ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সড়ক নিরাপত্তায় ডার্ক অ্যাপ

প্রকাশিত: ১৯:৫৪, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

সড়ক নিরাপত্তায় ডার্ক অ্যাপ

রাজধানীতে সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ডিএমপির ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ বিভাগ এবার হাতে নিয়েছে অত্যাধুনিক ডিজিটাল সফটওয়্যারের সহায়তা। ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি নামের প্রকল্পটিতে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি জাইকা। বাংলাদেশের বৃহৎ দাতা সংস্থাটি শুধু কারিগরি ও বিশেষজ্ঞ দিয়েই সহায্য করছে না, ডিএমপির ৮ শতাধিক ডিসি, এসডি, এসি, পিআই ও সার্জনকে প্রশিক্ষণও দিচ্ছে।
ডিএমপি ডার্ক সফটওয়্যারের মাধ্যমে খুব সহজেই  নির্ণয় করা যাবে যানবাহনের চলাচলের গতিবিধি এবং সংঘটিত দুর্ঘটনার আগে ও পরে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভিডিও চিত্র। যা দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী চালক ও সহকারীর বিরুদ্ধে নিপুণভাবে আদালতে মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা যায়। ফলে স্বভাবত যানবাহনের চালক আগে থেকেই সতর্ক থাকবে এবং মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের দাপট কমে আসবে। সর্বোপরি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে অদূর ভবিষ্যতে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন সম্ভব হতে পারে। ঢাকাসহ সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা, জীবন ও সম্পদহানির পরিমাণ বেড়েই চলেছে। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে তেমন উদ্যোগ-আয়োজনও দৃশ্যমান নয় সরকারি না বেসরকারি ভাবে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? সড়কে মৃত্যুর মিছিল কি বাড়তেই থাকবে?
দেশের ৯০ শতাংশ মানুষই ট্রাফিক আইন মানে নাÑ এক সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যটি সবিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ৮৪ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে দ্রুতগতির কারণে। সেক্ষেত্রে ৯০ শতাংশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য প্রায় অসম্ভব কাজ। উল্লেখ্য, বেপরোয়া বাসের চাপায় রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানী ও আশপাশের লাখো শিক্ষার্থী রাজধানীতে রাস্তায় নেমে এসে বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে। সর্বস্তরের মানুষ এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এই আন্দোলনের সারবত্তা ও যৌক্তিকতা উপলব্ধি করে তাতে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানায়। এই প্রেক্ষাপটে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-এর অনুমোদন দেওয়া হয়।
বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে, পরিস্থিতির উন্নতি তো দূরের কথা, ন্যূনতম শৃঙ্খলা নেই কোথাও। বাস্তবায়ন হতে পারেনি আইনও। বিশৃঙ্খল অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে রীতিমতো হতাশা প্রকাশ করে ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, আগামীতে ট্রাফিক পুলিশের অভিযান আরও জোরালো ও বেগবান করা হবে। সড়কে যানবাহনের গতি নজরদারি করা হবে কঠোরভাবে। নেওয়া হবে ট্রাফিক ব্যবস্থা যথাযথ ও টেকসই করার, যাতে পরিবহন খাতসহ শৃঙ্খলা ফিরে আসে সড়ক-মহাসড়গুলোতে। সরকার, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বিআরটিএ, ট্রাফিক বিভাগসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পৌর কর্তৃপক্ষ সর্বোপরি পরিবহন শ্রমিক ও মালিক সমিতি একসঙ্গে বসে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সমাধানের পথ বের করতে না পারলে সড়কের নৈরাজ্য দূর হবে না। এর পাশাপাশি ডিএমপির সদ্যপ্রবর্তিত ডার্ক অ্যাপটি সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ইতিবাচক অবদান রাখবে বলেই প্রত্যাশা।

×