আজ ফিলিস্তিন দিবস, যা প্রতি বছর ২৯ নভেম্বর পালিত হয়। এটি একটি গভীর তাৎপর্যপূর্ণ দিন। কেবল একটি ভ‚খÐের স্বাধীনতার প্রশ্ন নয়, এটি ন্যায়বিচার, মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক সংহতির প্রতীক। জাতিসংঘ ১৯৭৭ সালে এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিন সংহতি দিবস হিসেবে ঘোষণা করে, মূলত ফিলিস্তিনিদের প্রতি বৈশ্বিক সমর্থন জ্ঞাপন এবং তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য। ফিলিস্তিনিদের জন্য তাদের ভ‚মি কেবল আবাস নয়, এটি তাদের সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক এবং আধ্যাত্মিক পরিচয়ের প্রতীক। তবে ১৯৪৭ সালের জাতিসংঘের প্রস্তাবিত বিভাজন পরিকল্পনার মাধ্যমে অঞ্চলটি ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনে বিভক্ত হওয়ার প্রস্তাব করা হয়। ফলে ফিলিস্তিনিরা তাদের অধিকাংশ ভ‚মি হারায় এবং উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়।
১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা এবং পরবর্তী আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের মাধ্যমে এই সংকট আরও গভীর হয়। আজও ফিলিস্তিনিরা দখলদারিত্ব, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার। বর্তমানে রীতিমতো জাতি নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েলিরা। এমতাবস্থায় ফিলিস্তিন দিবস বিশ্বজুড়ে মানুষের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রাম এবং তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির। এটি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেওয়ার আহŸান জানায়।
আজকের দিনে, বিশেষ করে গাজা উপত্যকায় চলমান সহিংসতা, খাদ্য, পানি, এবং চিকিৎসার সংকট, এবং শিশুদের ওপর যুদ্ধের প্রভাব বিশ্ববিবেককে নাড়া দেয়। আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের দায়িত্ব হলো এই মানবিক বিপর্যয় বন্ধে কার্যকর ভ‚মিকা রাখা এবং দুই রাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। আমাদের উচিত ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি সংহতি প্রদর্শন করা, আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে তাদের অধিকারের কথা তুলে ধরা এবং মানবতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেওয়া। এই দিবসটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে স্বাধীনতা, মর্যাদা এবং ন্যায়বিচার কেবল একটি জাতির জন্য নয়, এটি বিশ্বের সকল মানুষের অধিকার। ফিলিস্তিন দিবস একটি উপলক্ষ, যা আমাদের মানবতার প্রতি দায়বদ্ধতার কথা মনে করিয়ে দেয়। আসুন, আমরা এই সংকটে অবদান রাখার চেষ্টা করি এবং একটি ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব গড়ার পথে এগিয়ে যাই।
শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়