ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

ডিজিটাল ভূমিসেবা

প্রকাশিত: ১৯:২৭, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

ডিজিটাল ভূমিসেবা

দেশে ভূমিসংক্রান্ত বিষয়ে বেশিরভাগ সময় মানুষ হয়রানির শিকার হন। ভূমিবিষয়ক আগের জটিলতাগুলো মানুষের জন্য সহজ করতে ভূমি মন্ত্রণালয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেবা প্রদান শুরু করেছে। এ ছাড়াও অনেক আইন-কানুন-বিধি সংশোধিত হয়েছে ও হচ্ছে। নাগরিকদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন, জনবান্ধব ও নির্ঝঞ্ঝাট ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভূমিসেবা পুরোপুরি হয়রানিমুক্ত ও জনবান্ধব করতে মিউটেশন, এলডি ট্যাক্স ও খতিয়ান সেবা সম্পূর্ণ অনলাইনে হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর সারাদেশের মানুষের জন্য ভূমিসেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পাইলটিং হিসেবে তেজগাঁওয়ের তেজতুরীবাজার মৌজাকে মডেল হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা জেলার ১৯টি সার্কেলের সব মৌজায় দ্রুত অনলাইনে শতভাগ ভূমিসেবা চালু করা হবে। প্রাথমিকভাবে ভূমি উন্নয়ন কর (এলডি ট্যাক্স) সেবা শতভাগ অনলাইনে পরিশোধের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ফলে, সংশ্লিষ্ট মৌজার যে কোনো নাগরিক ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে হোল্ডিংয়ের এলডি ট্যাক্স ঘরে বসেই নির্বিঘ্নে ও শতভাগ অনলাইনে দিতে পারবেন এবং সঙ্গে সঙ্গে দাখিলা পেয়ে যাবেন। ঘরে বসে নাগরিক পরিশোধিত কর তাৎক্ষণিক জমা হবে সরকারি কোষাগারে অটোমেটেড চালানের মাধ্যমে। পর্যায়ক্রমে এই সেবা সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ। উল্লেখ্য, ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশনের একটি মাইলফলক হচ্ছে অনলাইনে জমির খাজনা প্রদান। অনলাইনে খাজনা প্রদান পদ্ধতি চালু হওয়ায় মানুষকে আর জমির খাজনা দিতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যেতে হবে না। এতে করে মানুষের সময় সাশ্রয় হচ্ছে, কমছে যাতায়াত খরচ ও হয়রানি। যদিও অনেকেই সেবাগুলো কিভাবে গ্রহণ করতে হয়, তা না জানার কারণে এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।  
 দেশ-বিদেশের যে কোনো স্থান থেকে এসব সেবা ঘরে বসে বা কলসেন্টারের মাধ্যমে সেবা গ্রহণ করতে পারলে সাধারণ মানুষ অনলাইনে সেবা গ্রহণে আরও অনুপ্রাণিত হবেন। তবে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে মাঠপর্যায়ে ডিজিটাল ভূমিসেবা প্রদান কিছুটা চ্যালেঞ্জিংও। কারণ, এখনো মানুষের মাঝে ভূমিবিষয়ক পর্যাপ্ত সচেতনতা তৈরি হয়নি। এক্ষেত্রে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জগুলো খুঁজে বের করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত নানা পদক্ষেপ সম্পর্কে দেশের নাগরিক, সরকারি সংস্থা ও স্টেকহোল্ডারদের অবহিত, ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি এবং ভূমিসংক্রান্ত বিদ্যমান আইন ও বিধিবিধান সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা জরুরি। দীর্ঘদিন ধরে ভূমি ব্যবস্থাপনায় যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তার সমাধান হয়ত অল্পদিনে সম্ভব নয়। কিন্তু সর্বত্র ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহারের ফলে ধীরে ধীরে এসব সমস্যার সমাধান হবে এবং কাজে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে। এজন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সকলের সততা ও ঐকান্তিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

×