ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১

বিলুপ্ত প্রায় ঔষধি উদ্ভিদ

প্রকাশিত: ২০:২১, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বিলুপ্ত প্রায় ঔষধি উদ্ভিদ

একটা সময় ছিল যখন বিভিন্ন ধরনের রোগের জন্য মানুষ ঔষধি উদ্ভিদের শরণাপন্ন হতো। ঔষধি উদ্ভিদগুলোর নেই তেমন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মতো জটিলতা। কার্যকারিতা ও গুণে মানে ঔষধি উদ্ভিদ ছিল বেশ কার্যকর। গ্রামের মেঠো পথের পাশে কিংবা বাড়ির আঙ্গিনায় ছিল ঔষধি উদ্ভিদের আধিপত্য। পথ চলতে চোখে পড়তো বাহারি রং ও নামের এসমস্ত উদ্ভিদ। চোধ ধাঁধানো সুন্দর রংয়ের ফুল ফুটতো এ সমস্ত গাছগুলোতে। কিন্তু সমকালীন সময়ে জনসংখ্যার চাপের ফলে বসতবাড়ি বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক বন উজাড় করা, শহরের পরিধি বেড়ে যাওয়া কিংবা ফাঁকা জায়গা কমে যাওয়া ও পরিবেশ দূষণের ফলে সচরাচর ঔষধি উদ্ভিদের দেখা পাওয়া কঠিন। কালেভদ্রে যাও বা দেখা যায় তবে এর কার্যকারিতা সম্বন্ধে বর্তমানে মানুষ তেমন একটা ওয়াকিবহাল নয়। হাতিশুঁড়, সর্পগন্ধা, বাসক, থানকুনি, কানশিরা, কালোকেশী, রিফিউজি লতা, শ্বেতাদ্রোণ, ভাঁটফুলসহ অসংখ্য ঔষধি উদ্ভিদ আজ বিলুপ্তির পথে। এ সমস্ত উদ্ভিদ মানুষের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে কার্যকরী ছিল। সাপসহ বিভিন্ন পোকামাকড়ের কামড়জনিত বিষক্রিয়া কমাতে ও সারিয়ে তুলতে ঔষধি উদ্ভিদের প্রয়োজনীয়তা ছিল অনস্বীকার্য। জ্বর, সর্দি, বাত ব্যথা, ডায়াবেটিস, ডায়রিয়া, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, অশ্ব, আমাশয়, কৃমি, পাইলস, ফোডা, চর্মরোগসহ বিভিন্ন চিকিৎসায় ঔষধি উদ্ভিদের ব্যবহার হতো। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধি কিংবা নগরায়ণের ফলে বনভূমি উজাড় করে নগরের পরিধি বৃদ্ধির ফলে ইট পাথরের নগরীতে ঔষধি উদ্ভিদ দেখতে পাওয়া যায় না বললেই চলে। ফলে টুকিটাকি অসুখ হলেই আমরা এন্ট্রিবায়োটিক ঔষধের শরণাপন্ন হই। মাত্রাতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক মানব স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াজনিত বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হয় মানবদেহে।
এমতাবস্থায় ঔষধি উদ্ভিদের প্রয়োজনীয়তা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ঔষধি উদ্ভিদের গুরুত্ব নিয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টিতে আমাদের কাজ করা প্রয়োজন বলে মনে করি। ওষধি উদ্ভিদ রক্ষায় সরকারের সুদৃষ্টি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।

খন্দকার বদিউজ্জামান বুলবুল
আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ

×