হলিউড নগরী লস এঞ্জেলেস
অনেকদিন পর হলিউড নগরী লস এঞ্জেলেস গেলাম, তাও প্রায় দুই যুগ। আমার প্রাক্তন কর্মস্থল। এই মেঘা সিটি লস এঞ্জেলেস একসময় কতই না প্রিয় ছিল। এক নাগাড়ে প্রায় চার বছর কাটিয়েছি। নেহায়েত কম সময় নয়। থিতু হওয়ার কথা যে একেবারেই ভাবিনি তা কিন্তু নয়। দোটানায় থাকলে যা হয়। সোনালি এক্সচেঞ্জে কাজ করার সময় কত প্রবাসী বাংলাদেশীদের সঙ্গে যে পরিচয় হয়েছে, সখ্য হয়েছে তার হিসাব নেই। প্রবাসী বাংলাদেশী মানুষ আমাকে জড়িয়ে নিয়েছিল নিবিড় করে। তাই হয়তো ভুলতে চাইলেও ভুলতে পারিনি।
অনক দিন পরে আসলে যা হয়। শহরটির পরিবর্তন দেখে থ বনে গেছি। পুরো শহরটাই যেন নতুন নতুন দালান কোঠায় ছেয়ে গেছে। প্রথমে চিনতেই পারিনি। কেমন যেন সব এলোমেলো হয়ে গেছে। পরিচিতজনদের অনেকেই ইতোমধ্যে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। আবার কেউ কেউ অন্য স্টেটে মুভ করে গেছেন। হাতেগোনা কিছু বন্ধু-বান্ধব খুঁজে পেলেও তারা এখন আমার মতোই বয়সের ভারে ন্যুজ। সত্যি কথা বলতে কি, দীর্ঘ বিরতির পর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের মজাটাই আলাদা। একটা ভালো লাগার অনুভূতি তৈরি হয়, মনে প্রশান্তি জাগে।
৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়া সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন একটি অঙ্গরাজ্য যা আয়তনে বাংলাদেশের প্রায় ৩ গুণ। এই ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের বৃহত্তম সিটি হচ্ছে লস এঞ্জেলেস যা তার নামের ইংরেজি আদ্যক্ষর এলএ (খ অ) নামেও পরিচিত। এটি যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। অর্থাৎ নিউইয়র্কের পরই এর স্থান। ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের অন্য উল্লেখযোগ্য সিটিগুলো হলো সানদিয়াগো, সানফ্রান্সিসকো, সানহোসে, রিভারসাইড, আনাহেইম, লংবিচ, ওকল্যান্ড, বার্কলে, পাসাডোনা, গ্লেনডেল, সানিভেল ইত্যাদি।
আবার এই ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যেই রয়েছে প্রযুক্তি বিদ্যার জায়ান্ট কোম্পানিগুলো যেমন- গুগল, অ্যাপল, মাইক্রোসফট, ফেসবুক, ইয়াহু, টুইটার ইত্যাদির হেড কোয়ার্টার। এসকল প্রযুক্তি বিদ্যার হাব হওয়ার জন্য এ অঞ্চলটিকে সিলিকন ভ্যালি বলা হয়। এটি ৩০০ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত একটি জায়গা যা উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকো ও সানহোসে এই দুই শহরের মাঝখানে অবস্থিত।
এ দৃষ্টিনন্দন রাজ্যের মনভুলানো শহর লস এঞ্জেলেস রয়েছে চলচ্চিত্র জগতের স্বর্গ ‘হলিউড’ যা বিশ্বব্যাপী সিনেমা শিল্পের জন্য ব্যাপক প্রভাব রেখে চলছে। জানা গেছে, তারা প্রতি বছর গড়ে ৭০০-এর অধিক ইংরেজি ভাষায় চলচ্চিত্র মুক্তি দিয়ে থাকে যা কোনো একক ভাষার জাতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণের দিক থেকে সর্বোচ্চ। এখানে বিভিন্ন ধারার চলচ্চিত্র বিকশিত হয়ে থাকে। যেমন- নাট্যধর্মী, হাস্যরসাত্মক, সংগীতধর্মী, যুদ্ধভিত্তিক, মারপিটধর্মী, ভীতিপ্রদ, বিজ্ঞানভিত্তক কল্প কাহিনী ইত্যাদি।
সিনেমা শিল্পের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ বহুল আলোচিত পুরস্কার হলো একাডেমি অ্যাওয়ার্ড বা অস্কার পুরস্কার যা এখন কোটি কোটি মানুষের আগ্রহের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর রুপালি জগতের যারা অসাধারণ পেশাদার তাদের কাজকে সম্মানে ভূষিত করা হয়। পুরস্কারের সঙ্গে যে পদকটি দেওয়া হয় তা-ই অস্কার। এজন্য জমা পড়ে শত শত সিনেমা। কোনটি জিতে নিল সেরা পুরস্কার, কে হলেন সেরা অভিনেতা বা অভিনেত্রী এসব নিয়ে চলে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা।
অস্কার পুরস্কার পাওয়া মানে গোটা বিশ্বব্যাপী সম্মানিত হওয়া। তবে যে অস্কার নিয়ে এত মতামাতি, জানেন কী তার বাজার মূল্য কত? শুনলে আশ্চর্য হবেন অস্কার মূর্তিটির অর্থ মূল্য মাত্র ১০ ডলার। যদিও মূর্তিটি বানাতে খরচ হয় ৪০০ ডলার। তবে আইন অনুযায়ী সেটির দাম ১০ ডলারের বেশি রাখা যাবে না। কোন অস্কার নিলাম করতে হলে তা ‘একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের’ কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। তারপর তা নিলামে বিক্রি করা যাবে। এ ট্রফি তৈরিতে খরচ কম হলেও কখনো নিলামে উঠলে তা বিক্রি হবে কোটি টাকার কাছাকাছি। একসময় সত্যজিত রায় ও এআর রহমান অস্কার জেতায় পুরো ভারতে বয়ে গিয়েছিল খুশির জোয়ার।
গোটা লস এঞ্জেলেস যেসব দর্শনীয় নিদর্শন রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম চিত্তাকর্ষক নিদর্শন হচ্ছে হলিউড সাইন। কথিত আছে, হলিউডের একজন বিখ্যাত অভিনেত্রী পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত এই হলিউড সাইনের ওপর থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে। আর তখন থেকেই সাইনটিকে অপয়া হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এরপর থেকেই কেউ কেউ এ সাইনটিকে সরিয়ে ফেলার জন্য তৎপর হয়ে ওঠে।
কিন্তু পরবর্তীতে শক্তিমান অভিনেতা ও ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর আর্নল্ড শোয়ার্জনিগারের উদ্যোগে এটিকে রক্ষা করা হয়। তবে কেউ যাতে সাইনটির কাছে যেতে না পারে তার জন্য প্রয়োজননীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই সাইনটিকে সংক্ষেপে হলিউড সাইন বলা হয়। এটি হলিউডকে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি এনে দিয়েছে। সাইনটিকে দেখলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে হলিউডের লাস্যময়ী কোনো অভিনেত্রীর চেহারা কিংবা কোনো হার্টথ্রব নায়কের চেহারা।
সুউচ্চ পাহাড় সমৃদ্ধ হলিউড নগরী লস এঞ্জেলেসের মনোরম শোভা নয়নমন জুড়িয়ে দেয়। পাহাড়ের পাদদেশে বিরাট জায়গাজুড়ে রয়েছে ইউনিভার্সাল স্টুডিও। এটি একটি বৃহত্তম ফিল্ম স্টুডিও। ফিল্ম তৈরির বিশাল কারখানা। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করা হয়েছে ইনডোর-আউটডোর শূটিংয়ের সুব্যবস্থা। চিত্তবিনোদনের জন্য এক আকর্ষণীয় জায়গা। প্রতিদিন প্রচুর পর্যটকের সমাগম হয়। ইউনিভার্সাল স্টুডিওর দর্শনীয় আইটেমগুলো সারাদিন ঘুরে ঘুরে দেখেও যেন শেষ করা যায় না।
শহরের অন্যতম অভিজাত এলাকা ‘বেভারলি হিলস’-এ পৃথিবীর নামিদামি ফিল্ম স্টারদের বসবাস। নিকটেই ‘রোডিও ড্রাইভ’ নামক স্ট্রিটের দুই পাশে রয়েছে সুসজ্জিত দোকানপাট, সেখানকার জিনিসপত্র ও পোশাক পরিচ্ছদ সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। নামিদামি ফিল্ম স্টার ও সচ্ছল ব্যক্তিরাই এসব দোকানে কেনাকাটা করে থাকেন।
দেশটিতে ঘন ঘন আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়। অর্থাৎ ওখানকার ওয়েদার ষোড়শী তরুণীদের মনের মতো আনপ্রেডিকটেবল। এ জন্য সঙ্গে সর্বদাই জ্যাকেট থাকা প্রয়োজন। ওদেশের থ্রি ডব্লিউর ব্যাপারে রয়েছে একটি মজার ব্যাখ্যা। এই থ্রি ডব্লিউ যে কোনো মুহূর্তে চেঞ্জ হতে পারে। যেমন প্রথম ডব্লিউ, ওয়েদার যা ঘন ঘন পরিবর্তন হয়। দ্বিতীয় ডব্লিউ, ওয়ার্ক বা চাকরি যা সকালে আছে তো বিকেলে নেই। অর্থাৎ সকালে হায়ার করা হয়েছিল বিকেলে ফায়ার হয়ে গেছে। তৃতীয় ডব্লিউ, ওয়াইফ। ওয়াইফদের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়। আজকে হয়তো আছে কালকে নাও থাকতে পারে।
একদিকে উঁচু উঁচু পাহাড় অন্যদিকে প্রশান্ত মহাসাগরের বিশাল জলরাশি। এই পাহাড়ের পাদদেশ ধরে প্রশান্ত মহাসাগরের তীর ঘেঁষে প্রশস্ত মসৃণ রাস্তায় প্যাসিফিক কোস্ট হাইওয়েতে লং ড্রাইভের আনন্দটাই অন্যরকম। একপাশে সাগরের উত্তাল গর্জন, অন্যপাশে পাহাড়ের চূড়ায় সুশৃঙ্খলভাবে তৈরিকৃত সাজানো ঘরবাড়িগুলো যেন ছবির মতো মনে হয়। এসব ঘরবাড়িতে ধনী ব্যক্তিরাই বসবাস করে থাকেন। ওয়েস্ট এলএর সান্টামনিকা ও মালিবু বিচ সংলগ্ন প্যাসিফিক কোস্ট হাইওয়ে ধরে ভেনচুরা ও সান্টাবারবারার দিকে যাওয়ার সময় প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য যে কোনো পর্যটকের মন কেড়ে নেওয়াটাই স্বাভাবিক। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। তাই তো স্মৃতির রেশ এখনো মনজুড়ে উজ্জ্বল।
সিনেমাশিল্প সমৃদ্ধ এ হলিউড নগরী লস এঞ্জেলেস আবহাওয়ার দিক থেকে চমৎকার একটি জায়গা। তাই স্থায়ীভাবে বসবাসের লক্ষ্যে অনেকেই এখানে মুভ করে থাকেন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি হলো এই ক্যালিফোর্নিয়া। এই রাজ্যের হলিউড ও সিলিকন ভ্যালি থেকে তারা প্রতি বছর শত বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে। পৃথিবীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ গাড়িই আমেরিকাতে ব্যবহৃত হয়, তন্মধ্যে আবার বেশিরভাগই ক্যালিফোর্নিয়া স্টেটে। এই রাজ্যে যারা বসবাস করেন তাদের মধ্যে ধনী ও সচ্ছল ব্যক্তিদের সংখ্যাই বেশি। এসব কারণে ক্যালিফোর্নিয়াকে ‘গোল্ডেন স্টেট’ বলা হয়।
আবার আর্থকোয়াক জোনের স্টেটও ক্যালিফোর্নিয়া। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ঝকঝকে ছবির মতো সুন্দর হলিউড নগরী লস এঞ্জেলেসকেই বেশি করে ‘আর্থকোয়াক জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মাঝে মধ্যেই এই শহরে বড় রকমের ভূমিকম্প হয়। বাড়ি-ঘরগুলো ভূমিকম্প প্রতিরোধ উপযোগী করে গড়ে তোলা হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নেহায়ত কম নয়। তবে ইন্স্যুরেন্সের সুবিধা রয়েছে বলেই রক্ষা।
ভূমিকম্পের শহর লস এঞ্জেলস। আর এখানেই এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা থেকে ভূমিকম্পের প্রতি আমার প্রচ- ভয় জন্মে যা এখনো আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। মনের মধ্যে সবসময় একটা আতঙ্ক কাজ করে। সোনালি এক্সচেঞ্জ লস এঞ্জেলেস শাখায় যোগদানের পরপরই বড় ধরনের একটি ভূমিকম্পের সম্মুখীন হই যা আমার জীবনে স্মরণীয় ঘটনা হয়ে আছে।
লস এঞ্জেলেসের ডাউন টাউনের কাছাকাছি উইলশায়ার ও ভারমন্ট ক্রস স্ট্রিটে আমার অফিস। মাত্র কয়েক দিন হলো কাজে যোগদান করেছি। আগে কখনো আমেরিকা ভ্রমণের সুযোগ হয়নি। চাকরির সুবাদে এবারই প্রথম পদার্পণ। এত বড় অনন্য একটি শহর লস এঞ্জেলেস যা একেবারেই অচেনা ও অপরিচিত। সবই মুগ্ধ চোখে অবাক হয়ে দেখি। এ যেন এক স্বপ্নের শহর। অন্যদিকে মনের অবস্থা ততটা ভালো নেই। স্ত্রী চাকরিজীবী, সোনালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত।
কন্যা ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ছাত্রী। ছুটি নিয়ে বেড়াতে এসেছে। ডাউন টাউনের কাছেই ফিফথ ও সিক্সথ স্ট্রিটের মাঝামাঝি একটি কোরিয়ান এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে নতুন বাসা নিয়েছি যা ঝটপট গুছিয়ে দিয়ে স্ত্রী ঢাকায় ফিরে গেছে। তাই নিঃসঙ্গতা ও একাকিত্ব আমাকে যেন কুরে কুরে খাচ্ছে।
তিনতলায় খোলা বারান্দার সঙ্গে আমার এপার্টমেন্ট যেখান থেকে হলিউডের সুপরিচিত সাইনটি স্পস্ট চোখে পড়ে। সুন্দর সকালের সোনালি রোদ মাত্র রুমে ঢুকছে। মুগ্ধ হয়ে দেখেছিলাম ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ হলিউড সাইন আর সুন্দর ছবির মতো শহরটিকে। হঠাৎ করে রুমটা কেমন যেন কেঁপে উঠল। চোখে পড়ল টেবিল চেয়ারও দোলছে। প্রথমে ভাবলাম হয়তো মনের ভুল। তারপর হৈচৈ শুনে দৌড়ে বাইরে এলাম। দেখি অনেকেই দৌড়ে এসে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়েছে।
ভয়ে কাঁপছিলাম আর এদিক সেদিক তাকাচ্ছিলাম। বেশির ভাগই কোরিয়ান নাগরিক। দৌড়ে এসে এদের সঙ্গে শামিল হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পেলাম। ততক্ষণে কম্পন থেমে গেছে। ভূমিকম্পের সময় লিফটে চড়া বারণ। তাই সিঁড়ি বেয়ে রুমে ফিরলাম।
লস এঞ্জেলেসের কাছাকাছি আরেকটি ছোট শহর ওয়েস্ট কভিনা যেখানে আমার স্ত্রীর বড় বোন বসবাস করেন উনাকে ফোন করে সবিস্তারে ঘটনাটি জানালাম। ওনারা কিছুই টের পাননি। দীর্ঘদিন যাবৎ ওই দেশে আছেন।
তাই অভ্যস্ততার জন্য বিষয়টিকে অতটা গুরুত্বের সঙ্গে নিলেন না। সাহস দিলেন এবং জানালেন ক্যালিফোর্নিয়া ভূমিকম্প জোন বিধায় এটি স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ভবিষ্যতে ভূমিকস্পের সময়ে কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে সে ব্যাপারে কিছু পরামর্শ দিলেন।
পরবর্তীতে ভূমিকম্প নিয়ে আরও অনেকের সঙ্গেই কথা হলে বুঝতে পারি বিষয়টিকে কেউ তেমন গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে না। তাই তো মনে মনে সাহস সঞ্চয় করি। বিশেষ করে লস এঞ্জেলেসে বসবাসরত আমার বেস্ট ফ্রেন্ড প্রবাসী বাংলাদেশী গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) কুদ্দুস যিনি একজন শক্ত মনের মানুষ তার সহযোগিতা ও পরামর্শে সমস্ত ভয় ও দুশ্চিন্তা কেটে যায়। কিন্তু মনে মনে ভাবি এমন সুন্দর শহরেও কী ভূমিকম্প হয়?
সঙ্গে সঙ্গে ‘কুসুমে কীট’- এ উপমাটি মনে পড়ে গেল। সুন্দর ফুলের মধ্যে থাকে বিষাক্ত কীট। লস এঞ্জেলেসের মতো যে মনোরম শহরটি দেখে মুগ্ধ হয়েছি তার মাটির তলাতেও লুকানো আছে ভূমিকম্পের মতো ধ্বংস আর মৃত্যুর গ্রাস। এ যেন সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহতালার এক রহস্যময় সৃষ্টি।
লেখক : চেয়ারম্যান, ব্যুরো বাংলাদেশ