বই আমাদের পরম বন্ধু। বইয়ের সাথে বন্ধুত্ব করতে পারাটাই সার্থক। বইয়ের মাধ্যমে শুধু জ্ঞান অর্জন হয় না। বরং আমাদের চিন্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবর্তন আসে। বই পড়ার মাধ্যমে আমরা নতুন বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে পারি ও পরিবেশ পরিস্থিতি এবং প্রত্নতাত্ত্বিক, ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারি। আমাদের আদিম মানুষের সংস্কৃতি ও রীতি নীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে পারি।
বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীরা বই থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। যার ফলস্বরূপ সুশিক্ষিত মানুষ গড়ে ওঠছে না। বরং তাদের মধ্যে পাওয়া যায় না নৈতিক মূল্যবোধ, শিষ্টাচার,মানবিকতা।যার কারণে সমাজে অনৈতিক কাজ সমূহ বেড়েই চলেছে। সমাজে সুন্দর পরিবেশের পরিবর্তে বিপরীত পরিবেশের সাদৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
সমাজে থাকছে না শৃঙ্খলাবোধ,যার বিপরীতে রয়েছে বিশৃঙ্খলা। রাষ্ট্রের কাছে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।বই পড়া থেকে বিমুখ হলে আমরা নতুন তথ্য ও সৃজনশীলতা হারাতে পারি।বই পড়ার মাধ্যমে আমরা যেকোনো ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে পারি। অন্যথায় বিমুখ হলে ভাষাগত দূর্বলতা দেখা দিতে পারে।
সমাজের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে নিজেদের জ্ঞান ও দৃষ্টিভঙ্গি সংকীর্ণ হতে পারে।বই পড়ার মাধ্যমে মনোযোগ ও গভীরভাবে চিন্তা করার দক্ষতা উন্নত হয়। কিন্তু বিপরীত হলে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ও গভীর চিন্তা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
বই পড়ার মাধ্যমে আমরা মানসিক চাপ কমাতে পারি এবং বিনোদন নিতে পারি।যদি বিমুখ হয় তাহলে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । যা নিজেদের জীবনের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বই পড়া আমরা বিভিন্নভাবে বাড়াতে পারি। প্রথমে আমাদেরকে পড়ার জন্য সঠিক সময় নির্বাচন করতে হবে।এই সময়ে পড়ার টেবিলে বসার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। পরবর্তীতে আমরা কি রকম বই পড়ব তা নির্বাচন করতে পারি।তবে শুরুতেই সহজ ভাষায় লিখিত বই সমূহ নির্বাচন করা শ্রেয় মনে হয়। কেননা সহজ ভাষায় লিখিত বই সমূহ পড়ে, পড়ালেখার প্রতি সজীবতা ফিরে পাবে।
তারপরে আমরা বই পড়ার মাধ্যমে বইয়ের সাথে সুন্দর সৌহার্দ্য পূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি।যার মধ্য দিয়ে আমাদের ভিতর বই পড়ার আগ্রহ তৈরি হবে।
আমরা এলাকার পাবলিক লাইব্রেরী সমূহে গেলে সহজে বিনামূল্যে বা স্বল্প খরচে বই পেতে পারি। যেখানে অনেক রকমের বই রয়েছে। আবার পাঠাগার সমূহে অনেক ভালো মানের বই থাকে। যেখানে পড়াশোনার ও একটি সুন্দর মনোরম পরিবেশে থাকে।
অন্যথায় অনলাইন লাইব্রেরী সমূহেও সহজে বই পাওয়া যায়। অনলাইন লাইব্রেরীতে হরেক রকম বই থাকে।যার মাধ্যমে আমরা পড়াশোনার খোরাক মেটাতে পারি।
বই পড়তে উৎসাহিত করতে আমরা বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি। বই পড়ার গুরুত্ব বুঝার জন্য সেমিনারের আয়োজন করা যেতে পারে। উম্মুক্ত গ্রন্থাগার বাড়ানোর মাধ্যমে বই পড়তে উৎসাহিত করা যায়। কেননা গ্রন্থাগারে নিয়মিত আসা-যাওয়াতে বই পড়ার আগ্রহ বাড়ে।
সরকারেরও উচিত বই পড়া সম্পর্কে জাতিকে সঠিক ধারণা দেওয়া।যার কারণে তারা বই পড়ার প্রতি অনুপ্রাণিত হবে।
একটি দেশে যদি শতভাগ লোক বই মূখী হয় তাহলে দেশের জন্য তারা হলো একেকজন হীরার টুকরা।
দেশ তাদের থেকে প্রত্যাশার চেয়ে আরও ভালো কিছু পেতে পারে।তখন তারা দেশের জন্য আশীর্বাদ হয়, অভিশাপ নয়।
শিক্ষার্থী: ঢাকা কলেজ, ঢাকা
ই-মেইল: [email protected]
কুতুবে রব্বানী