মানবদেহে যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের বিষয়টি আবারও সামনে এসেছে। সম্প্রতি রাজধানীতে এক সেমিনারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বিষয়টি সম্পর্কে গরুত্বারোপ করে বলেন, ‘এই ওষুধের যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে মানবদেহের উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তৈরি হচ্ছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স, কমে যাচ্ছে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তার চেয়ে ভয়ংকর তথ্য হলো, আমরা যে অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছি তা আবার ফিরে আসছে পরিবেশে। এ নিয়ে কেউ ভাবছে না। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।’ বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) জনসচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির বিষয়ে আমরা দেরি করে ফেলেছি। আর সময় নষ্ট না করে এখনই কাজ শুরু করতে হবে। কারণ, প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গড় আয়ু বেড়েছে এর অর্থ এই নয়, স্বাস্থ্যের দিক থেকে আমরা অনেক উন্নত। আমরা বেঁচে আছি, তবে ভালোভাবে নয়। সুস্থতার জন্য ওষুধের ওপর নির্ভর করার পরিবর্তে আমাদের ওষুধ ছাড়া সুস্থ থাকতে হবে। এখনো অনেক মানুষ অসুখ হলে প্রয়োজন ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করছে। এতে তৈরি হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স, রাষ্ট্রের খরচ বাড়ছে আর মানুষ অসুস্থ থেকে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে।’ সেমিনারে বক্তাগণ ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
অ্যান্টিবায়োটিক শব্দটির সঙ্গে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। জীবনে একবারও অ্যান্টিবায়োটিক খায়নি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। কারণে-অকারণে আমরা অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছি। কখনো ডাক্তারের পরামর্শে, আবার কখনো নিজের বুদ্ধিতে। সর্দি, কাশি, জ্বর, মাথাব্যথা যাই হোক না কেন, অ্যান্টিবায়োটিকই যেন ভরসা। দোকানে গিয়ে রোগের কথা বলে বিক্রেতার পরামর্শেও আমরা অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করছি। দোকানিও দু’টাকা বিক্রির সুযোগ হাতছাড়া করেন না। কিছু একটা দিয়ে বিদায় করেন। এতে সাময়িক উপকার পেলেও এর সুদূরপ্রসারী ক্ষতির কথা আমরা অনেকেই ভাবি না। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবন রক্ষাকারী এই ওষুধের অপব্যবহারে উল্টো বাড়ছে মানুষের মৃত্যুঝুঁকি।
শুধু যে নিজেরাই দোকান থেকে কিনে অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছি তেমনটা নয়। বিদেশে ডাক্তারগণ খুব জরুরি না হলে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন না। সার্জারির পরও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দিতে চান না অ্যান্টিবায়োটিক। আমাদের দেশের ডাক্তাররাও ওষুধটির যথেচ্ছ ব্যবহার করছেন। একটি ইঞ্জেকশন দেওয়ার কারণেও এই দেশে ডাক্তার অ্যান্টিবায়োটিক দিচ্ছেন। দাঁতের চিকিৎসায় অন্তত দুই দিন আগে থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো শুরু হয়। সার্জিক্যাল অপারেশনে তো কথাই নেই। অপারেশনের আগে শুরু করে পরে আরও ৭ থেকে ১৪ দিন অ্যান্টিবায়োটিক অপরিহার্য। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম দেশের একজন বিশেষজ্ঞ সার্জনের কাছে। বাংলাদেশে ডাক্তারদের অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘প্রথমত আমরা যেসব হাসপাতাল এবং অপারেশন থিয়েটারে কাজ করি, এগুলো শতভাগ জীবাণুমুক্ত এমন নিশ্চয়তা আমাদের কাছে নেই। হাসপাতালের পরিবেশও শতভাগ দূষণমুক্ত নয়। অপারেশনের পর রোগীর যাতে ইনফেকশন না হয়, সে জন্য প্রয়োজন না হলেও আমরা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে দেই। রোগীকে যদি আইসিইউতে নিতে হয়, তবে তো কথাই নেই। আমাদের দেশে আইসিইউ থেকে সবচেয়ে বেশি রোগ ছড়ায়। সুতরাং কোনো ডাক্তারই রিস্ক নিতে চান না। এ ছাড়া রোগীকে দ্রুত সুস্থ করার জন্যও অনেকে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে থাকেন। উন্নত দেশের হাসপাতাল, বিশেষ করে ওটি, আইসিইউ শতভাগ জীবাণুমুক্ত। হাসপাতালের বিছানা বা পরিবেশ থেকে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এ জন্য তারা অ্যান্টিবায়োটিক না দিয়ে স্বাভাবিক আরোগ্যের ঝুঁকি নিতে পারেন। ইনফেকশন হলে তাদেরও অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হয়। এ ছাড়া উন্নত দেশে চিকিৎসার ব্যয় আমাদের দেশের তুলনায় অনেক বেশি। রোগীর কাছ থেকে তারা যে পরিমাণ টাকা নেয়, তাতে হাসপাতাল ও ওটির যথাযথ মেনটেইন করা সম্ভব হয়। আমাদের দেশের অধিকাংশ রোগীরই এত অর্থ ব্যয় করার সামর্থ্য থাকে না। যাদের সামর্থ্য আছে তারা আমাদের এত টাকা না দিয়ে বিদেশ চলে যান। স্বাভাবিকভাবেই ঝুঁকি জেনেও আমাদের সতর্কতা হিসেবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হয়।’ এই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের বক্তব্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা আমাদের শুরু করতে হবে হাসপাতালগুলোকে জীবাণুমুক্ত করার মাধ্যমে।
কয়েক ধরনের জৈব-রাসায়নিক ওষুধ যা অণুজীবদের (বিশেষ করে ব্যাকটেরিয়া) নাশ এবং বা বৃদ্ধিরোধ করে তাকেই অ্যান্টিবায়োটিক বলা হয়। সাধারণত এই ওষুধ ব্যাকটেরিয়া এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়। ভাইরাসের বিরুদ্ধে ওষুধটি কোনো কাজ করে না। ভাইরাসজনিত রোগের কারণে কোনো ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশন হলেই কেবল অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হয়। এক্ষেত্রে চিকিৎকরা প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। একেক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক একেক ধরনের অণুজীবের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে। ভাইরাস জ¦রে যারা অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করছেন, তারা প্রকারান্তরে নিজের ক্ষতি ছাড়া লাভবান হচ্ছেন না কিছুতেই।
প্রথম অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করেন লন্ডনের সেন্ট মেরি হাসপাতালের অণুজীব বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ফ্লেমিং ১৯২৭ সালে। ফ্লেমিং পরীক্ষার জন্য যে ছত্রাকটি ব্যবহার করেছিলেন, এর নাম ছিল পেনিসিলিয়াম (চবহরপরষষরঁস)। এ কারণে প্রথম অ্যান্টিবায়োটিকের নামকরণ করা হয় পেনিসিলিন। ১৯৪১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি প্রথম পেনিসিলিন মানবদেহে প্রয়োগ করা হয়। পরিমাণ নির্ধারণ সঠিক না হওয়ায় অক্সফোর্ডের এই পুলিশ কর্মকর্তাকে অবশ্য বাঁচানো যায়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে যুক্তরাজ্যে পেনিসিলিন নিয়ে গবেষণার কাজ পিছিয়ে যায়। পরে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার আমেরিকান বিজ্ঞানীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আমেরিকার রকফেলার ফাউন্ডেশন (জড়পশবভবষষবৎ ঋড়ঁহফধঃরড়হ)-এর পক্ষ থেকে পেনিসিলিন নিয়ে গবেষণারত ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের সেখানে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। বিশ্ববিখ্যাত ছত্রাক বিশেষজ্ঞ চার্লস থমের (ঈযধৎষবং ঞযড়স) তত্ত্বাবধানে আমেরিকার কৃষি বিভাগের গবেষণাগারে নতুন করে শুরু হয় গবেষণা। এই সময় পেনিসিলিনসহ আরও কিছু অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কৃত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রবাহিনীর সৈন্যদের ক্ষত সারাতে প্রথম পেনিসিলিনের ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। ১৯৪৫ সালে ফ্লেমিং, আর্নেস্ট চেন এবং ফ্লোরে চিকিৎসাবিজ্ঞানে তাদের অবদানের জন্য নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হয় মূলত বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ নিরাময়ের জন্য। সঠিক রোগ নির্ণয়ের পর ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নির্ধারিত পরিমাণে এটি ব্যবহার করতে হয়। অনেক রোগী প্রেসক্রিপশনে লিখে দেওয়া পুরো কোর্স শেষ করে না। এতে জীবাণুগুলো আহত হয়ে দমে যায়। অসুখটি সাময়িকভাবে কমে গেলেও শরীরে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুগুলো থেকেই যায়। পরবর্তী সময়ে এই আহত জীবাণুগুলো একই অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা লাভ করে। ওই অ্যান্টিবায়োটিক আর সেই জীবাণুগুলোর বিরুদ্ধে কাজ করে না। সর্দি-কাশি কিংবা ঠান্ডা-জ্বর হলেই অনেকে পাড়ার দোকান থেকে দুটি অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট কিনে খাচ্ছেন। এমনকি কঠিন কোনো অসুখেও ডাক্তারের কাছে না গিয়ে নিজেই ওষুধ কিনে খাচ্ছেন কেউ কেউ। কোনো অসুখে কি ওষুধ কত পরিমাণে খেতে হবে তাও তারা জানেন না। নিজেদের ভালো চিকিৎসক প্রমাণ করতে রোগীকে দ্রুত আরোগ্য করার লক্ষ্যেও কেউ কেউ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ লিখছেন। অ্যান্টিবায়োটিকের আদৌ প্রয়োজন কি না সেটিও বিবেচনা করছেন না তারা। ওষুধ কোম্পানিকে খুশি করার জন্য অনেক ডাক্তার অ্যান্টিবায়োটিক লিখছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এভাবেই দিনের পর দিন মানুষের শরীরে অনেক ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। মানুষকে ঠেলে দিচ্ছে মৃত্যুঝুঁকির দিকে। বিশে^র কোনো দেশে ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রি হয় না। অ্যান্টিবায়োটিক তো নয়ই। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার এ বিষয়ে স্পষ্ট গাইডলাইন রয়েছে। আমাদের দেশে ডাক্তার-রোগী কেউ এই গাইডলাইন অনুসরণ করেন না। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ফার্মেসিগুলোতে দেদার বিক্রি হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এভাবে চলতে থাকলে এক যুগ পরে অসংক্রমণব্যাধিতে যে সংখ্যক মানুষ মারা যায়, তার চেয়ে বেশি মারা যাবে অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে।
দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্যতম ব্যক্তিত্ব, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘দেশে যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার হচ্ছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে দোকান থেকে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাওয়ার পাশাপাশি দেশে এক শ্রেণির চিকিৎসক জেনে না জেনে কিংবা কোম্পানিকে খুশি করতে প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক লিখে দিচ্ছেন। আবার ব্যবসার স্বার্থে প্রেসক্রিপশন ছাড়াও দেদার অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করছে ফার্মেসিগুলো। কোনো রোগীকে কী ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে, সেটা ভালোভাবে দেখতে হবে। তা না হলে এই ওষুধ দেহে অকার্যকর হয়ে যাবে।’ তাঁর এই বক্তব্যে দেশে যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারের একটি চিত্র পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিকের পুরো কোর্স খেতে হবে। দুই-তিন দিন খেয়ে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া বন্ধ করলে জীবাণু মারা যাবে না, বরং সে আরও ভয়ংকর প্রতিরোধী হয়ে উঠবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খেলেও একই পরিণতি হতে পারে। প্রতিটি ওষুধেরই পাশর্^ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। বিনা প্রয়োজনে কেউ অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করলে তাকে এই ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে। অনেক দরিদ্র রোগী প্রেসক্রিপশনের পুরো ওষুধ কিনতে পারেন না। অনেকে একটু ভালো হলেই ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দেন। ওষুধ, পরিমাপ এবং ব্যবহারের সময় সঠিক না হলে উপকারের চেয়ে ক্ষতিই হয় বেশি। ডাক্তার এবং রোগীদের আরও সচেতন হতে হবে। কোনোভাবেই রেজিস্টার্ড ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ বিক্রি বা গ্রহণ করা যাবে না।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে বহুল ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের সংখ্যা এগারোটি। এর মধ্যে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা ইতোমধ্যে প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো প্রায় ৭০ ভাগ রোগীর দেহে কোনো কাজ করছে না। সময় নষ্ট না করে এখনই দেশের স্বাস্থ্য বিভাগকে সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে চালাতে হবে ব্যাপক প্রচার। দেশের গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এতে ভালো ভূমিকা পালন করতে পারে। একই সঙ্গে কিছু বাধ্যবাধকতাও কঠোরভাবে আরোপ করতে হবে। উন্নত বিশে^র মতো প্যারাসিটামল, অ্যান্টাসিড ইত্যাদি কিছু ওষুধ যা স্বল্পমাত্রায় মানবদেহে খুব একটা ক্ষতিকারক নয়, এমন তালিকা প্রকাশ করতে হবে। শুধু এই ওষুধগুলোই প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রি করা যাবে। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া আর কোনো ওষুধ বিক্রিকে বিবেচনা করতে হবে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে। নিশ্চিত করতে হবে আইনের কঠোর প্রয়োগ। শুধু রোগী নয়, সচেতন থাকতে হবে চিকিৎসকদেরও। স্বল্প প্রয়োজনে কিংবা প্রয়োজন ছাড়া কোনো রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া অপরাধ বলে বিবেচনা করতে হবে। হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোকে শতভাগ জীবাণুমুক্ত করতে হবে। অপারেশন থিয়েটার, আইসিইউ, বিছানাসহ হাসপাতাল থেকে রোগ ছড়ানো শতভাগ বন্ধ করার দিকে কঠোরভাবে নজর দিতে হবে।
লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, জনকণ্ঠ