ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

জীবনে ভালো থাকাটা খুব জরুরি

রাজু আহমেদ

প্রকাশিত: ১৯:৩৫, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

জীবনে ভালো থাকাটা খুব জরুরি

জীবনে অত্যন্ত খারাপ সময় কিংবা খুব কঠিন সময় আসবে। তখন কিছুই ভালো লাগবে না বরং সবকিছু অসহ্য ঠেকবে। এমনকি বাঁচার ইচ্ছাও কমে আসতে পারে। তখন নিজেকে যথাসাধ্য গোপন করা, আড়ালে থাকাই ভালো। কখনো কখনো নিজের ভালোর জন্যও একা হতে হয়। জনসমাগম থেকে দূরে যেতে হয়। নিজের দুঃখ-কষ্ট অন্যকে না দেখানোতেই মঙ্গল। তবে যদি কেউ ভরসা হয়, পাশে দাঁড়ায় কিংবা সাহস জোগায় তার সাথে দুঃখ ভাগাভাগি করলে বুকের চাপ কমে। জমা ব্যথার বরফ গলতে শুরু করে।
তবে বিশ্বাস গড়ার চেয়ে আজকাল আশেপাশে বিশ্বাস ভাঙে বেশি লোকে। মানুষ মানুষের দুর্বলতা জেনে সেটা নিয়ে খোঁচা মারে। অল্প ব্যথাও দ্বিগুণ করে ফেরত দিতে এগিয়ে এসে। সেজন্যই নিজের ব্যথা, দুঃখ-কথা কিংবা জীবনের জটিল সময় নিজের মধ্যে কবর দেওয়া ভালো। জীবনের কঠিন সময়ের খবরগুলো নিজের মধ্যে এমনভাবে আড়াল করতে হবে যাতে শরীর ঘেঁষা মানুষটিও খুব অল্পই টের পায়। ভেঙে পড়ার খবরে যদি ঘর-বাজার সয়লাব হয়ে যায় তবে যত মানুষ তোমায় টিকে থাকতে সাহায্য করবে তারচেয়েকোটিগুণে তোমার শেষসীমায় পতন পর্যন্ত দেখার অপেক্ষায় থাকবে। হাততালিতে উল্লাস করার প্রস্তুতি সারবে। যেহেতু মানুষ চেনা সহজ কাজ নয় সেহেতু ভুল মানুষের কাছে বিশ্বাস তুলে দিয়ে ব্যথা বাড়িও না।
জীবনের বহুপ্রান্ত থেকে বহুবার ঝোড়ো বাতাস আসবে। পুড়েছারখার করে দেবে মনের সাজানো বন। আকস্মিক ঝড়ে ঝরে যাবে জীবনের বৃন্ত হতে সব সবুজ লতা-পাতা এবং ফুল। তাই বলে নিজেকে অসহায়ভাবেসঁপে দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে জীবনের পরাজয় দেখবে? মোটেই না। শক্ত হও। সামান্য বাতাসে জীবনকে এলোমেলো হতে দেওয়া যাবে না। হাল্কা আঘাতে ভাঙতে দেওয়া যাবে না বিশ্বাস। জীবনের খারাপ সময়ে শক্তভাবে হাল ধরে প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ভালো সময়কে বরণের আশায় বাঁচতে হবে।
কখনো কান্না পেলে, একাই কাঁদো। অন্যকে চোখের জল দেখালে সে তোমায় দুর্বল হিসেবে পেয়ে বসবে। জীবন যত বড় দুঃখ আসুক, যত গহীন ক্ষত তৈরি হোক কিংবা যত গভীর বেদনার সাগর সৃষ্টি হোক- কাউকে জানানো যাবে না। একা সামলাও।  মনে রেখো প্রিয়, যে নিজের জন্য আলো হতে পারে না, দুনিয়ার সমস্ত আলো মিলেও তাকে পথ দেখাতে পারে না। অধিকাংশ মানুষ নিষ্ঠুর এবং নির্দয়। যেহেতু তুমি নিশ্চিতভাবে জানো না যে, কে কোমল আর কে সদয়! কে বিশ্বাসের অমর্যাদা করবে না! সেহেতু ভুল মানুষের কাছে, ভুল ঠিকানায় গিয়ে- বাঁচার শেষ আশার প্রদীপটুকুওনিভিয়ে দিও না। স্বভাবতই মানুষ ভেঙে যাওয়া মৌচাকে ঢিল ছুঁড়ে আরও বেশি ভেঙে দিয়ে পৈশাচিক আনন্দ পায়!
নিজের জন্যই বাঁচতে হবে, নিজেকে ভালো রাখতে হবে। যেখানে সম্মান আছে সেখানে নিজেকে রাখুন। যারা বিশ্বাস রক্ষা করে তাদের সাথে থাকুন। একজীবনে অনেকগুলো ভুল মানুষ জীবনে এন্ট্রি নেবে। সেই আপদগুলোকে কীভাবে ডিল করছেন- সেটার ওপরেই আপনার সুখ-শান্তি নির্ভর করবে। কারো কাছে সবকিছু তুলে দেওয়ার আগে বুঝেশুনেএগোবেন। ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আমরা সময়কে দোষারোপ করি। অথচ ভুল সময় বলে কোন সময় নাই। আমরাই সময়কে বিষিয়ে তুলি। জীবনে ভালো থাকাটা খুব জরুরি। বিশ্বাসবিহীন পৃথিবীতে ভালো থাকা যাবে না।


[email protected]

×