ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

পূজা হোক নির্বিঘ্ন নিরাপদ 

-

প্রকাশিত: ২০:৩৪, ৮ অক্টোবর ২০২৪

পূজা হোক নির্বিঘ্ন নিরাপদ 

সম্পাদকীয়

শারদীয় দুর্গাপূজাকে নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্যাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। এর পাশাপাশি পূজা উদ্যাপনকারীদের নিরাপত্তা বিষয়ে কিছু পরামর্শও দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। বাস্তবমুখী এসব পরামর্শের ভেতরে রয়েছেÑ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব অথবা ব্লগ ইত্যাদি এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী অমূলক ঘটনা বা গুজব সৃষ্টি করে কিংবা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক শান্তি যাতে বিনষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্কতা।

এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হলে পুলিশকে জানানো; মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা ও অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র স্থাপন; গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে আর্চওয়ে গেট স্থাপন; পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ; স্বেচ্ছাসেবকদের আলাদা পোশাক, দৃশ্যমান পরিচয়পত্র ও ‘স্বেচ্ছাসেবক’ লিখিত আর্মড ব্যান্ড প্রদান ইত্যাদি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, পূজাম-পে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। দুর্গাপূজা এবার ভালোভাবে নির্বিঘেœ এবং শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হবে। দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অবসান চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। শারদীয় দুর্গাপূজা সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাঙচুর এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাম্প্রদায়িক উস্কানির ঘটনায় ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে স্মারকলিপিতে।

জনকণ্ঠের রিপোর্ট অনুযায়ী দেশের ৩২ হাজার ৬৬৬টি ম-পে চলছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি। রাজধানীসহ দেশের সব শপিংমলে জমে উঠেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজার শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। রাজধানীতে দুর্গোৎসবকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে চলছে ব্যাপক সাজসজ্জা। অধিকাংশ মণ্ডপের কারিগররাই ইতোমধ্যে শেষ করেছেন প্রতিমা তৈরির কাজ। আজ বুধবার মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে শুরু হবে মায়ের বোধন। 
পুলিশ কমিশনার সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপূজা চলাকালে এবং প্রতিমা বিসর্জনে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুর্গাপূজার সময় সংশ্লিষ্ট বাহিনীর পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশের পাশাপাশি সোয়াত, ক্রাইসিস রেসপন্স টিম, কুইক রেসপন্স টিম, ক্রাইম সিন ভ্যান ও বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সবসময় প্রস্তুত থাকবে। কতিপয় ধর্মান্ধ দুষ্কৃতকারীর দ্বারা দেশের কোনো কোনো মন্দিরে ও পূজাম-পে ইতোমধ্যে বিচ্ছিন্ন কিছু হামলার ঘটনা ঘটেছে। এটাও সত্য যে, হাজার বছর ধরে নানা জাতি-ধর্মের মানুষ এই ভূখ-ে শান্তিপূর্ণভাবে মিলেমিশে বসবাস করে আসছে।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এ দেশের সুমহান ঐতিহ্য। এবার পূজার সময় পূজা ম-পগুলোতে সার্বক্ষণিকভাবে সিসিটিভি সক্রিয় রাখার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে যে আহ্বান জানানো হয়েছে, সেটি তারা নিশ্চিত করবেন, এমনটাই প্রত্যাশা। আমরা মনে করি, প্রতিটি  ম-পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সার্বক্ষণিক তদারকি থাকার বিষয়টি অতীব গুরুত্বর্পূণ। স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীতে দল মত ধর্ম পরিচয়ের ঊর্ধ্বে ওঠে সর্বস্তরের তরুণদের সম্পৃক্ততা এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। তাই এখনই এমন উদ্যোগ গ্রহণ আবশ্যক।

×