৫৩ দিনের অবরোধের পর, তিনি কনস্টান্টিনোপল দখল করেন এবং বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যকে চূড়ান্তভাবে ধ্বংস করেন। তার বিজয়ে আধুনিক যুদ্ধকৌশল এবং বিশাল কামানের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
কনস্টান্টিনোপল বিজয়ের পর, সুলতান মেহমেদ শহরটিকে অটোমান সাম্রাজ্যের নতুন রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি শহরের নাম পরিবর্তন করে ইসলামবুল রাখেন এবং সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা নির্মাণে মনোনিবেশ করেন, যার মধ্যে অন্যতম ছিল হাজিয়া সোফিয়া মসজিদ।
১৪৮১ সালের ৩ মে সুলতান মেহমেদ দ্বিতীয় মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর তার শাসনকালের একাধিক সংস্কৃতি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা অটোমান সাম্রাজ্যকে সমৃদ্ধ করেছে এবং এটি ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকে। তার শাসনকাল অটোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাসে এক বিস্ময়কর যুগ হিসাবে বিবেচিত হয়।
সুলতান মেহমেদ দ্বিতীয়ের শাসনকাল ছিল একটি বিপ্লবী সময়, যেখানে তার নেতৃত্বে সাম্রাজ্য বিস্তার লাভ করেছে, ধর্মীয় সহিষ্ণুতার ভিত্তিতে সাম্রাজ্য পরিচালিত হয়েছে, এবং অটোমান সাম্রাজ্য তার সোনালী যুগে প্রবেশ করেছে।
মুহাম্মদ ওমর ফারুক