অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নাসির উদ্দীন গণমাধ্যমকে বলেছেন, মানুষ যাতে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্য চার নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আজ রবিবার দুপুরে শপথ নিচ্ছেন। শপথ পাঠ করাবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাদের নিয়োগ দেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের শাসনের পতন হয় ৫ আগস্ট। এর এক মাস পর ৫ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। দেড় মাস ধরে শূন্য থাকার পর এখন নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলো।
নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে চায় বিএনপিসহ বিভিন্ন দল। বিএনপির নেতারা মনে করছেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় প্রবেশের বার্তা গেল জনগণের কাছে।
নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নতুন সিইসি বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। গত জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে অনেক মানুষ প্রাণ দিয়েছে। এই আন্দোলনের মূল বিষয়ই ছিল ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা। এত মানুষের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা সম্ভব নয়। সে জন্য সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাব।’
অন্তর্বর্তী সরকার আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিল ৩১ অক্টোবর। ২০২২ সালে প্রণীত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইনের আওতায় ওই অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়।
এই অনুসন্ধান কমিটির কাছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন দল ও পেশাজীবী সংগঠনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত পর্যায়েও আগ্রহী ব্যক্তিরা নাম প্রস্তাব করেন। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল এবং জাতীয় পার্টির কাছ থেকে নাম চায়নি অনুসন্ধান কমিটি। বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের ও সংগঠনের প্রস্তাব থেকে অনুসন্ধান কমিটি গত বুধবার রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করেছিল। অনুসন্ধান কমিটির প্রস্তাবিত তালিকা থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চারজনকে কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেন।
নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে দেশ নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করল। এখন এই বার্তা গেল জনগণের কাছে। এখন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অপেক্ষা। এই নির্বাচন কমিশন ভোটের জন্য যে প্রস্তুতি বা যে প্রক্রিয়া তার চ্যালেঞ্জ কতটুকু নিতে পারে, সেটাই দেখার বিষয়। তবে আমরা আশাবাদী, নিকট অতীতের ভোটাধিকার প্রয়োগে বঞ্চিত কিংবা নিরুৎসাহী বিপুল সংখ্যক ভোটার এবার বহু প্রতীক্ষিত নির্বাচনে অবাধে ভোট দিতে সক্ষম হবেন।
নতুন নির্বাচন কমিশন
শীর্ষ সংবাদ: