ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১

রূপান্তর ঘটেছে শাহজালালে

প্রকাশিত: ২০:২৯, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

রূপান্তর ঘটেছে শাহজালালে

সম্পাদকীয়

প্রায় রাতারাতি বদলে গেছে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সার্বিক সেবার মান। অথচ কিছুদিন আগেও এই বিমানবন্দর ব্যবহারকারী অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটের যাত্রীদের অভিযোগের অন্ত ছিল না। বাস্তবে দেশব্যাপী সংঘটিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অন্যতম দাবি সর্বত্র সংস্কার কর্মসূচির ছোঁয়া লেগেছে শাহজালাল বিমানবন্দরেও। বহির্গমন ও অভ্যন্তরীণ যাত্রীরা এখন বিমান থেকে অবতরণ করে খুব সহজেই পাচ্ছেন কাক্সিক্ষত সেবা- তা সে হোক না কেন বিমানবন্দরের কর্মী অথবা প্রযুক্তিগত সুবিধা। যেমন- এখন হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় যাত্রীদের লাগেজ বহনের ট্রলি, একই সঙ্গে লোডার বা পোর্টারের আন্তরিক সেবা।

ফলে একজন যাত্রী খুব সহজে বিপুল পরিমাণের লাগেজ নিয়ে টার্মিনাল থেকে একেবারে চলে যেতে পারেন রাস্তা পর্যন্ত কার পার্কিং এলাকায়। সময়মতো লাগেজ পেতেও সমস্যা হয় না। এর পাশাপাশি বিআরটিসির সৌজন্যে নামমাত্র ভাড়ায় পাওয়া যাচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শাটল বাস সার্ভিস। বিনামূল্যে টেলিফোন, ইন্টারনেট, ওয়াইফাই সেবা ইত্যাদি। সর্বোপরি প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য অচিরেই চালু হতে যাচ্ছে ভিআইপি লাউঞ্জ, যাতে তারা প্রকৃত একজন রেমিটেন্স যোদ্ধার সম্মান ও মর্যাদা পান। এর ফলে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণা ও দুর্ভোগ অনেকাংশে লাঘব হবে। 
উল্লেখ্য, শাহজালাল বিমানবন্দর গত বছর এক কোটি ১৭ লাখ যাত্রীকে সেবা দিয়েছে। চলতি বছরের শেষে এবং থার্ড টার্মিনাল চালু হলে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। এই বিমানবন্দরের মাধ্যমে প্রতিবছর প্রায় ৯৫ লাখ আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ রুটে প্রায় ২৫ লাখ যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন। দিন দিন চাহিদা বাড়তে থাকায় আরও বাড়ানো হচ্ছে ফ্লাইটের সংখ্যা। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ ৪০টি এয়ারলাইন্স ও অন্যান্য সংগঠনের সমন্বয় করে শাহজালাল বিমানবন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা যাত্রীসেবা নিশ্চিত করেছেন, যা দেশের জন্য বয়ে আনছে সুনাম। চাহিদা, সময় ও যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হযরত শাহজালালের সেবার মান যে আরও বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত হবে একদিন, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। 
বাংলাদেশ বিমানের জনপ্রিয় থিম হলো আকাশে শান্তির নীড়। এর মাধ্যমে আকাশ ভ্রমণে শুধু আরামদায়ক সুব্যবস্থাই বোঝায় না, একই সঙ্গে সার্বিকভাবে সর্বোচ্চ মানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টিও বোঝায়। বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানে উড়োজাহাজের সংখ্যা ২১টি। এর মধ্যে তিনটি লিজকৃত। তবে বিমানের লাভ-লোকসান নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। এর অবসান হওয়া দরকার। এর পাশাপাশি বিমান এবং বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত করা জরুরি ও অত্যাবশ্যক।

সে অবস্থায় ঢাকায় আন্তর্জাতিক মানের বিমান হাব প্রতিষ্ঠা, এয়ারবাস ক্রয়সহ বাংলাদেশ বিমানকে পেশাদারিত্বের ভিত্তিতে পরিচালিত করতে না পারলে সুফল পাওয়ার প্রত্যাশা কম। সম্প্রতি স্থাপিত অত্যাধুনিক রাডার সিস্টেম এ ক্ষেত্রে যোগ করেছে নতুন মাত্রা, যার মাধ্যমে লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ বিমান। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের সার্বিক যাত্রীসেবার মান আরও আধুনিক ও উন্নত হলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও ছড়িয়ে পড়বে আন্তর্জাতিক পরিম-লে।

×