ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১

অর্থনীতিতে নোবেল ॥ প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তরই মুখ্য বিষয়

ড.মিহির কুমার রায়

প্রকাশিত: ২১:২০, ৫ নভেম্বর ২০২৪

অর্থনীতিতে নোবেল ॥ প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তরই মুখ্য বিষয়

অর্থনীতিতে নোবেল

স্টকহোমে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস ১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ড্যারন আসেমোগলু, সাইমন জনসন ও জেমস এ. রবিনসনকে আলফ্রেড নোবেলের স্মরণে ২০২৪ সালের অর্থনীতি বিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে। ড্যারন আসেমোগলু ১৯৬৭ সালে তুরস্কের ইস্তানবুলে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯২ সালে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস থেকে পিএইচডি লাভ করেন এবং বর্তমানে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছেন।

সাইমন জনসনের জন্ম ১৯৬৩ সালে যুক্তরাজ্যের শেফিল্ডে। ১৯৮৯ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে পিএইচডি লাভ করেন এবং বর্তমানে সেখানেই অধ্যাপনা করছেন। আর ব্রিটিশ নাগরিক জেমস এ. রবিনসনের জন্ম ১৯৬০ সালে। তিনি ১৯৯৩ সালে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি লাভ করেন। বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোতে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
এখন পর্যন্ত টিকে থাকা বিশ্বের প্রাচীনতম ব্যাংক ‘সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক’-এর ৩০০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ১৯৬৮ সালে আলফ্রেড নোবেলের স্মৃতি স্মরণে এ পুরস্কার চালু করা হয়। সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ পুরস্কারের তহবিল জোগান দেয় এবং নোবেল ফাউন্ডেশন এ পুরস্কার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে থাকে। ১৯৬৯ সালে ডাচ অর্থনীতিবিদ জ্যান টিনবার্গেন ও নরওয়েজিয়ান অর্থনীতিবিদ রাগনার ফ্রিশকে ‘অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ ও প্রয়োগের গতিশীল মডেল তৈরির জন্য’ প্রথম পুরস্কার প্রদান করা হয়। সর্বশেষ গত বছর ২০২৩ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পান আমেরিকান অর্থনীতিবিদ ক্লডিয়া গোল্ডিন।

গোল্ডিনকে ‘নারী শ্রম বাজারের ফলাফল সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়া বাড়ানোর জন্য’ নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। তিনি তৃতীয় নারী হিসেবে অর্থনীতিতে পুরস্কার জিতেন। ১৯৬৯ সাল থেকে সম্মানিত ৯৩ জন বিজয়ীর মধ্যে মাত্র তিনজন মহিলা ২০২৪ সালে গোল্ডিন, ২০০৯ সালে তার স্বদেশী এলিনর অস্ট্রম ও ২০১৯ সালে ফরাসি-আমেরিকান এসথার ডুফ্লো। ২০২৪ সালে নোবেল কমিটি বলেছে, তাদের গবেষণার বিষয় ছিল ‘কীভাবে প্রতিষ্ঠান গঠিত হয় এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে’। উল্লেখ্য, ‘প্রতিষ্ঠান’ বলতে সাধারণত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, যেমনÑ আইনের শাসন, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ, বাক্স্বাধীনতা, নাগরিকদের স্বাধীন মতামত, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি, সরকারের কার্যকারিতা প্রভৃতিকে বোঝায়। একটি দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য এই প্রতিষ্ঠানগুলোর অবদান অপরিসীম।
এ তিন অর্থনীতিবিদের গবেষণা জাতিগুলোর মধ্যে সমৃদ্ধির পার্থক্য বোঝাতে সহায়ক হয়েছে। তারা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন, যা কোনো দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা প্রমাণ করেছেন, দুর্বল আইন এবং জনসংখ্যাকে শোষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়ন বা পরিবর্তন সৃষ্টি করতে পারে না। কেন এ ধরনের পরিস্থিতি ঘটে, তা বুঝতে আমাদের সাহায্য করে তাদের গবেষণা। তারা ব্যাখ্যা করেছেন সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য কেন এবং ইউরোপীয় উপনিবেশ দেশগুলোর মধ্যে প্রবর্তিত বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করেন  দুই অর্থনীতিবিদ এবং তৃতীয়জন  ব্যাখ্যা করেন প্রতিষ্ঠান ও সমৃদ্ধির মধ্যে ব্যবধানগুলো।

তারা তাত্ত্বিক উপাদানগুলো ব্যাখ্যা করেছেন, কেন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য বজায় থাকে এবং কীভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পরিবর্তন আনতে পারে। বিশ্বের কোন্্ দেশ  কেন গরিব এবং কিছু দেশ কেন ধনী, তার সফল ব্যাখ্যা করেছেন। তাদের মূল কথা হলো, একটি দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান সে দেশের সাফল্য বা ব্যর্থতার প্রধান নির্ধারক। টেকসই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের অবদান নিয়ে তেমন বিতর্ক নেই। কিন্তু নোবেল কমিটি এই অর্থনীতিবিদদের কোন্্ অবদানকে বিশেষ স্বীকৃতি দিল বা হাইলাইট করল, তার কিছু অংশ নিয়ে বেশ বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

যে বিষয় নিয়ে বেশি বিতর্ক, তা হলো নোবেল কমিটি হাইলাইট করেছে যে, নোবেল বিজয়ীরা দেখিয়েছেন, ঔপনিবেশিকতা, উন্নত প্রতিষ্ঠান ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। বলা হচ্ছে, উপনিবেশকারীরা তাদের উপনিবেশ স্থাপন করা যেসব দেশে মানসম্পন্ন ঔপনিবেশিক প্রতিষ্ঠান রেখে এসেছে, সেসব দেশের টেকসই উন্নতিতে ঔপনিবেশিক প্রতিষ্ঠান উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। নোবেল কমিটি এই বিশ্লেষণকে নোবেল বিজয়ীদের বড় অবদানের মধ্যে একটি বলে উল্লেখ করেছেন। 
কিন্তু সত্যিকার অর্থে এ দাবি কতটা যৌক্তিক? উপনিবেশের ইতিহাস সম্পর্কে সংক্ষেপে বলা যাক। প্রথমত, আমাদের জানতে হবে, কেন ব্রিটিশ, স্প্যানিশ, পর্তুগিজ ও ফরাসিরা বিভিন্ন দেশে তাদের উপনিবেশ স্থাপন করেছিল? এর জবাবে বলা যায়, অর্থনৈতিক স্বার্থ (সম্পদ আহরণ ও বাণিজ্য), রাজনৈতিক উচ্চাকাক্সক্ষা (বিশ্বব্যাপী প্রভাব ও সামরিক শক্তি সম্প্রসারণ) এবং সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় প্রেরণা (খ্রিস্টধর্ম ও ইউরোপীয় সভ্যতার প্রসার) ইউরোপীয় উপনিবেশ সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা মোটেই তাদের এজেন্ডার অংশ ছিল না।
নোবেল কমিটি বলছে, নোবেল বিজয়ীরা দেখিয়েছেন, যে অঞ্চলগুলো উপনিবেশের সময় সমৃদ্ধ ছিল, সেগুলোয় উপনিবেশকারীরা অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান গঠন করতে পারেনি। ফলে, পরবর্তী সময়ে ওই অঞ্চলগুলো দরিদ্র হয়েছে। কিন্তু উপনিবেশ স্থাপনের সময় তুলনামূলক দরিদ্র অঞ্চলগুলোয় উপনিবেশকারীরা অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেছে। আর এই প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে সে অঞ্চলগুলোয় সমৃদ্ধি এসেছে। অর্থাৎ উপনিবেশকারীদের কল্যাণে দরিদ্র অঞ্চলে সমৃদ্ধি এসেছে। কিন্তু সমৃদ্ধ অঞ্চলে যেহেতু উপনিবেশকারীরা প্রতিষ্ঠান গঠনে অবদান রাখতে বাধাগ্রস্ত হয়েছে, তাই সেই অঞ্চলগুলো টেকসই উন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। প্রকারান্তরে বলা হচ্ছে, ঔপনিবেশিক দেশগুলোয় টেকসই অর্থনৈতিক উন্নতিতে উপনিবেশকারীদের বিশেষ অবদান রয়েছে।
এ ক্ষেত্রে নোবেল কমিটি নোবেল বিজয়ীদের দেওয়া একটি উদাহরণকে কাজে লাগিয়েছে। স্প্যানিশ উপনিবেশের দুটি অঞ্চল আমেরিকা ও মেক্সিকো। দেখা যাচ্ছে, উপনিবেশের সময়ে কম উন্নত আমেরিকা অংশ, একই সময়ের বেশি উন্নত মেক্সিকো অংশের চেয়ে বর্তমানে বেশি সমৃদ্ধ। এতে অবদান নাকি ঔপনিবেশিক প্রতিষ্ঠানের। বাস্তবে কি সেটা সত্য? এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ উপনিবেশের সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশের কয়েকটি অঞ্চলের উদাহরণ দেওয়া যাক। ব্রিটিশরা কলকাতায় তাদের রাজধানী স্থাপন করেছিল। ১৯১১ সালে ব্রিটিশরা তাদের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত করে। এ সময় দিল্লি কলকাতার চেয়ে উন্নত। কিন্তু এর সঙ্গে ব্রিটিশরাজের তথাকথিত অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠানের তেমন কোনো ভূমিকা লক্ষ্য করা যায় না।

অন্যদিকে ১৯০৫ সালের পর পূর্ব বাংলা ও অসম প্রদেশের রাজধানী হিসেবে ঢাকা ব্রিটিশরাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ও শিক্ষাকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। এখন আমরা যদি ঢাকা, কলকাতা ও দিল্লির মধ্যে তুলনা করি, তবে তথাকথিত ঔপনিবেশিক অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠানের অবদান কোথাও পরিলক্ষিত হয় না। প্রকৃতপক্ষে উপনিবেশ পরবর্তী দুটি দেশের ভিন্ন ভিন্ন নীতিনির্ধারণ এই অঞ্চলগুলোর সমৃদ্ধি বা অবনতির জন্য দায়ী। তবে তাই বলে বিজয়ীদের নোবেল পাওয়া অযৌক্তিক হয়ে যায় না। ‘ধনী দেশগুলো কেন ধনী, আর গরিব দেশগুলো কেন গরিব’, তার ওপর তাদের গবেষণা এবং এর ফলাফল অত্যন্ত চমকপ্রদ।

একটা দেশের সমৃদ্ধির জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাকে তারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। আর অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান মানে হলো রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থায় সব শ্রেণির লোককে অন্তর্ভুক্ত করা। সমাজের সব শ্রেণিপেশার লোকের জন্য কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা। নোবেল বিজয়ীরা তাদের গবেষণায় আরও পেয়েছেন, ‘নিষ্কাশনমূলক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান’ (এক্সট্রাকটিভ ইকোনমিক ইনস্টিটিউশনস) সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে সমাজের অভিজাত শ্রেণিকে আরও অভিজাত বানায়। এতে একশ্রেণির লোকের সমৃদ্ধি এলেও পুরো সমাজ বঞ্চিত হয় এবং দরিদ্র থাকে।
এ ধারণা বাংলাদেশের জন্যও প্রযোজ্য। বাংলাদেশেও একশ্রেণির মানুষের জন্যই সমাজের সব সুযোগসুবিধা তৈরি হয়। আর সেই শ্রেণি হলো ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের লোকজন। যেমনটি নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ রবিনসন বলেন, উন্নতির জন্য দরকার অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের মধ্যে রাজনৈতিক ক্ষমতা বণ্টন। সেটি বাংলাদেশে হয়নি। এখানে ক্ষমতার একচেটিয়াকরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশেও টেকসই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি হওয়া দরকার।

বাংলাদেশের উচ্চ গড় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে মানসম্পন্ন অবকাঠামোতে সরকারকে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নকে গতিশীল করতে অবকাঠামো বিনিয়োগ করে দেশের রাস্তা, সেতু, বাঁধ এবং অন্যান্য অবকাঠামো মেরামত বা নির্মাণ করতে হবে। যেমন- নৌবন্দর ও বিমানবন্দর। বিনিয়োগের জন্য বিদ্যমান এবং সম্ভাব্য আর্থিক সংস্থাগুলোকে আরও ভালোভাবে কাজে লাগাতে হবে। ডিজিটাল এবং পরিবেশ পরিকাঠামোতে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং সব স্তরে পাবলিক বিনিয়োগ ভালো ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আরও স্মার্টভাবে করতে হবে।

শহর এবং গ্রামের রক্ষণাবেক্ষণ, কম কার্বন বিল্ডিং, শক্তি দক্ষতা, বর্জ্য এবং পরিবেশবান্ধব গণপরিবহনে নতুন বিনিয়োগ প্রয়োজন। ভালো সমন্বয় সংকট ব্যবস্থাপনা ব্যর্থতার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। সরকারের সব স্তর ও মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টা সংকট-ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা হ্রাস করতে পারে। অর্থনীতির উন্নয়নের গতিধারাকে এগিয়ে নিতে সব ব্যবসার মালিক, পরিষেবা প্রদানকারী, শিক্ষক ও অভিভাবক এবং সুশীলসমাজসহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে সরকারের পর্যাপ্ত ও সময়োপযোগী পরামর্শ নিশ্চিত করাও গুরত্বপূর্ণ। অর্থনীতি অঞ্চলগুলো দেশের সর্বত্র বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। দেশকে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত করতে হবে। শহর, ছোট শহর, গ্রামে বিভাজন কমিয়ে আনতে হবে।

কৌশলগত শিল্প পুনঃস্থাপনের সঙ্গে যুক্ত সুযোগগুলো বিবেচনা করা যেতে পারে। অতিক্ষুদ্র, কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, বৃহত্তর শিল্পের ফরোয়ার্ড ও ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজকে শক্তিশালী করা, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং গ্রামীণ ও শহরে বসবাসকারীদের মাঝে বৈষম্য হ্রাস করার লক্ষ্যে আগামী শিল্পনীতি প্রণয়ন করতে হবে। অগ্রাধিকারমূলক খাতগুলোয় নীতি সহায়তা, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আয়ত্তকরণের প্রযুক্তি, দক্ষতা উন্নয়ন ও করোনা বা দুর্যোগ মোকাবিলায় টেকসই দিকনির্দেশনা দেওয়ার বিষয়টি নতুন জাতীয় শিল্পনীতিতে গুরুত্ব দিতে হবে। গ্রিন এনার্জিতে বিনিয়োগ করতে হবে।

বাংলাদেশের এখনই সময় জলবিদ্যুৎ, সৌরশক্তিসহ অন্যান্য পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে বিশেষ বিনিয়োগ করা। অর্থনৈতিক গতিধারাকে এগিয়ে নিতে হলে শান্তি, ন্যায়বিচার ও শক্তিশালী রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান গঠন করতে হবে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল কাজে লাগাতে হলে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতাকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।
 
লেখক : গবেষক ও শিক্ষাবিদ

×