ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১

উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং সংস্কৃতি

মিজানুর রহমান মিজান

প্রকাশিত: ২১:১৬, ১০ নভেম্বর ২০২৪

উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং সংস্কৃতি

.

র‌্যাগিং অর্থ পরিচিত হওয়া, তিরস্কার করা অথবা আবেগে কিছু করা ইত্যাদি। এছাড়াও র‌্যাগিং শব্দের প্রচলিত অর্থ হচ্ছে ‘পরিচয় পর্ব’। অর্থাৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুরনো শিক্ষার্থীদের একটি সুসম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য যে পরিচিতি প্রথা, সেটাকে র‌্যাগিং বলা হয়ে থাকে। বর্তমানে র‌্যাগিংকে ভয়াবহ ভাইরাসে রূপান্তর করেছে কিছু শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় হলো এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে উচ্চ শিক্ষা প্রদান করাসহ বিভিন্ন ধরনের গবেষণামূলক কাজ করা হয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া সৌভাগ্যের বিষয়। তবে, র‌্যাগিং শব্দটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্টদের সঙ্গে বিশেষভাবে জড়িত। বাংলাদেশে প্রায় প্রতিটি পাবলিক ভার্সিটিতে এবং মেডিক্যালে র‌্যাগিংয়ের প্রচলন রয়েছে। এছাড়া কিছু প্রাইভেট ভার্সিটিতেও র‌্যাগিং দেখা যায়। র‌্যাগিং সম্পর্কে অনেকেরই খারাপ ধারণা থাকে। আবার কেউ কেউ বিষয়টাকে ইতিবাচক ভাবেন। আজকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 
র‌্যাগিংয়ের বিভিন্ন ধরন রয়েছে। যেমন- পরিচয় দেওয়া, গান গাওয়া, নাচ করা, কবিতা আবৃত্তি, কৌতুক ইত্যাদি। এছাড়াও, রোদ্রে ক্যাম্পাসে দৌড়ানো, বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন রয়েছে। এছাড়া সিনিয়র আপুদের প্রপোজসহ বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন হয়ে থাকে। র‌্যাগিং সাধারণত একক কিংবা যৌথভাবে ঘটানো হয়ে থাকে। র‌্যাগিংয়ের উদ্দেশ্য সিনিয়র বা জুনিয়র শিক্ষার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা। কিন্তু কিছু কিছু সিনিয়র শিক্ষার্থী আছেন, যারা শাস্তিমূলক র‌্যাগিং দিয়ে থাকেন, যা কখনও কখনও শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে। র‌্যাগিংয়ের নামে অশ্লীল কথাবার্তা ও অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করতে কিংবা শুনতে হয় জুনিয়রদের, যা সহ্য করার ক্ষমতা সবার এক নয়। যার দরুন সবার সামনে লাঞ্ছনার শিকার হতে হয় জুনিয়রদের। র‌্যাগিং ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি লাঞ্ছনার শিকার হতে হয় মেয়েদের। তাদের অনেকের প্রাথমিক জীবনে নেমে আসে দুর্বিষহ অন্ধকার।
র‌্যাগিংয়ের ভালো দিকগুলোর পাশাপাশি কিছু ভয়াবহ দিকও রয়েছে। বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষাপটে বর্তমান সময়ে র‌্যাগিং এক আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে। কিছু সিনিয়র তাদের প্রভাব ফলাতে অনেক খারাপভাবে র‌্যাগ দিয়ে থাকে, যা কখনও কখনও নির্যাতনের পর্যায়ে চলে যায়। রাতের আঁধারে জুনিয়রদের গেস্টরুমে নিয়ে গিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও অঙ্গভঙ্গি করা, সেসবের ভিডিও ধারণ করাসহ বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক লাঞ্ছনাও করতে দেখা যায়। প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই কোনো না কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভয়াবহ র‌্যাগিংয়ের নির্মমতা দেখতে পাওয়া যায়। সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিং নিয়ে এক শিক্ষার্থীকে সারারাত মারধর ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠে এসেছে। তাছাড়া ২০১৯ সালে পুরো বাংলাদেশ র‌্যাগিংয়ের মর্মান্তিক রূপ দেখেছে আবরার ফাহাদের মৃত্যুতে। 
পশ্চিমা সংস্কৃতির রেশ ধরে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে মেডিক্যাল, প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে র‌্যাগিং ছড়িয়ে পড়েছে। র‌্যাগিং সম্পর্কে বিভিন্নজনের বিভিন্ন মত রয়েছে। কেউ কেউ র‌্যাগিংয়ের বিষয়টিকে ইতিবাচক ভাবেন। আবার অনেকেই এটিকে তীব্র ভয় ও ঘৃণা করে। অনেকের মতে, র‌্যাগিং কখনোই একটি স্বাধীন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলোর ভাবমূর্তি হতে পারে না। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনগুলোর র‌্যাগিং নির্মূলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে র‌্যাগিং নিষিদ্ধ করা উচিত। র‌্যাগিং সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়ররা তাদের জুনিয়রদের দিয়ে থাকে। যারা ভার্সিটিতে প্রথম ভর্তি হয়, তারাই সবচেয়ে বেশি র‌্যাগিংয়ের শিকার হয়। ভার্সিটির সিনিয়ররা পরিচয়পর্বের সময় তাদের জুনিয়রদের দিয়ে অনেক সময় গান গাওয়া, নাচ করা, আবৃত্তি করানো ইত্যাদি করে থাকে, যা অনেকে র‌্যাগিং হিসেবে ধরে নেয়। আবার কিছু ক্ষেত্রে র‌্যাগিং মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে চলে যায়। র‌্যাগিং যেমন আতঙ্কিত ঠিক, তেমনি আশীর্বাদস্বরূপও বটে। র‌্যাগিংয়ের মাধ্যমে সিনিয়রদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হয়। ক্লাসের সিট/হ্যান্ডনোট থেকে শুরু করে পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের গাইডলাইন, কীভাবে জড়তা থেকে বের হওয়া যায়, ক্যাম্পাসে সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা শেখানো, সবই এইসব সিনিয়রদের মাধ্যমেই পাওয়া যায়। সিনিয়রদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকলে যে কোনো বিপদ আপদে জরুরি প্রয়োজনে তাদের পাশে পাওয়া যায়। এছাড়াও চাকরিজীবনে প্রবেশের সিনিয়রদের সাহায্যের প্রয়োজন পড়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের জন্য এক ধরনের আশীর্বাদ। হলে থাকতে পারা শিক্ষার্থীদের জন্য একটা সৌভাগ্যের বিষয়। পড়ালেখার জন্য হল একটা দারুণ জায়গা। থাকা-খাওয়ার একটা কম খরচে বন্দোবস্ত হয় হলে। হল হচ্ছে দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার সূতিকাগার। হল হচ্ছে এক অন্য ধরনের বিদ্যাপিঠ। হলে শিক্ষার্থীদের আচার-আচরণের একটা প্রভাব পড়ে। বিভিন্ন ধরনের, বিভিন্ন এলাকার, বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে থাকার ফলে বৈচিত্র্যময় জীবনের অভিজ্ঞতা হয়। এই হল না পাওয়া অনেকের জন্য একটা কষ্টের বা দুঃখের কারণ যেমন হয়, তেমনি হল পাওয়াও অনেকের জন্য অভিশাপ হয়ে উঠতে পারে। হলে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় শিক্ষার্থীদের। বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মধ্যে এক বিরক্তিকর ও জঘন্যতম সমস্যার নাম হচ্ছে র‌্যাগিং। র‌্যাগিং কথার অর্থ দাঁড়ায় ছিন্নবস্ত্র। তবে হলে হলে এর অন্য কিছু নাম আছে। একে হলে পরিচিত হওয়া বা ম্যানার শেখানো বলা হয়। পরিচিত হওয়া বা ম্যানার শেখানো খুব ভালো কাজ। এতে দোষের কিছু নেই। ছোটরা বড়দের কাছ থেকেই শিখবে, এটাই স্বাভাবিক। সবার সঙ্গে সবার ভালো পরিচয় হবে, এটাও অতি স্বাভাবিক। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই পরিচিত হওয়া বা ম্যানার শেখানোর নাম করে নতুনদের ওপর করা হয় অত্যাচার। একটা মানুষ নতুন একটা জায়গায় এলে সে মানসিকভাবে এমনিতেই বিপর্যস্ত থাকে। সেই অবস্থায় তাকে নিয়ে মজা করা অত্যন্ত অপরাধের একটা কাজ। নতুনদের জোর করে সালাম দিতে বলা হয়। সালাম দেওয়া অনেক ভালো কাজ, কিন্তু সেটা কেন জোরপূর্বক করাতে হবে? আর কেউ যদি সালাম দিতে ভুল করে, তাহলে তাকে পেতে হয় শাস্তি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন নতুন ব্যাচ আসে, তখন ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন বিষয়ের প্রয়োজন পড়ে। নতুনদের সব সমস্যার সমাধান কিন্তু প্রশাসনের কাছে থাকে না। আর প্রশাসনের কাছে সব শিক্ষার্থী যেতেও পারে না। এ জন্য সবার অবশ্যই দরকার পড়ে অগ্রজদের সহযোগিতা। তাই অনুজ-অগ্রজ ভালো সম্পর্ক তৈরি হওয়া খুবই জরুরি বিষয়। এই সম্পর্ক তৈরির জন্য সিনিয়ররা হয়তো জুনিয়রদের ডাকে, তাদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করে। তবে অনেক ক্ষেত্রে পরিচয় পর্ব খারাপ দিকে গেলেও কিছু ক্ষেত্রে কিন্তু উদ্দেশ্য সৎ থাকে। সিনিয়ররা ভালোর জন্য ডেকে বিনা কারণে প্রশাসনের কাছে শাস্তি পেয়েছে, এমন ঘটনার নজিরও রয়েছে। এটা অবশ্য প্রসাশনের অন্য একটা টেকনিকও বলা চলে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরনোরা নতুনদের সঙ্গে কথা বলবে না এমন হতে পারে না। তাদের মধ্যে সুন্দর সখ্য গড়ে উঠবে, এমনটাই কাম্য। কিন্তু প্রসাশন সেটা চায় না। তারা চায়, ছাত্ররা তাদের আয়ত্তে থাকুক, যাতে কোনো বিষয়ে প্রতিবাদ করতে না পারে, কথা বলতে না পারে। নতুন ছাত্ররা প্রতিবাদী বা মুক্তমনা হয়ে উঠবে, এটা যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছেই কষ্টের। তাই নির্মূল করতে হবে দুই জায়গার সমস্যাই। ছাত্রদের কর্তৃক র‌্যাগিং নামের ভয়াবহ কালচার বন্ধ করতে হবে। আর অন্যদিকে প্রশাসন তাদের সব অনিয়ম ঢাকতে নতুনদের যে পুরনোর সঙ্গে মিশতে দেয় না, তাও বন্ধ করতে হবে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের সংস্কৃতির সঙ্গে র‌্যাগিং শব্দটি ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। তা না হলে আজ হয়তো আমাদের মাঝে বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ বেঁচে থাকত। ইউরোপিয়ানরা সর্বপ্রথম র‌্যাগিং সম্পর্কে ধারণা দেয়। তাদের কাছে র‌্যাগিং বা র‌্যাগ ডে ছিল বিশেষ আনন্দঘন একটি দিন। ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় র‌্যাগিং ইতিবাচক অর্থে ব্যবহার হলেও, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতিতে র‌্যাগিং একটি নেতিবাচক ধারণা। নবাগত তরুণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ভয় ও ত্রাস সৃষ্টির জন্য প্রবীণ শিক্ষার্থীরা র‌্যাগিংয়ের চর্চা করেন। কিন্তু এ ভয় ও ত্রাস কখনো কখনো নবীন শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। আবার কখনো মানসিক সমস্যার জন্ম দেয়। অথবা কখনো তাজা এবং তরুণ শিক্ষার্থীদের আকাশচুম্বী স্বপ্ন চুরমার করে দেয়। গণতান্ত্রিক দেশে এমন কোনো শক্তি নেই কারোর স্বপ্নে আগুন জ্বালানোর। তবুও এই গণতান্ত্রিক দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠগুলোতে এ রকম অগণতান্ত্রিক ও অপসংস্কৃতির চর্চা হচ্ছে। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে র‌্যাগিং নামের ভাইরাস থেকে তরুণ শিক্ষার্থীদের মুক্তির লক্ষ্যে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
র‌্যাগিং আসলে একটি সংক্রামক ব্যাধির মতো হয়ে গেছে। এটা এখন শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের গ-িতে সীমাবদ্ধ নয়। এই প্রথা ছড়িয়ে গেছে স্কুল-কলেজেও। নতুন কেউ এলে তাকে ধরে যাচ্ছেতাই আচরণ করাই হচ্ছে র‌্যাগদাতাদের মূল উদ্দেশ্য। নতুন ছাত্রদের ‘মুরগি’ বলে আখ্যা দেওয়া হয় এই র‌্যাগিংয়ের ক্ষেত্রে। একটা মুরগি দেখলেই শিয়াল যেমন ঝাঁপিয়ে পড়ে, তেমনি ঝাঁপিয়ে পড়ে র‌্যাগদাতারা। র‌্যাগিং আবার বংশপরম্পরায় প্রবাহিত হতে থাকে বছরের পর বছর। যারা এক বছর প্রচুর র‌্যাগের শিকার হয়, তারা আবার পরের বছরের জন্য অপেক্ষা করে র‌্যাগ দেওয়ার জন্য। এই অপেক্ষা যেন এক পৈশাচিক আনন্দের। কখন আসবে সেই সুদিন, কখন আসবে নতুন ছাত্ররা। এ এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা। একে অপরের চেয়ে বেশি র‌্যাগ দেওয়ার লড়াই লেগে যায়। কে কত বেশি ভয়ানক র‌্যাগ দিতে পারে, তা নিয়েও থাকে নানা যুদ্ধ। এমনকি যারা জীবনে র‌্যাগের শিকার হয়নি কিংবা র‌্যাগের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলেছে, শিক্ষকদের কাছে র‌্যাগ দিয়েছে, তারা আগ্রহ দেখায় র‌্যাগের জন্য। তাদের র‌্যাগ দেওয়ার ধরনও থাকে ভয়ানক। র‌্যাগিংয়ের আরেকটা দিক হচ্ছে প্রভাব খাটানো। অনেক সিনিয়ররা র‌্যাগ দেওয়ার জন্য জুনিয়রদের ডাকে না। ডাকে নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য। যারা রাজনীতি করে, তারা নিজের দল ভারী করার জন্য জুনিয়রদের ডেকে নানা ধরনের কথা শোনায়। দলে বাগানোর জন্য প্রলোভন দেয়।
র‌্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসনের উচিত কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা। যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার জন্য হওয়া উচিত, সেখানে র‌্যাগিংয়ের মতো অপসংস্কৃতি কখনই গৃহীত হতে পারে না। প্রশাসনের উচিত নবাগত শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সমর্থনমূলক পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে তারা শোষণ ও নির্যাতনের শিকার না হয়ে স্বাধীনভাবে তাদের শিক্ষাজীবন শুরু করতে পারে। র‌্যাগিং একটি গুরুতর সমস্যা, যা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সার্বিক পরিবেশকে ক্ষুণ্ণ করে। এর প্রতিকার করা জরুরি, যাতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার মৌলিক উদ্দেশ্য অনুসরণ করতে পারে এবং একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে র‌্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতের প্রজন্ম এই অপসংস্কৃতির শিকার না হয়।

 লেখক : সাংবাদিক 

×