ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি

প্রকাশিত: ১৯:৩৫, ২১ নভেম্বর ২০২৪

ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি

দেশে নিত্যপ্রয়োজনী সামগ্রীর দাম দিন দিন বেড়েই চলেছে। সেইসঙ্গে বেড়ে চলছে বিভিন্ন ওষুধের দামও। সম্প্রতি জনকণ্ঠের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বেশিরভাগ ওষুধের দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত। গত বছর ডেঙ্গুর ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের সময় বেড়েছিল নাপা, ফেক্সো-ফেনাডিন, ডক্সিভা, সেকলো, অমিডন, মন্টিয়ার-মোনাস, এমকাস, রিভার্সএয়ারের মতো বহুল ব্যবহৃত ওষুধগুলোর। তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছিল এন্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধের দাম। চলতি বছরের শুরু থেকে আবারও ওষুধের বাজারে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা।
এমন পরিস্থিতিতে অন্যান্য খরচ কাটছাঁট করে চিকিৎসার খরচ চালাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। সেইসঙ্গে কারও কারও প্রশ্নÑ নিত্যপ্রয়োজনী অনেক দ্রব্যের খরচ চেষ্টা করলে হয়তো কাটছাঁট করা যায়, কিন্তু ওষুধের বিকল্প কি? বিশেষ করে অসংক্রামক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের দাম বেশি বেড়েছে। কারণ এসব ওষুধ রোগীদের নিয়মিত সেবন করতে হয়। সেই সুযোগে কোম্পানিগুলো ওইসব ওষুধের দাম বাড়াচ্ছে। বর্তমানে ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির যে চিত্র তা উদ্বেগজনক।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, দেশের মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য তালিকাভুক্ত ১১৭টি ওষুধের দাম বাড়ানোর ক্ষমতা সরকারের হাতে রয়েছে। আর এই ক্ষমতাবলে সেগুলোর দাম বাড়ানো হয়। ফলে কিছু কিছু ওষুধের দাম যৌক্তিকভাবে বেড়েছে। কিন্তু এর সুবিধা নিচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। মাঠ পর্যায়ে অনেক অসাধু ওষুধ বিক্রেতা অধিক মুনাফার লোভে নির্ধারিত ওষুধের বদলে অন্যান্য ওষুধেরও দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে করে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকেই। ওষুধ কিংবা অন্য কোনো পণ্য হোক, দাম বাড়াতে ব্যবসায়ীদের কখনোই যেন যুক্তির অভাব হয় না। তারা ওষুধের দাম বৃদ্ধির জন্য গত বছরের মতো এ বছরও ডলারের দাম বৃদ্ধিকেই দায়ী করছেন। এমনকি অনেক বিক্রেতার দাবি, ওষুধ বিক্রি করে লভ্যাংশের সামান্যই তারা পান, বেশিরভাগ পায় কোম্পানিগুলো।
সাধারণ মানুষের প্রত্যাশাÑ অন্তর্বর্তী সরকার যেন দৈনন্দিন জীবনের অতি জরুরি এই পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখে। এরূপ পরিস্থিতিতে ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী মনিটরিং টিম, যারা বাজার মনিটর করবে এবং কেউ ওষুধের বাড়তি দাম আদায় করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে। নিয়মিত বাজার তদারকির ব্যবস্থা না থাকলে ওষুধের দাম আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওষুধের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ওষুধের দাম ক্রমেই বাড়তে থাকলে সাধারণ রোগী ও স্বল্প আয়ের মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছতে পারে। তাই সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে যথাযথ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করা আবশ্যক।

×