২০১৭ সালের ১৭ ই আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর দমন নিপীড়ন ও নির্মম সহিংসতার শিকার হয়ে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে বাংলাদেশে। দীর্ঘ সাত বছরেও প্রত্যাবাসন না হওয়ায় বর্তমানে রোহিঙ্গার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১৩ লক্ষ এর অধিক। আশ্রয় নেওয়া এই বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গা রীতিমতো গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার দরুন বিরাট ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো পরিণত হয়েছে অপরাধের স্বর্গরাজ্যে। প্রতিনিয়ত খুনখারাবি, ডাকাতি মাদক চোরাচালানসহ বহু অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে। অবৈধভাবে জাতীয় পরিচয় পত্র বানিয়ে এরা দেশের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে পড়ছে। পাশাপাশি অবৈধভাবে বাংলাদেশি পাসপোর্ট বানিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে এবং সেখানে জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অপরাধে। এতে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
তবুও এই সংকটের সমাধান কোনভাবেই মিলছে না। দীর্ঘ সাত বছরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এর বহু উদ্দ্যোগ নেওয়া হলেও ফলপ্রসূ সমাধান এখনো আসেনি। প্রত্যাবাসন বিফল হওয়ার কয়েকটি প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মিয়ানমার সরকার এবং জাতিসংঘসহ বিশ্ব মোড়লদের অনিচ্ছা। এছাড়া ইউক্রেন-রাশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা নিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যু চাপা পড়েছে পর্দার অন্তরালে। গত সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯ তম অধিবেশনে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস রোহিঙ্গা নিয়া তিনটি প্রস্তাব রেখেছিলেন। এখন দেখার বিষয় কতটুকু অগ্রগতি হয় এই প্রস্তাবের। বাস্তুচ্যুত বিশাল সংখ্যক এই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ নানা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আর এই ঝুঁকি থেকে বাংলাদেশকে সুরক্ষিত রাখতে দ্রæত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করতে হবে। এবং জাতিসংঘসহ সব আন্তর্জাতিক সংগঠন ও অংশীজনদের একজোট হয়ে কাজ করতে হবে।
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া