ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

অভিবাসন হোক নিরাপদ

ওবায়দুল কবির

প্রকাশিত: ২০:৪১, ৫ অক্টোবর ২০২৪

অভিবাসন হোক নিরাপদ

অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়া তালিকায় শীর্ষে বাংলাদেশ

অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়া অভিবাসীদের মধ্যে তালিকায় শীর্ষে বাংলাদেশ। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে এই পথে ঝুঁকি নিয়ে যত মানুষ ইউরোপে ঢুকেছে, তার মধ্যে ২১ শতাংশই বাংলাদেশী। কয়েক মাস আগে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। ঢাকায় প্রকাশিত আন্তর্জাতিক অভিবাসন প্রতিবেদন ২০২৪ অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্য হয়ে ইউরোপে অভিবাসন বাড়ছে।

এদের অনেকে মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করছেন। ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপ যাওয়ার পথে গত দশ বছরে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৮৩ জন। এ ছাড়া ২০২৩ সালে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে ৫ হাজার অভিবাসী মারা গেছেন অবৈধভাবে নানা সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময়। ৫২৪ জন মারা গেছেন ভূমধ্যসাগরে। রিপোর্টে আরও বলা হয়, চলতি বছর প্রথম চার মাসে বিভিন্ন দেশের ১৬ হাজার ২০০ নাগরিক ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইউরোপে পৌঁছেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিক ৩ হাজার ৪২৫ জন। ২০২৩ সালে ভূমধ্যসাগর হয়ে বেআইনি অভিবাসনের তালিকায় চতুর্থ স্থানে ছিল বাংলাদেশের মানুষ।
মূলত উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশীরা হাজার হাজার মাইল দূরের ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার ঝুঁকি নিচ্ছেন। শুরুটা হয়েছিল ২০১০ সালের দিকে। লিবিয়ায় তখন অনেক বাংলাদেশী কর্মী কাজ করতেন। লিবিয়ায় যুদ্ধ শুরু হলে ফেরত আসতে শুরু করেন বাংলাদেশী কর্মীরা। সে সময় কর্মীদের বড় একটি অংশ আটকা পড়েন লিবিয়ায়। তারাই মূলত প্রথম অবস্থায় যে কোনো পন্থায় ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করেন। তখন থেকেই লিবিয়া হয়ে সমুদ্রপথে ইউরোপে প্রবেশের পথটা জনপ্রিয় হতে থাকে।

পরে এর সঙ্গে যুক্ত হয় মানব পাচার চক্র। তারা বাংলাদেশ থেকে হতাশাগ্রস্ত তরুণদের চুক্তিতে ইউরোপে নিয়ে যেতে শুরু করে। অনেকে ধরা পড়েন। অনেকের মৃত্যু হয়। অল্প কিছু সংখ্যক ইতালি পৌঁছতে সমর্থ হন। যাদের সাফল্য দেখে আরও হাজারো বাংলাদেশী তরুণ ঝুঁকিপূর্ণ এই পথে যাত্রা করতে আগ্রহী হন। তারা মনে করেন, কোনোভাবে দেশটিতে যেতে পারলে এক পর্যায়ে বৈধতা পাওয়া যাবে। যদিও বিষয়টা এতটা সহজ নয়।
শুধু লিবিয়া নয়, ইউরোপে যাওয়ার জন্য তুরস্ক, তিউনিসিয়া, আলজিরিয়া কিংবা মরক্কোর সীমান্তও ব্যবহার করা হয়। জমিজমা বিক্রি করে তরুণরা দালালের হাতে তুলে দিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। মৃত্যুর পরোয়ানা হাতে নিয়ে এরা চেষ্টা করছে নৌকায় সাগর পাড়ি দেওয়ার। কেউ কেউ পৌঁছে যাচ্ছে স্বপ্নের দেশে। এদের বদৌলতে আরও অনেক মানুষ স্বপ্ন দেখা শুরু করে পা দিচ্ছে সর্বনাশা পথে। অনেকে পৌঁছতে ব্যর্থ হচ্ছে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে। কারও সলিল সমাধি হচ্ছে সাগরে।

কেউ ধরা পড়ে জেল খেটে নিঃস্ব^ হয়ে দেশে ফিরছেন। উন্নত দেশে অবৈধ পথে যাওয়ার কাজটি কোনো স্বীকৃত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে হয় না। অদৃশ্য একটি সঙ্ঘবদ্ধ চক্র চালাচ্ছে এই অমানবিক কর্মকা-। এক দালাল থেকে আরেক দালাল। বিদেশে বসে অদৃশ্য শক্তি নিয়ন্ত্রণ করছে গোটা প্রক্রিয়া। নিচের দিকে কখনো কোনো দালাল ধরা পড়লেও আড়ালে থেকে যাচ্ছে চক্রের হোতা। 
বেশ কয়েক বছর আগের এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনার কথা আজও মনে হলে গা শিউরে ওঠে। আমার পরিচিত এক তরুণ কর্মসংস্থানের উদ্দেশে দক্ষিণ আফ্রিকায় রওনা হয়েছিল। তার পরিবারকে আমিরাত এয়ারলাইন্সের বৈধ টিকিট দেখানো হয়েছিল। দেখানো হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায় কাজের অনুমোদনপত্র। ঢাকা থেকে আমিরাত এয়ারে ওঠানো হলেও দুবাই গিয়ে বদলে ফেলা হয় তাদের সকল কাগজপত্র। দুবাই থেকে ফ্লাই করে তাদের নেওয়া হয় আফ্রিকার দেশ বুরুন্ডিতে।

ওখানে ইমিগ্রেশন না করেই তাদের নিয়ে যাওয়া হয় কয়েকশ’ কিলোমিটার দূরে এক জঙ্গলে। দুটি রুমে তাদের ৮ জনকে রাখা হয় গাদাগাদি করে। নিয়ে নেওয়া হয় পাসপোর্টসহ সব কাগজপত্র। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় দেশের সঙ্গে। দিনেরবেলা তাদের ঘরে লুকিয়ে রাখা হতো। রাতে ওঠানো হতো গাড়িতে। সারারাত চলত গাড়ি। এভাবে বেশ কয়েকদিন গাড়িতে করে তাঞ্জানিয়ার ওপর দিয়ে প্রবেশ করে মোজাম্বিকে। তাদের সঙ্গে কেউ কোনো কথা বলত না। তাদের ভাষাও বোঝা যেত না। কোথায় তারা যাচ্ছে, কতদিন লাগবে তার কেউ কিছু জানতেন না। মাঝে-মধ্যে খাবার ও পানি দেওয়া হতো। অধিকাংশই এসব খাবার খেতে পারত না। 
চলতে চলতে গ্রুপটি পৌঁছে যায় মোজাম্বিকের মাপটো নামক স্থানে। ওখানে গিয়ে প্রচ- জ্বর হয় এক তরুণের। জ্বর কমার ওষুধ দেওয়া হলেও সে আর বিছানা থেকে উঠতে পারে না। তখন দক্ষিণ আফ্রিকার সীমান্ত বেশ কাছে। তরুণটিকে ওই স্থানে রেখেই বাকিদের নিয়ে চলতে শুরু করল তাদের বহনকারী গাড়িটি। সঙ্গীরা আপত্তি জানালেও কেউ শোনেনি তাদের কথা। আরও এক রাত চলার পর ভোররাতের দিকে জঙ্গলের ভেতরে সীমান্তরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা পৌঁছে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার একটি শহরে। রক্ষীদের চোখে পড়ে গেলে হয়তো ওখানেই ভবলীলা সাঙ্গ হয়ে যেত এই সাত তরুণের। ওখানে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয় তারা।

এক জনকে ফেলে যাওয়ার কথা এবং দীর্ঘ রাস্তার কাহিনী তারাই জানায় পরিবারের লোকজনদের। ফেলে যাওয়া তরুণের পরিবার পাগলের মতো ছোটাছুটি করতে থাকে। সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সহায়তায় তারা দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন। দূতাবাসের কর্মকর্তারা জাম্বিয়ার প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে অনেক খোঁজাখুঁজির পর তরুণের সন্ধান পান। ততক্ষণে সব শেষ। আফ্রিকার জঙ্গলের বিষাক্ত মশার কামড়ে মৃত্যু হয় তার। তাকে রাখা হয় মাপটো নামক স্থানের একটি হাসপাতালের হিমঘরে অজ্ঞাতনামা লাশ হিসেবে।

দূতাবাসের সহায়তায় তার মরদেহ দেশে আনাও সম্ভব হয়েছিল। মানব পাচারকারীদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পাচারকারীরা এমনভাবে কাজটি পরিচালনা করে যাতে আসল অপরাধীকে কিছুতেই খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয় না। 
বাংলাদেশে মানব সম্পদ রপ্তানি শুরু হয় সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়। প্রথম ডাক্তার নেওয়া হতো ইরান এবং সৌদি আরবে। তখন বিদেশগামীদের অর্থের প্রয়োজন হতো না। নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান বিমান ভাড়াসহ সকল খরচ বহন করত।

ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে কর্মীদের বিদেশ যাওয়ার সংখ্যা। ইরান, সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্ত হয় মধ্যপ্রাচ্যের আরও কয়েকটি দেশ। শুরু হয় অদক্ষ কর্মী নিয়োগ। এশিয়ার মধ্যে যুক্ত হয় সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া। তখন শ্রমবাজার ছিল বাংলাদেশের একচেটিয়া। শ্রমিকদের কর্মদক্ষতায় নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ছিল খুব সন্তুষ্ট। বাংলাদেশেও কয়েকটি স্বনামধন্য রিক্রুটিং এজেন্সি হাজার হাজার কর্মী পাঠাতে থাকে।

ক্রমশ শ্রমবাজারে প্রবেশ করতে থাকে ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ আরও কয়েকটি দেশ। শুরু হয় প্রতিযোগিতা। তৈরি হয় একটি মধ্যস্বত্বভোগী শ্রেণি। এরা মধ্যপ্রাচ্যে বসে ভিসা সংগ্রহের কাজ শুরু করে। তাদের কাছ থেকে দেশের এজেন্সিগুলোকে ভিসা কিনতে হয়। অনৈতিক প্রতিযোগিতার কারণে ভিসার দাম বাড়ে। এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয় মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর। 
চাহিদার বিবেচনায় বাড়তে থাকে মধ্যস্বত্বভোগীর সংখ্যা। ভিসা সত্যায়িত করার ক্ষেত্রে বিদেশে অবস্থিত দূতাবাস, ভিসা প্রসেসিংয়ের ক্ষেত্রে বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কিছু কর্মকর্তা যুক্ত হয় মধ্যস্বত্বভোগীর তালিকায়। জটিলতা এড়াতে এজেন্সিগুলোকে বাড়তি খরচ জোগাতে হয়। একই সঙ্গে গড়ে উঠতে থাকে কয়েক স্তরের দালাল চক্র। এমনকি বিদেশগামী কর্মীর আত্মীয়-পরিজনও মধ্যস্বত্বভোগীর তালিকায় যুক্ত হয়।

এভাবে বাড়তে থাকে কর্মীদের খরচ। নগদ টাকার লেনদেনে কিছু লোভী মানুষ যুক্ত হয় মানব সম্পদ রপ্তানি প্রক্রিয়ায়। কেউ লাইসেন্স করে আবার কেউ অন্যের লাইসেন্সে কাজ করার নামে মানুষকে প্রতারণা শুরু করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রথমে দশটি ভিসা সংগ্রহ করে দশজনকে বিদেশ পাঠানো হয়। এলাকায় আস্থা অর্জন করে  আরও একশ’ জনের কাছ থেকে নেওয়া হয় টাকা। আজ না কাল করে এই লোকগুলোকে ঘুরাতে থাকে তারা। বেশি চাপে পড়লে কিছু টাকা ফেরত দেওয়া হয়। দুর্বলদের টাকা হজম করে ফেলা হয় চিরদিনের জন্য। অনেক ব্যবসায়ী সুইপার বা লেবার ভিসা সংগ্রহ করে ফ্যাক্টরিতে কাজের কথা বলে বেশি টাকা হাতিয়ে নেয়।

সেই কর্মী ফ্যাক্টরিতে কাজ করার উদ্দেশ্যে বিদেশ গিয়ে রাস্তা ঝাড়ু দিতে বাধ্য হয়। টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় কেউ কেউ কষ্ট করে কাজ চালিয়ে যায়। কেউ আবার ফেরত আসে দেশে। এভাবেই প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। 
প্রবাসীরা আমাদের বৈদেশিক আয়ের উল্লেখযোগ্য অংশের  জোগান দেয়। প্রতারণার হাত থেকে তাদের রক্ষা করতে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে শক্তিশালী করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে একাধিক অধিদপ্তর।

বিদেশ থেকে আসা কাগজপত্র পরীক্ষা করতে এই দপ্তর নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে যাতে একজন শ্রমিককে বিদেশ যেতে না হয় এ জন্য গঠন করা হয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। এই ব্যাংক থেকে দেওয়া যাচ্ছে সহজশর্তে ঋণ। এত কিছুর পরও প্রতারণার নানা কৌশল আবিষ্কার করছে একটি চক্র। দরিদ্র মানুষগুলোকে লোভ দেখিয়ে ফাঁদে ফেলছে তারা। প্রতারণার শিকার হয়ে সবকিছু হারিয়ে পথে বসেছে অনেক পরিবার।
দেশের সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী এই খাতটিকে নিরাপদ ও গতিশীল করার প্রক্রিয়া নিয়ে মানব সম্পদ রপ্তানি বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশে প্রায় দুই হাজার রিক্রুটিং এজেন্সি রয়েছে। নেই কোনো গ্রেডিং পদ্ধতি। ভিসা প্রসেসিংয়ের ক্ষেত্রে সব এজেন্সিই সমানভাবে কাজ করার সুযোগ পায়। সঠিকভাবে যারা কাজ করছে তাদের কোনো মূল্যায়ন হয় না। কিছু প্রতিষ্ঠানের অনৈতিক কাজে বিরক্ত হয়ে যোগ্য ব্যক্তিরা এই ব্যবসা ছেড়ে দিচ্ছেন। এ ছাড়া যাকে দক্ষ জনশক্তি বলার চেষ্টা করা হয় তা বিশ^ বাজারে মোটেও স্বীকৃত নয়। দেশে সরকারি-বেসরকারি বেশকিছু ট্রেনিং সেন্টারে দক্ষ জনশক্তি গড়ার নামে বিল্ডিংয়ের ইট গাঁথা কিংবা রড বাঁধার কাজ শেখানো হচ্ছে।

উন্নত বিশে^ এগুলো এখন মেশিনে করা হয়। বিশ^ বাজারে নার্সের চাহিদা প্রচুর। আমাদেরও রয়েছে অনেক নার্সিং ইনস্টিটিউট। প্রতিবছর হাজার হাজার নার্স পাস করে বের হচ্ছে। উন্নত বিশে^ এদের স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস, বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, মানব সম্পদ রপ্তানিকারক এজেন্সিগুলোর মধ্যে এক ধরনের অনৈতিক প্রতিযোগিতা গড়ে উঠেছে। এসব কারণে একদিকে যেমন বিদেশগামী কর্মীদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে বাড়ছে প্রতারণা।

অতীতে সব ক্ষেত্রে দলীয়করণ ও রাজনৈতিক প্রভাবে অভিবাসন খাতে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব হয়নি। বর্তমান সরকার সব খাতে সংস্কারে হাত দিয়েছে। মানব সম্পদ রপ্তানি আমাদের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। সকলের প্রত্যাশা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার করে সিন্ডিকেটমুক্ত নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করবে। এই খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রথমত এজেন্সিগুলোকে গ্রেডিং পদ্ধতিতে আনতে হবে। মনোযোগ দিতে হবে আন্তর্জাতিকমানের দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে।

বিদেশী দূতাবাস এবং দেশে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। রুখতে হবে এজেন্সিগুলোর অনৈতিক প্রতিযোগিতা। প্রয়োজনে এই জায়গাগুলোকে রাখতে হবে কঠোর নজরদারিতে। অবৈধ পথে উন্নত বিশে^ যাওয়ার জন্য তরুণরা দালালদের খপ্পরে পড়ছে প্রতিনিয়ত। সোনার হরিণ ধরার এই লোভ সংবরণ করতে হবে। তরুণদের সচেতন করতে সব গণমাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসন সম্পর্কে। সরকারি দপ্তরগুলোয় যথাযথ দায়িত্ব পালন, এজেন্সিগুলোর দায়িত্বশীল আচরণ এবং বিদেশগামী কর্মীদের সচেতনতাই পারে এই খাতকে নিরাপদ করতে। 

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, জনকণ্ঠ

×