ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১

সম্পর্ক টিকবে তো? বিয়ের আগেই জেনে নিন বিচ্ছেদের ১০টি কারণ

প্রকাশিত: ২৩:৫৭, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২৩:৫৮, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫

সম্পর্ক টিকবে তো? বিয়ের আগেই জেনে নিন বিচ্ছেদের ১০টি কারণ

আমাদের দেশে বিয়ে মানেই দুই পরিবারের আনন্দ আর বন্ধনের এক নতুন অধ্যায়। তবে, দুঃখজনকভাবে, বিয়ের পরে সম্পর্ক টিকে থাকে না এমন উদাহরণও অনেক। আপনি যদি আগেভাগেই বুঝে নিতে পারেন আপনার সম্পর্ক কতটা মজবুত, তাহলে এই নতুন যাত্রার পথে অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু নির্দিষ্ট কারণ আগে থেকেই ইঙ্গিত দিতে পারে যে কোনো দম্পতির বিয়ে টিকবে কি না। চলুন, সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি।

যে কারণগুলো ইঙ্গিত দেয় একটি সম্পর্ক টিকবে না:
১. বিয়েতে অতিরিক্ত খরচ করা সম্পর্কের উপর চাপ তৈরি করতে পারে
বড় বিয়ে আয়োজনের একটি সংস্কৃতি প্রচলিত আছে। পরিবার-পরিজন ও অতিথিদের খুশি করার জন্য অনেক সময় বাজেটের বাইরে খরচ করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বিয়েতে ২০ লাখ টাকার বেশি খরচ করেন, তাদের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বেশি। কারণ, আর্থিক চাপ সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, কম খরচে আন্তরিক বিয়ে করা দীর্ঘমেয়াদে সুখী জীবনযাপনের জন্য ভালো।

২. যদি সঙ্গী অনলাইনে অন্য কারো সাথে জড়িয়ে পড়েন
আজকের ডিজিটাল যুগে অনলাইনে সম্পর্ক গড়ে তোলা খুব সহজ হয়ে গেছে। অনেক সময় সঙ্গীরা এটাকে বড় ব্যাপার মনে না করলেও, এটি সম্পর্কের জন্য একটি বড় হুমকি হতে পারে। সঙ্গীর প্রতি বিশ্বাস টিকিয়ে রাখতে সতর্ক থাকা জরুরি।

৩. মাসিক আয় কম হলে সম্পর্কের ঝুঁকি বেশি থাকে
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, যারা মাসে ২৫,০০০ টাকার কম আয় করেন, তাদের আর্থিক সমস্যাগুলো সম্পর্কের মধ্যে প্রভাব ফেলে। টাকার অভাবে চাহিদা পূরণ না হওয়ার কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিতে পারে। তাই, দাম্পত্য জীবনে আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

৪. নিয়মিত নামাজ বা উপাসনা করা সম্পর্ক মজবুত করতে পারে
আমাদের দেশে ধর্মীয় বিশ্বাসের গুরুত্ব অনেক। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত নামাজ পড়েন বা উপাসনা করেন, তাদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ভালো হয়। ধর্মীয় মূল্যবোধ সম্পর্কের স্থায়িত্ব বাড়াতে সাহায্য করে।

৫. সঙ্গীর সৌন্দর্য বা টাকার প্রতি অতিরিক্ত আকর্ষণ হলে ঝুঁকি বাড়ে
যদি আপনার বা আপনার সঙ্গীর কাছে সৌন্দর্য কিংবা টাকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়, তবে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বেশি।ব্যক্তিত্ব ও বিশ্বস্ততাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হলে সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়।

৬. ধূমপান করলে সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে
আমাদের দেশে ধূমপান একটি সাধারণ অভ্যাস হলেও, এটি দাম্পত্য জীবনে সমস্যার কারণ হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একজন ধূমপান করেন, তবে তাদের বিচ্ছেদের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

৭. বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের অভিজ্ঞতা
বাংলাদেশের সমাজে এখনো বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের প্রভাব সন্তানের জীবনে বড় হয়ে দেখা দেয়। যাদের বাবা-মা আলাদা হয়ে গেছেন, তাদের নিজেদের সম্পর্কেও সেই নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

৮. সন্তান থাকা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে
আমাদের সমাজে সন্তান দম্পতির সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে তোলে। সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে অনেক দম্পতি সমস্যা থাকা সত্ত্বেও সম্পর্ক ধরে রাখার চেষ্টা করেন।

৯. দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিয়ের ঝুঁকি বেশি
গবেষণায় দেখা গেছে, দ্বিতীয় বিয়েতে বিচ্ছেদের ঝুঁকি বেশি, আর তৃতীয় বিয়েতে ঝুঁকি আরও বেশি।

১০. কম বয়সে বিয়ে করলে বিচ্ছেদের আশঙ্কা বেশি

বাংলাদেশে ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে বিয়ের হার বেশি। কিন্তু এই বয়সে আর্থিক স্থিতিশীলতা ও মানসিক পরিপক্বতার অভাব থাকে, যা বিচ্ছেদের কারণ হতে পারে। তবে, ৩৫ বছরের পরে প্রথম বিয়ে হলে সেই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

লেখক: অসিয়ানা টেপফেনহার্ট

আফরোজা

×