ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১

খোঁড়াখুঁড়ি-খানাখন্দে দুর্ভোগ

-

প্রকাশিত: ২১:১৫, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

খোঁড়াখুঁড়ি-খানাখন্দে দুর্ভোগ

সম্পাদকীয়

ঢাকার উভয় সিটিতে সড়কের অবস্থা গর্ত ও খানাখন্দে বেহাল। তদুপরি রয়েছে যখন তখন যত্রতত্র খোঁড়াখুঁড়ি। ফলে, নাগরিকদের দুর্ভোগ উঠেছে চরমে। ঢাকা উত্তর সিটির আওতাধীন অনেক এলাকার সড়ক ও অলিগলি খোঁড়াখুঁড়ি-কাটাকাটি কিংবা খানাখন্দের কারণে এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কোথাও সড়ক সংস্কারের কাজ করছে খোদ সিটি করপোরেশন।

কোথাও আবার ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহের সংযোগ স্থাপন এবং অন্যান্য সেবা সংস্থার উন্নয়ন কাজের জন্য কেটে রাখা হয়েছে সড়ক। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অনেক এলাকার সড়কের পিচ উঠে খানাখন্দ  তৈরি হয়েছে। মোহাম্মদপুর এলাকার বেশিরভাগ সড়কে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু হয় এ বছরের শুরুতে। সেখানকার বিভিন্ন সড়কের নিচ দিয়ে নালা নির্মাণের জন্য পাইপ বসাচ্ছে সিটি করপোরেশন।

আবার কিছু সড়কে ঢাকা ওয়াসা বসাচ্ছে পানির পাইপ। কিছু সড়ক কাটা হয়েছে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপনের লাইন বসাতে। ফলে, পুরো মোহাম্মদপুর এলাকার বেশিরভাগ সড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে মানুষ।
বর্ষা মৌসুমে সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না বলে ‘ঢাকা মহানগরীর সড়ক খনন নীতিমালায়’ উল্লেখ করা হয়েছে। একান্ত প্রয়োজনে খোঁড়াখুঁড়ি করা হলে অতিরিক্ত ফি জমা দিতে হবে। এ ছাড়াও খননকৃত সড়কে গর্ত বালি দ্বারা যথাযথভাবে ভরাট ও নিñিদ্র করতে হবে। বালি ভরাটকৃত গর্তের ওপর ইটের সোলিং দিয়ে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে দিতে হবে।

কাজ শেষে খননকৃত সড়কের আশপাশ ধুয়ে মুছে যথাযথভাবে পরিষ্কার করে দিতে হবে, যাতে দৃশ্যত রাস্তাটিতে কাজ শুরুর আগে যে অবস্থায় ছিল, তেমন করে দেওয়া হয়। তারপরও প্রতিটি বর্ষায় আমরা রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি চলতে দেখি। আইনের ফাঁক গলিয়ে এসব হয় নাকি অবৈধভাবে হয়, তা খতিয়ে দেখা চাই। 
ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রকৌশল বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী এলাকার সড়কের অবস্থা এখন বেহাল। এর মধ্যে টিকাটুলীর মোড় থেকে যাত্রাবাড়ী মোড় পর্যন্ত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়ালসড়কের নিচের অংশের অবস্থা খুবই খারাপ। সেখানে সড়কে একটু পরপর বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চলতে না পারায় লেগেই থাকছে যানজট।

পুরান ঢাকার জুরাইন রেলগেট থেকে দয়াগঞ্জ মোড় পর্যন্ত সড়কের দৈর্ঘ্য আড়াই কিলোমিটারের কিছু বেশি। গে-ারিয়া নতুন রাস্তা হিসেবে পরিচিত এ সড়কের প্রায় পুরোটাই উঁচু-নিচু। কোথাও বড় গর্ত, কোথাও পিচ উঠে গেছে, কোথাও দেবে গেছে। দুই বছর ধরে এ অবস্থা। 
বর্ষাকালে খোঁড়াখুঁড়ি পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হবে। কোথাও রাস্তা খুঁড়তে হলে ঢাকা ওয়াসা, ডিপিডিসি, ডেসকো, সিটি করপোরেশন, বিটিসিএল, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিÑ এসব সংস্থার সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করে উপযুক্ত সময়ে খনন কাজে হাত দেওয়া চাই। সেটি কোনোক্রমেই বছরে একবারের বেশি নয়।

জনদুর্ভোগ লাঘব ও সরকারি টাকা অপচয় রোধে বর্ষায় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে। আশার কথা এই যে, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ নগর কর্তৃপক্ষকে জরুরি ভিত্তিতে সড়কের খানাখন্দ ভরাটসহ সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছেন। নভেম্বর থেকে এসব সংস্কার কাজের সুফল পেতে পারেন ঢাকাবাসী।

×