অনুমোদন ব্যতীত আবাসিক ভবন নির্মাণ হচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায়। দেখা যাচ্ছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না নিয়েই অবৈধভাবে চলছে এসব নির্মাণ কাজ। এরই সঙ্গে বাড়ছে প্রমোটার বা ডেভেলপারদের দৌরাত্ম্য। সুরক্ষিত এলাকা, সবুজ স্থান, প্লাবন ভূমি দখল করা হচ্ছে যুগ যুগ ধরে। অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে কোর্টের নির্দেশিকাকে অগ্রাহ্য করেই চলছে নির্মাণ কাজ। ফলস্বরূপ বাড়িগুলো অসময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বা ভেঙে পড়ছে। বাসিন্দাদের প্রাণের ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। আইন না মেনে নির্মাণ করায় ব্যাহত হচ্ছে নগর পরিকল্পনা। বিদ্যুৎ, ভূগর্ভস্থ পানি, রাস্তা ইত্যাদি জনসাধারণের সম্পদের ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তা দখল করে থাকা দোকানগুলো যানজট তৈরি করে জনজীবনে বাধা সৃষ্টি করে। খুঁটিতে আলগাভাবে ঝুলে থাকা তারগুলো যে -কোনো সময়ে বিপদ ঘটাতে পারে। অবৈধ নির্মাণের কারণে অনেক এলাকায় দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হচ্ছে। প্রায়ই অবৈধ বাড়ি ভেঙে একাধিক দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটছে। এই নির্মাণগুলোর কুপ্রভাব পড়ে পরিবেশের ওপরেও। সমস্যাগুলো দীর্ঘকাল উপেক্ষা করা যায় না। দিন দিন ঘিঞ্জি হচ্ছে ঢাকা শহর। যত্রতত্র বেআইনি বাড়িসহ নানা নির্মাণ। এই অপরাধে জড়িত রয়েছে কিছু অসাধু ব্যক্তি। বহু ক্ষেত্রে চার ফুট ছাড় রেখে বাড়ি করার নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষর নজর এড়িয়ে মাত্র আধা ফুটও নয়, এমন সামান্য জায়গা ছেড়েই বহুতল ফ্ল্যাট বা বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে। যেখানে পাঁচতলা করার অনুমতি মিলছে, সেখানে অর্থের লোভে আরও কয়েক তলা বেশি নির্মাণ করছে বহু নির্মাণ সংস্থা বা বাড়িওয়ালারা। যাঁরা সেসব ফ্ল্যাট কিনছেন তাঁরা সঠিক তথ্য যাচাই না করেই কিনছেন। এ ছাড়াও দেখা যাচ্ছে, পুরনো বাড়ি মেরামতির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয় না অনেক ক্ষেত্রেই। যথেচ্ছ বাড়ি নির্মাণ তো হচ্ছেই, নিকাশি নালার একদিক দখল করেও নির্মাণ হচ্ছে। জলাজমি বুজিয়ে বেআইনিভাবে তৈরি হয় বহুতল। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বেআইনি আর অপরিকল্পিত নির্মাণের জেরে বিভিন্ন স্থানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্স, দমকল ঢোকাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে যাওয়া যায় না। নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়ারও অন্যতম কারণ অবৈধ নির্মাণ।
লিয়াকত হোসেন খোকন
রূপনগর, ঢাকা