ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

ঢাবির ১০ শিক্ষক-বিজ্ঞানী

প্রকাশিত: ২০:৫১, ২ অক্টোবর ২০২৪

ঢাবির ১০ শিক্ষক-বিজ্ঞানী

সম্পাদকীয়

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে খ্যাত ঐতিহ্যবাহী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন স্বনামধন্য শিক্ষক বিশ্বসেরা বিজ্ঞানীদের তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছেন। এটি অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য গর্বের ও গৌরবের। অসাধারণ গবেষণা কর্ম ও বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের জন্য ঢাবির ১০ অধ্যাপক বিশ্বের শীর্ষ দুই শতাংশ বিজ্ঞানীর তালিকায় স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং নেদারল্যান্ডসভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এলসেভিয়ার এ তালিকা প্রকাশ করেছে।

২০১৯ সাল থেকে এ ধরনের তালিকাটি প্রকাশ করে থাকে এই দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে। আরও যেটি শ্লাঘার বিষয় তাহলো, এ বছর বাংলাদেশের ২০টি বেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের ২০৫ জন গবেষক স্থান পেয়েছেন এই তালিকায়। একজন শিক্ষক-বিজ্ঞানীর পুরো ক্যারিয়ার, গবেষণার মান, সাইটেশন, সাম্প্রতিক  গবেষণা এবং নির্দিষ্ট ফিল্ডে অবদান রাখার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে কৃতী গবেষকদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়ে থাকে। এবারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি বিভাগ ও একটি ইনস্টিটিউটের ১০ জন শিক্ষক নিজ নিজ গবেষণা ও কাজের জন্য পেয়েছেন এই বিরল সম্মান। 
ঢাবির যে ১০ শিক্ষক বিজ্ঞানী তালিকায় স্থান পেয়েছেন, তাদের একজন অধ্যাপক কাজী মতিন উদ্দিন আহমদ। যিনি প্রধানত ভূগর্ভস্থ পানি নিয়ে গবেষণা করে থাকেন। ২৫০টির বেশি আন্তর্জাতিক জার্নালে তার গবেষণাপত্র প্রকাশ  পেয়েছে।  দ্বিতীয় জন সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এম রেজাউল ইসলাম, যিনি প্রধানত সোশ্যাল রিসার্চ  মেথডলজি নিয়ে কাজ করেন। এছাড়াও ক্লাইমেট, ডিজাস্টার, মাইগ্রেশন, চাইল্ড কেয়ার ও এসডিজি নিয়েও কাজ করেন তিনি। তৃতীয় ব্যক্তি ফলিত রসায়ন ও ক্যামিকৌশল বিভাগের ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, যিনি প্রধানত কাজ করেন শিল্পকারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর।

চতুর্থ জন একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসলিম উর রশিদ। তিনিও কাজ করে থাকেন শিল্পকারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে। পঞ্চম ব্যক্তি পপুলেশন সাইন্স বিভাগের অধ্যাপক বিল্লাল হোসেন। তিনি কাজ করে থাকেন পাবলিক হেল্থ বা জনস্বাস্থ্য নিয়ে। ষষ্ঠ ব্যক্তি ফলিত গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ফেরদৌস, যার কাজ প্রধানত ফ্লুইড  মেকানিক্স নিয়ে। সপ্তম ব্যক্তি গণিত বিভাগের ড. নেপাল চন্দ্র রায়, যার গবেষণার ক্ষেত্র হলো  মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট নিয়ে।  

অষ্টম ব্যক্তি সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কাউসার আহমেদ। নবম ব্যক্তি হলেন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রাকিবুল হক। তিনি প্রযুক্তি এডাপটেশান ও ই-হেলথ নিয়ে কাজ করেন। এরপরে রয়েছেন অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ মাহমুদুল ইসলাম, যার কাজ রাডার সিস্টেম এন্টেনা অ্যান্ড অ্যারো সিগন্যাল প্রসেসিং। 
এখানে উল্লেখ করা আবশ্যক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়, তার পরিমাণ খুবই নগণ্য। তদুপরি আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন উন্নত গবেষণাগার নেই বললেই চলে। সরকার তথা ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্টস কমিশন এদিকে তেমন দৃষ্টিপাতও করে না। দেশীয় বিজ্ঞানীদের পাটের জীবন রহস্য আবিষ্কার করতে গিয়ে বিষয়টি সামনে এসেছে। সেই প্রেক্ষাপটে এই ১০ জন শিক্ষক-বিজ্ঞানী নিজস্ব মেধা, প্রতিভা ও যোগ্যতাবলে শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও স্থান করে নিয়েছেন বৈশ্বিক তালিকায়। তাতে দেশের গৌরব বেড়েছে বহুলাংশে।

×