ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা

প্রকাশিত: ২০:১৮, ১২ অক্টোবর ২০২৪

বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা

সম্পাদকীয়

আজ বিজয়া দশমী। অশ্রুসজল নয়নে ভক্তবৃন্দ বিদায় জানাচ্ছেন দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে। রবিবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় আয়োজন শারদীয় দুর্গোৎসব। দেবীদুর্গা ফিরে যাবেন কৈলাসে। মহালয়ার মধ্য দিয়ে যে দেবীপক্ষের সূচনা হয়েছিল, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ঘটেছে তার সমাপণ। আগামী শরতে আবার ফিরে আসবেন আনন্দময়ী দেবীদুর্গা বাঙালি হিন্দুর ঘরে ঘরেÑ এমন প্রত্যাশা নিয়েই মাকে বিদায় জানাবেন অগণিত ভক্ত।

এবারও রামকৃষ্ণ মিশন ও ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজাম-প পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধান, ধর্ম ও অন্যান্য উপদেষ্টা এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন সবার সঙ্গে। ধর্ম যার যার, উৎসব সবারÑ এই অধিকার নিশ্চিত করেছে সরকার। দেশে যথারীতি ধর্মীয় সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি বজায় রয়েছে। সাড়ম্বরে দুর্গোৎসব পালনের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও কল্যাণময় অবস্থানের বিকাশ আরও বিস্তৃত এবং বিকশিত হয়। উপরন্তু অশুভ শক্তির পরাজয় ঘটিয়ে মঙ্গলদায়ক, শুভশক্তি ও ইতিবাচক চেতনার সম্প্রসারণ ঘটে। পূজায় এবার দেশের কোথাও বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। 
অসুরকুলের দলপতি মহিষাসুরকে বধ করে দেবকুলকে রক্ষা করেছিলেন দুর্গতিনাশিনী দুর্গা। সেই থেকে বিজয় ঘটে শুভশক্তির। দেবীর আগমন ঘটে অন্যায়ের বিনাশ ঘটিয়ে সজ্জনদের প্রতিপালনের অঙ্গীকার নিয়ে মানুষের মধ্যে নৈতিক আদর্শ জাগ্রত করার জন্য। মানুষের চিত্ত থেকে যাবতীয় দীনতা ও কলুষতা দূরীভূত করার জন্য। এ জন্য দুর্গোৎসব ধর্মীয় উৎসব হলেও তা পরিণত হয়েছে সর্বজনীন উৎসবে। সম্প্রদায়গত বিভেদের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষকে এক পরম আনন্দের সোপানে দাঁড় করিয়েছে শারদোৎসব।

শারদীয় দুর্গোৎসব সবার জন্য উন্মুক্ত। দেবীদুর্গার আগমনী আনন্দকে সবাই ভাগাভাগি করে নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। কারণ, বাঙালি জাতি নিরন্তর উৎসবমুখর পথে চলতে পছন্দ করে। এই পছন্দের স্রোতধারায় গত কদিন ভিন্ন আমেজ ও ভিন্নতর সুবাতাস বয়ে গেছে দেশজুড়ে।
মঙ্গলদাত্রী দেবী দুর্গার আগমন ঘটে কল্যাণ ও শান্তি সংস্থাপনের জন্য। তিনি শুভ ও ন্যায়ের উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে যান সবাইকে। এ বছর মা দুর্গার আগমন ঘটেছে দোলায়Ñফল মড়ক। প্রস্থান ঘটেছে ঘোটক বা ঘোড়ায়Ñ ফল অশুভ, অস্থিরতা, ছত্রভঙ্গ। তা সত্ত্বেও মার কাছে সব ভক্তের আকুল প্রার্থনাÑ করোনা-ডেঙ্গু অতিমারিসহ সকল প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে দেশ ও বিশ্ববাসীকে যেন তিনি রক্ষা করেন। বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন অটুট থাকে। দূর হয় সব সংকীর্ণতা ও বিভেদÑ মা যেন সেই শক্তি ও সৌহার্দ্য সবার হৃদয়ে ও মনে জাগ্রত করেন।

×