ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

ধূমপান ছেড়ে দিলে ঝুঁকি কমে ডায়াবেটিসের

ডা. অরূপরতন চৌধুরী

প্রকাশিত: ২০:১৭, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

ধূমপান ছেড়ে দিলে ঝুঁকি কমে ডায়াবেটিসের

বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা, আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) এবং নিউক্যাসল বিশ^বিদ্যালয়ের যৌথভাবে তৈরি করা একটি নতুন গবেষণা মতামত দিয়েছে যে, ধূমপান ছেড়ে দিলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করতে পারে। আইডিএফ (আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন) অনুমান করে যে, বিশে^ ৫৩.৭ কোটি লোকের ডায়াবেটিস রয়েছে। অর্থাৎ প্রতি দশজনে একজন ডায়াবেটিস আক্রান্ত এবং যেটা ২০৩০ সাল নাগাদ ৬৪৩ মিলিয়ন ছাড়াবে। প্রতি ৫ সেকেন্ডে একজন ডায়াবেটিস রোগীর মৃত্যু হয়।  টাইপ ২ ডায়াবেটিস বিশ^ব্যাপী সর্বাধিক দীর্ঘস্থায়ী রোগগুলোর মধ্যে একটি, যা সব ধরনের ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ৯৫ শতাংশেরও বেশি। তবে টাইপ ২ ডায়াবেটিস সহজেই প্রতিরোধযোগ্য।
ধূমপান ত্যাগ করা কেবল টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকিই হ্রাস করে না, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও অনেক সাহায্য করে। ডায়াবেটিসের জটিলতার ঝুঁকি হ্রাস করে। গবেষণা প্রমাণ করে যে, ধূমপান রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে, যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের কারণ হতে পারে। ধূমপান ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা যেমনÑ কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ, কিডনি জটিলতা এবং অন্ধত্বের ঝুঁকিও বাড়ায়। ধূমপান ক্ষত নিরাময়ে বাধা সৃষ্টি করে এবং নিম্নাঙ্গে পঙ্গুত্বের ঝুঁকি বাড়ায়, যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর একটি উল্লেযোগ্য বোঝা তৈরি করে।
আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে এবং ডায়াবেটিস জটিলতা এড়াতে মানুষকে ধূমপান বন্ধ করতে জোরালোভাবে উৎসাহিত করে। এই কথাটি পরিষ্কার যে, ধূমপান ত্যাগ করা কেবল স্বাস্থ্যকর ফুসফুস এবং হৃদয়ের জটিলতা এড়াতে নয়; এটি টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করার ক্ষেত্রেও একটি শক্ত পদক্ষেপ। স্বাস্থ্য কর্মীরা তামাক ছাড়ার ক্ষেত্রে টাইপ ২ ডায়াবেটিসযুক্ত ব্যক্তিদের অনুপ্রাণিত ও গাইড করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। একই সঙ্গে সরকারকেও এর গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করা জরুরি।
যখন ডায়াবেটিস হয় তখন শরীরে  পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি হয় না বা ইনসুলিন খুব ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারে না। যখন পর্যাপ্ত ইনসুলিন থাকে না বা কোষগুলো ইনসুলিনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়, তখন বেশি পরিমাণে চিনি রক্ত প্রবাহে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা যেমনÑ হৃদরোগ, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস এবং কিডনি রোগের কারণ হতে পারে। ডায়াবেটিস একটি অটোইমিউন প্রতিক্রিয়া দ্বারা সৃষ্ট বলে মনে করা হয়, যা শরীরকে ইনসুলিন তৈরি করতে বাধা দেয়। সারাবিশে^ খুব কম লোকেরই টাইপ ১ ডায়াবেটিস থাকে, যা প্রায়ই শিশু, কিশোর ও অল্প বয়স্কদের মধ্যে নির্ণয় করা হয়।

ধূমপানের সঙ্গে ডায়াবেটিসের সম্পর্ক

গবেষণায় দেখা গেছে যে, ধূমপান টাইপ ২ ডায়াবেটিসের একটি কারণ, প্রকৃতপক্ষে যারা সিগারেট পান করেন, তাদের ধূমপান না করা লোকদের তুলনায় টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা ৩০%-৪০% বেশি। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা যারা ধূমপান করেন, তাদের ইনসুলিন ডোজ বা মাত্রা কার্যকর করতে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। একজন ধূমপায়ী যত বেশি সিগারেট পান করবেন, তার টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তত বেশি। যে ধরনের ডায়াবেটিস থাকুক না কেন, ধূমপান বা তামাক গ্রহণ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা আরও শক্ত করে তোলে। যদি কারও ডায়াবেটিস হয় এবং তিনি যদি ধূমপান করেন, তবে ডায়াবেটিস থেকে তার বিভিন্ন জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। যেমনÑ হৃদরোগ, কিডনি রোগ এবং পায়ে দুর্বল রক্ত প্রবাহ, যা সংক্রমণ, আলসার এবং সম্ভাব্য পা কেটে ফেলার কারণ হতে পারে (পায়ের আঙ্গুল বা পায়ের অংশ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শরীরের কোনো অংশ কেটে ফেলা)। তাছাড়াও রেটিনোপ্যাথিÑ চোখের রোগ যা অন্ধত্বের কারণ হতে পারে। পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি হাতে ও পায়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ু, যা অসাড়তা, ব্যথা, দুর্বলতা সৃষ্টি করে।
তামাকজাত পণ্যগুলোতে পাওয়া নিকোটিন একটি রাসায়নিক বিষাক্ত পদার্থ, যা রক্তে শর্করাকে বাড়িয়ে তোলে। সিগারেট এবং অন্য তামাকজাত পণ্যগুলোর রাসায়নিক পদার্থ দেহের ক্ষতি করে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে (প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে)। দেহের এই প্রদাহ এবং নিকোটিন উভয়ই দেহের রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করে তোলে। যারা ধূমপান করেন, তাদের পেটে চর্বি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে, এমনকি তাদের ওজন যদি বেশি নাও থাকে।

ধূমপান এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা চ্যালেঞ্জিং এবং ধূমপান সেটাকে আরও কঠিন করে তুলতে পারে। যেহেতু নিকোটিন রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়, তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি যারা ধূমপান করেন, তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।

ধূমপান ছেড়ে দেওয়া কেন প্রয়োজন

আপনি কতবার ধূমপান করছেন বা কখন ছেড়ে দিলে আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। আপনি যখন ধূমপান বন্ধ করবেন, সেই সময় থেকে আপনার শরীর নিজেই নিরাময় শুরু করবে। যেমনÑ ১২ ঘণ্টার মধ্যে আপনার রক্তে কার্বন মনোক্সাইড (সিগারেটের ধোঁয়া থেকে উৎপন্ন একটি বিষাক্ত গ্যাস) স্বাভাবিক হয়ে যাবে। ২ সপ্তাহ থেকে ৩ মাসের মধ্যে আপনার রক্ত সঞ্চালন এবং ফুসফুস আগের চেয়ে উন্নত হবে। এক বছরের মধ্যে আপনার রক্ত সঞ্চালন অনেক বেশি স্বাভাবিক হবে। এক বছরের মধ্যে আপনার হৃদরোগ ঝুঁকি, যারা এখনও ধূমপান করে, এমন ব্যক্তির চেয়ে অর্ধেকে নেমে আসবে। ধূমপান ত্যাগ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা আরও সহজ করতে সহায়তা করে। শরীর ধূমপান মুক্ত হওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য না হওয়া পর্যন্ত রক্তে শর্করার পরিমাণ ঘন ঘন পরীক্ষা করাতে হবে।
ধূমপান ছাড়ার জন্য প্রয়োজন সাহায্য

নিকোটিন পণ্য যেমনÑ নিকোটিন প্যাচ এবং লজেন্স ধূমপান বন্ধে সহায়তা করতে পারে। এগুলো ব্যবহারে ধূমপান ছাড়ার সম্ভাবনাকে দ্বিগুণ করতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে নিকোটিনযুক্ত পণ্যগুলো রক্তে শর্করাকে বাড়িয়ে তোলে। তাই যদি ডায়াবেটিস থাকে, তবে সেগুলো ব্যবহার সম্পর্কে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন। প্রথম চেষ্টায় ছাড়তে সক্ষম না হলেও হাল ছাড়া ঠিক হবে না। পিছলে গেলেও মন খারাপ করার দরকার নাই, ভালোর জন্য ধূমপান মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত বেশ কয়েকবার চেষ্টা করতে হতে পারে (যদিও কিছু লোক তাদের প্রথমবারই ছেড়ে দেয়)। যদি ডায়াবেটিস থাকে এবং আপনি ধূমপান করেন, তবে ধূমপান ত্যাগ করা এখনই আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকার আনবে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিরা, যারা ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ছেড়ে দেন, তারা রক্তে শর্করার মাত্রা আরও ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হন।

কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়

ধূমপান করবেন না। কারণ, ধূমপান আপনার টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়। ওজন বেশি হলে ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম ও খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অনেক জরুরি।

নিকোটিন কীভাবে রক্তে
শর্করা প্রভাবিত করে

নিকোটিন রক্তে শর্করার মাত্রা ওপরে বা নিচে ওঠাতে/নামাতে পারে। নিকোটিন জাতীয় রাসায়নিক পদার্থ দেহের গ্লুকোজ ব্যবহার করার কার্যকারিতাকে পরিবর্তন করে, রক্তে চিনি যা কোষগুলোকে শক্তি দেয়। এটি অন্যদিকে টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এটি ডায়াবেটিসকে আরও খারাপ করতে পারে। অন্যদিকে, নিকোটিন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এবং ইনসুলিন গ্রহণকারী ব্যক্তিদের জন্য মারাত্মক লো ব্লাড গ্লুকোজ (হাইপোগ্লাইসোমিয়া) সৃষ্টি করতে পারে।
নিকোটিন কোষগুলোতে রাসায়নিক প্রক্রিয়াগুলো পরিবর্তন করে। যাতে তারা ইনসুলিনের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করে। কোষগুলোর প্রয়োজনে যাতে তারা রক্ত থেকে গ্লুকোজ নিতে পারে এবং এটি শক্তির জন্য ব্যবহার করতে পারে। যখন তারা পারে না, তখন গ্লুকোজ রক্তে থাকে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।
নিকোটিন শরীরকে আরও ট্রাইগ্লিসারাইড তৈরি করতে ট্রিগার করতে পারে, যা হচ্ছে ইনসুলিন প্রতিরোধের সঙ্গে যুক্ত এক ধরনের ফ্যাট। অন্যদিকে, নিকোটিন হরমোনের  মাত্রা  বাড়ায়, যা ইনসুলিনের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ধূমপান কোষের ইনসুলিন ব্যবহারের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে বেশি সময় নেয় না। গবেষণায় দেখা গেছে যে, যাদের ডায়াবেটিস এবং যারা ধূমপায়ী তাদের রক্তের গ্লুকোজের নিয়ন্ত্রণ করতে ইনসুলিনের বেশি ডোজ প্রয়োজন হয়।
ধূমপায়ীদের যখন রক্তের গ্লুকোজ কয়েক বছরের জন্য নিয়মিত খুব বেশি থাকে, তখন এটি হৃদরোগ এবং কিডনি, স্নায়ু এবং চোখের ক্ষতি সাধন করতে পারে। ধূমপায়ী যত বেশি সিগারেট পান করবেন তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। যারা ধূমপান করেন, তাদের সম্ভাবনা ৩০-৪০ শতাংশ বেশি। দিনে ২০টির বেশি সিগারেট খেলে তা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। নিকোটিন শরীরে প্রবেশ করার পর থেকে রক্তে গ্লুকোজ বাড়িয়ে তুলতে পারে। যেমনÑ পরোক্ষ ধূমপানের ধোঁয়া যিনি ধূমপান করছেন না, তাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে (অন্য ব্যক্তির সিগারেট থেকে ধোঁয়ার মাধ্যমে শ^াস ফেলা), তামাক চিবানো (জর্দা, গুল, দোক্তা, সাদাপাতা)।

ইলেকট্রনিক সিগারেট (ই-সিগারেট, ভ্যাপিং ইত্যাদি)

ধূমপায়ীদের যদি ইতোমধ্যে ডায়াবেটিস না থাকে, তবে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হতে পারে। প্রথম ২ বছর এটি হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এটি অনেক ক্ষেত্রে ওজন বাড়ার কারণেও হতে পারে, তাই ওজন কমাতে উপায়গুলো সম্পর্কে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন। ধূমপানের কারণে আপনার ডায়াবেটিস থাকুক বা না থাকুক রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে। যদি কারও ডায়াবেটিস হয়, তবে ধূমপানের কারণে ডায়াবেটিসের দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষ করে হৃদরোগের ক্ষেত্রে এটি বেশি প্রয়োজ্য।
অনেকে সিগারেটের কম ক্ষতিকারক বিকল্প হিসাবে ই-সিগারেট ব্যবহার করেন। তবে এই পণ্যগুলো রক্তে শর্করাকেও বাড়াতে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। সিগারেটের মধ্যে থাকা রাসায়নিক নিকোটিন রক্তে শর্করাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। সিগারেটের রাসায়নিক পদার্থগুলো কোষসমূহকে আঘাত করে। পরবর্তীতে এটি প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। তখনই শরীর নিজেকে সুস্থ করার চেষ্টা করে। এই ধরনের ক্ষতি দেহের পক্ষে সঠিক উপায়ে ইনসুলিন ব্যবহার করাকে জটিল করে তোলে।
ঘন ঘন সিগারেট গ্রহণকারী ধূমপায়ীদের আরও ওজন বাড়তে পারে। এমনকি যদি ওজন বেশি নাও হয়, তবু পেটের ফ্যাট ইনসুলিন প্রতিরোধের এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে। ধূমপানের কারণে অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা সেমনÑ ‘খারাপ এলডিএল’ কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। একইভাবে ‘ভালো এইচডিএল’ কোলেস্টেরল হ্রাস পেতে পারে। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ট্রাইগ্লিসারাইডগুলোও বাড়ায়। এগুলো রক্তের মধ্যে এক ধরনের চর্বি।
সুতরাং, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য যেমনÑ জর্দা, গুল, সাদাপাতা অথবা বর্তমান সময়ে নতুন আমাদানি ই-সিগারেট বা ইলেকট্রনিক সিগারেট সবই ডায়াবেটিস রোগের যেমন কারণ হতে পারে, তেমনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও বাধা সৃষ্টি করতে পারে। সেই সঙ্গে অন্যান্য জটিল রোগ যেমনÑ হৃদরোগ, অন্ধত্ব ও নার্ভের সমস্যাসহ পায়ের পচনশীল রোগ গ্যাংগ্রিন হতে পারে। অতএব, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে যেমনÑ নিয়মিত ব্যায়াম, খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ ও জীবন যাপন পরিবর্তন করতে হবে। তেমনি ধূমপান ও তামাক জাতীয় সকল বস্তু জর্দা, গুল, সাদাপাতা জীবন থেকে বর্জন করতে হবে। এভাবেই ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ হবে। সেই সঙ্গে অন্যান্য অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকা যাবে।
ধূমপান ছেড়ে দিতে নিজের ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট। তবে অনেক ক্ষেত্রে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ প্রয়োজন হতে পারে। ধূমপান ত্যাগ করলে নিজেকে যেমন মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা যাবে, তেমনি পরিবার বা পারিপাশির্^ক জনসাধারণের জীবন ঝুঁকিমুক্ত থাকবে। তাই আজই ধূমপান ও তামাক ছাড়ুন।


লেখক : অধ্যাপক , একুশে পদকপ্রাপ্ত শব্দসৈনিক
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মানস- মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা,
অনারারি সিনিয়র কনসালটেন্ট, ডেন্টাল সার্জারি বিভাগ, বারডেম জেনারেল হাসপাতাল
[email protected]

×