ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা

প্রকাশিত: ২০:১৪, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে অনেক বিপরীত কার্যক্রম সামনে চলে আসে। বিশেষ করে চিকিৎসাক্ষেত্রে নানা অনিয়ম যেন নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসালয়ে ছাত্র আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবের লক্ষ্যে ১০ নির্দেশনা জারি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যথাযথ নির্দেশনা আইনানুগভাবে প্রয়োগ করাও প্রাতিষ্ঠানিক দায়বদ্ধতা। তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিয়মের অধীন করা হয়েছে ওষুধ কোম্পানিগুলোকে। বিশেষ করে ওষুধ শিল্পের বিভিন্ন প্রতিনিধি যেভাবে হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশের মাধ্যমে বাণিজ্যিক তৎপরতা চালান তা মোটেও শোভন নয়। তাছাড়া সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নই শুধু নয়, সংশ্লিষ্টদের সেবাদান প্রক্রিয়া নিশ্চিত করাও সময়ের ন্যায্যতা। ১০ নির্দেশনার কোনোটির ব্যত্যয় ঘটলে আইনি ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পিছু হটবে না। শুধু ছাত্র আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবাও অনিবার্য। বিবেচনায় রাখতে হবে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসায় গাফিলতি পর্যায়ে ঠেকলে তাও যথাযথ বিধানে সমাধান নিতান্ত জরুরি। আহত শিক্ষার্থীরা যদি চিকিৎসায় অর্থ প্রদানে অসমর্থ হন তার ব্যয়ভারও বিনামূল্যে করার কঠোর নির্দেশনা জারি করা হয়। বেসরকারি হাসপাতালগুলোও একই নির্দেশনা পালন করে যাবে। আহতরা ব্যক্তিগতভাবে নয়, বরং প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তায় নিজেদের সুস্থ করে তোলার দাবিও নির্দেশনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওষুধের খরচ থেকে যাবতীয় আনুষঙ্গিক ব্যয়ভারও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওপরই বর্তায়, যা উপর্যুক্ত ‘বিল ভাউচার’ তৈরি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জমা দিতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আহত শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোও প্রয়োজনীয় অন্যতম নির্দেশনা। সেখানে সার্বিক অর্থের জোগান দেবে যথাযথ কর্তৃপক্ষ। তার জন্য প্রয়োজনে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা অত্যাবশ্যক। সেক্ষেত্রে বোর্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। বোর্ডের দায়িত্ব হবে উপর্যুক্ত রেকর্ডপত্রসহ সংশ্লিষ্ট আহত রোগীর আবেদনপত্র জমা দেওয়া। সব প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড নিয়মানুগভাবেই করা বাঞ্ছনীয়। আরও বলা হয়, প্রতিটি হাসপাতালে সংশ্লিষ্ট আহত শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে অভ্যর্থনা কেন্দ্রের ব্যবস্থা রাখাও রোগীর স্বার্থে জরুরি, যাতে হয়রানি কিংবা গাফিলতির শিকার হতে না হয়। আহত শিক্ষার্থীদের যথাযথ চিকিৎসাসেবায় যেন কোনো ব্যত্যয় না হয় সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখা দরকার। শুধু অভ্যর্থনা কক্ষ নয়, বরং টিকিট কাটার নিয়মানুগ ব্যবস্থা থাকাও আহত রোগীদের জন্য জরুরি, যা তাদের অসুস্থ শরীরে কোনো ধরনের বিপন্নতা তৈরি করতে না পারে। সরাসরি উপস্থিতি ছাড়াও টিকিট করতে প্রযুক্তির সেবা নিশ্চিতের নির্দেশনা আসে। নিবন্ধিত আহত রোগী ছাড়া অন্য কাউকে সেবা দিতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য থাকবে না নির্দেশনায় এমন বিধিও রাখা হয়। তার জন্য নজরদারি করতে হবে খোদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই। ছাত্র আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের যাতে চিকিৎসায় কোনো প্রকার বেগ পেতে না হয় এই প্রত্যাশা।

×