অতীতের দিকে দৃষ্টি অবলোকন করলে দেখতে পাই দূর্নীতি আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রত্যেক কাঠামোতে ছড়িয়ে- ছিটিয়ে পড়েছিল। সরকারের উচ্চপদস্থ তথা সরকারের ছত্রছায়ায় ক্ষমতাবান অনেকের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অগণিত অভিযোগ পাওয়ার পরও তা থেকে উত্তরণের কোনো চেষ্টাই করা হয় নি। বরং দেখা যায় অনেকক্ষেত্রেই সরকার নিরব দর্শকের ভ‚মিকা পালন করেছে। দূর্নীতি দমন কমিশনের ভ‚মিকা নিয়ে ও হাজারো প্রশ্ন উঠেছে।
প্রভাবশালীরা যখন ব্যাংক লুটপাট, শেয়ারবাজার ধস, দূর্নীতি তথা দেশের অর্থনৈতিক খাত ধ্বংসের মূলে কাজ করছিল তখন বিগত সরকারের কার্যকলাপগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার মতো ছিল। অনিয়ম,দূর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, বাজার সিন্ডিকেট, চাঁদাবাজিতে বিগত সরকারেরই মদদপুষ্ট কিছু ক্ষমতাবান অনেকেই জড়িত ছিল। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছিল। তারপরও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ভালো মতো কোনো উদ্যোগই নেয় নি। গত দেড় দশকে টাকা পাচারের স্বর্গরাজ্য ছিল বাংলাদেশ।
স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সুশাসনের অভাব আর প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির প্রশ্রয়ে এ দেশের টাকা খুব সহজেই পাচার হয়েছে বিশ্বের অনেক দেশে। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বলছে, এ সময়ে প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। সরকারের অন্তত সাতটি নজরদারি সংস্থা থাকার পরও সবার নাকের ডগায় এই বিপুল অঙ্কের টাকা চলে গেছে বিদেশে। যেখানে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর দেশের অর্থনীতি হওয়ার কথা ছিল আরো প্রাণোজ্জ্বল,দ্রব্যমূল্য থাকবে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে, থাকবে না কোনো দূর্নীতি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে বিগত সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র জানতে গত ২৮শে অগাস্ট একটি শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করেছে। অর্থনীতি পুর্নগঠনে এই উদ্যেগটি প্রশংসার দাবিদার। বিপ্লব পরবর্তী সরকারের কাছে মানুষের অনেক আশা আকাঙ্ক্ষা থাকে অসংখ্য। আশা করি অন্তবর্তী সরকার দেশের অর্থনীতির চাকা বেগবান করবে। যেখানে থাকবে না কোনো দূর্নীতি, নিশ্চিত হবে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন, অর্থনীতি হবে আরো প্রাণোজ্জ্বল।
শিক্ষার্থী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়