আমাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হলো পরিবেশ। কিন্তু প্রতিনিয়ত প্রকৃতি ও পরিবেশ বিরোধী নানা কাজ করে পরিবেশকে দূষণ করছি। উন্নত জীবনযাপনের জন্য বেঁচে থাকার ভিত্তি পরিবেশকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলছি আমরা। দূষণের কালো থাবায় হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ শ্যামল সুস্থ পরিবেশের দেশটা।
মাটি, পানি, বায়ু, শব্দ, আলো ইত্যাদি সব ধরনের দূষণ একত্রে পরিবেশ দূষণ হয়ে থাকে। বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দূষণ ও পরিবেশগত ঝুঁকির কারণে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তার একটি বাংলাদেশ। বাংলাদেশে প্রতিবছর যত মানুষের মৃত্যু হয় তার মধ্যে পরিবেশ দূষণজনিত কারণেই ২৮ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়।
২০২৩ সালের আই-কিউএয়ার প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত বাতাসের দেশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া মানের চেয়ে ১৫ গুণের বেশি পিএম পাওয়া গিয়েছে বাংলাদেশের বাতাসে। যা একটা দেশের জন্য হুমকি স্বরূপ।
দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা জেলা পৃথিবীর দ্বিতীয়তম দূষিত শহর। সাধারণত ঢাকায় চলাচল করা যানবাহন গুলো অনেক পুরোনো হওয়ায় যানবাহনগুলোর অনিয়ন্ত্রিত ধোঁয়া মারাত্মকভাবে বায়ুদূষণ করে। এছাড়া অতিরিক্ত যানজট, ইটভাটা নিম্নমানের জ্বালানী, কঠিন বর্জ্য উৎপন্ন ইত্যাদি বিভিন্নভাবে বায়ু দূষণ করছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, মানুষের শব্দ গ্রহণের স্বাভাবিক মাত্রা ৪০ থাকে ৫০ ডেসিবল। পরিবেশ অধিদপ্তর জরিপে দেখা যায়, দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে শব্দের মাত্রা ১৩০ ডেসিবল ছড়িয়েছে। যার ফলে শব্দ দূষণ হচ্ছে এবং মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস পাচ্ছে। কলকারখানার বর্জ্য, মানুষের বর্জ্য, ময়লা আবর্জনা ও মৃত জীবজন্তু, রাসায়ানিক সার ও কীটনাশক পানিতে মিশে পানি দূষিত করে। ফলে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রায় ১০ লাখ মানুষের বেশিরভাগই দরিদ্র, তারা সিসা দূষণের ঝুঁকিতে আছে। এর ফলে শিশুদের বুদ্ধির বিকাশ স্নায়ু জনিত ক্ষতি হতে পারে। এতসব দূষণের মধ্যে পরিবেশ চরমভাবে আরো দূষিত হচ্ছে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন এবং বনভূমি ধ্বংসের কারণে। পরিবেশ দূষণ রোধে জনসচেতন বাড়ানো এবং জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন, ফসলের জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে হবে। জনবসতি থেকে দূরে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে,শব্দদূষণ রোধ করতে হবে প্লাস্টিক জাতীয় পণ্যের ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। শহরের খালগুলো দখলমুক্ত করতে হবে। আর তার জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে এবং প্রয়োগ করতে হবে।সর্বশেষ প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গায় হতে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ পরিবেশ বাঁচলে আমরা বাঁচবো এবং দেশ বাঁচবে।
চট্টগ্রাম কলেজ থেকে
বিষাক্ত বাতাসে বসবাস!
শীর্ষ সংবাদ: