ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

কৃষকের মুখে হাসি

প্রকাশিত: ১৯:১১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪

কৃষকের মুখে হাসি

কৃষকের মুখে হাসি ফোটানোর কথা আমরা বলে থাকি। কেননা, কৃষক হাসলেই মাঠ হাসে, অর্থাৎ উৎপাদনে গতি আসে। বিষয়টি পরস্পর পরিপূরক। ভালো ফলন হলে কৃষকের মুখে হাসি ফোটে। কিন্তু মাথার ঘাম পায়ে ফেলে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়ানোয় ভূমিকা রেখেও অনেক সময় কৃষকের মুখে হাসি থাকে না। বলা ভালো, কৃষকের মুখের হাসি কেড়ে নেওয়া হয়। পণ্যের ন্যায্য দাম না পেলে এমনটাই হওয়ার কথা। আবার ফসল ফলানোয় বাধা থাকলেও কৃষকের মুখের হাসি নিভে যায়। ২৮ বছর পর কৃষকের মুখে হাসি ফোটানোর কাহিনী প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবারের জনকণ্ঠে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তুলশীগঙ্গা নদী পুনর্খনন করায় ২৮ বছর পর সুফল পাচ্ছে জয়পুরহাটের কৃষকরা। এখন তাদের মুখে হাসি। বছর বছর আমন ফসল না পাওয়ার দুঃখ তাদের ঘুচেছে। ১৯৯৫ সালে নদীর উভয় তীরে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হলেও নদী খনন না হওয়ায় সুফল পাননি কৃষকরা। গভীরতা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই নদীর পানি মাঠে ঢুকে প্লাবিত হয়ে নষ্ট হতো এলাকার হাজার হাজার হেক্টর আমন খেত। সেই থেকে নদী খননের দাবি ছিল ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের। অবশেষে তুলশীগঙ্গা নদী পুনর্খনন করার পর পাল্টে গেছে এলাকার সেই চিত্র। খননের পর ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বর্ষার পানি দ্রত নদীপথে অপসারিত হওয়ায় নদীর দুই তীরে ফসলের মাঠগুলোতে এখন চাষ হচ্ছে আমন ধান। প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে এবার আমন ধান চাষ করতে পেরে খুশি এলাকার কৃষকরা।
 নদী তীরবর্তী এলাকা ঘুরে জনকণ্ঠের প্রতিনিধ দেখেছেন, নদী পুনর্খননের ফলে উভয় তীরের জমিতে চলতি মৌসুমে ব্যাপকহারে আমন ধান চাষ হয়েছে। বিশেষ করে জয়পুরহাট সদর উপজেলার বানিয়াপাড়া, ধারকী, সোটাহার, সতিঘাটা, ক্ষেতলালের বটতলী, ইকরগাড়া, আটি দাশড়া, হাওয়ার বিল, দেওগ্রাম এবং আক্কেলপুরের হাসতা বসন্তপুর, জাফরপুর ও অনন্তপুর মাঠে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে গত বছর থেকে আমন ধান চাষ করছে কৃষকরা। অথচ নদীর গভীরতা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে গত ২৮ বছর ধরে নদীর দু’পাশের এসব মাঠের হাজার হাজার হেক্টর জমি বর্ষার পানিতে ডুবে থাকায় আমন ধান চাষ করতে পারেনি কৃষকরা। খননের ফলে বর্ষার পানি নদীপথে দ্রুত অপসারিত হওয়ায় বর্তমানে প্লাবিত হচ্ছে না ফসলের মাঠ। ফলে, খুব সহজেই আমন ধান চাষ করতে পারছে তুলশীগঙ্গা নদীর দু’পারের কৃষকরা। উল্লেখ্য, বন্যানিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে ১৯৯৫ সালে তুলশীগঙ্গা নদীর ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর উপজেলা অংশের উভয় তীরে দীর্ঘ বাঁধ নির্মাণ করা হয়।
কৃষকের মুখে হাসি ফোটানো চাই। এ জন্য কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করতে হবে। সেইসঙ্গে চাষের জন্য নিরবচ্ছিন্ন পানির সরবরাহ রাখতে হবে। নদী  পুনর্খননের সুফল হিসেবে আজ জয়পুরহাটবাসী কৃষকরা সন্তোষ প্রকাশ করছেন। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দেশের খরা ও ভাটি অঞ্চলের কৃষকদের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন করা চাই। মনে রাখতে হবে, কৃষক বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে।

×