বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী তথা সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব পালনের প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে। ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন গত বৃহস্পতিবার এক আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন পররাষ্ট্র সচিব এম জসিম উদ্দীনের সঙ্গে। উল্লেখ্য, ২০-২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত চীন সফরে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম. তৌহিদ হোসেন। এটিই পররাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রথম আনুষ্ঠানিক সফর সেদেশে। সফরকালে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ে কূটনীতিকরা বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী বছরব্যাপী উদ্যাপনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন। এ উপলক্ষে উভয়দেশের মধ্যে সম্পর্ক ভাগাভাগি, গভীর বোঝাপড়া এবং প্রাণবন্ত অংশীদারিত্বের একটি নতুন অঙ্গীকারের প্রতিশ্রুতি বহন করবে বলে আশা করা যায়।
বাংলাদেশ-চীন কৌশলগত অংশীদারিত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে দুই দেশের কৌশলকে আরও সুসংহত এবং যৌথভাবে ডিজিটাল কানেকক্টিভিটি ও বন্দর আধুনিকায়নের মতো কাজগুলো এগিয়ে নিতে কাজ করবে। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারিত্ব দুই দেশের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা থেকেই গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীনের ধারাবাহিক সমর্থনের কথা, অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ্য। মিয়ানমারের গৃহহীন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংকট সমাধানেও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করায় চীনের ভূমিকা রয়েছে। এসবই উভয় দেশের সম্পর্কের উষ্ণতার পরিধি ও পরিচয় তুলে ধরেছে।
বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক নতুন নয়, বহু পুরনো। সত্তর দশকের প্রথমার্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চীনের সঙ্গে যে সম্পর্কের সূচনা করেছিলেন, সেটা আরও বিকশিত করেছেন পরবর্তী সরকারগুলো। বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম সহযোগী চীন। আগামী এক থেকে দেড় দশকে চীন বাংলাদেশের জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ খাতে কয়েক হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে বলে আশা করা যায়। চীন মনে করে সেদিন খুব বেশি দূরে নয়, যেদিন চীন বাংলাদেশের প্রধান বিনিয়োগকারী দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশ-চীনের সম্পর্ক যে অন্য মাত্রায় পৌঁছেছে তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। বর্তমানে বাংলাদেশের বড় বড় স্থাপনা নির্মাণের কাজ করছে চীন। চট্টগ্রামে রয়েছে চৈনিক অর্থনৈতিক অঞ্চল। এছাড়াও সামরিক ক্ষেত্রে চীন-বাংলাদেশের সম্পর্ক পৌঁছেছে অন্য মাত্রায়।
বাংলাদেশ-চীনের এই সম্পর্ক শুধু বাংলাদেশের জন্যই গড়ে ওঠেনি, বরং নানা কারণে চীনেরও স্বার্থ রয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণে চীনের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশের মৈত্রী বন্ধনকে অটুট রাখার জন্য উভয় দেশের ইতিবাচক ভূমিকা বরাবরের মতো সমুন্নত থাকবে, এটিই প্রত্যাশা।
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক
শীর্ষ সংবাদ: