ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১

কালো টাকা-অর্থপাচারের শ্বেতপত্র হোক

ড. মো. আইনুল ইসলাম

প্রকাশিত: ২০:৩৫, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কালো টাকা-অর্থপাচারের শ্বেতপত্র হোক

কালো টাকা-অর্থপাচারের শ্বেতপত্র হোক

রাজনীতিসৃষ্ট ভয়াবহ এক সামাজিক সংকটের পর সম্প্রতি বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকার গঠনের আগে পতিত সরকারের দেড় দশকের শাসনামলে দেশের আর্থসামজিক অবস্থা নিয়ে তথ্য, পরিসংখ্যান ও বক্তব্যের সঙ্গে সাধারণ মানুষসহ ভিন্নমত রয়েছে বিশ্লেষক ও বিরোধীপক্ষের। তাদের অভিযোগ, নিজের প্রয়োজন বোঝাতে, গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে উপস্থাপিত বক্তব্যে ও বিকৃত তথ্যে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র স্থান পায়নি।

এমন এক প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার দেশের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র জানতে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি নামে একটি কমিটি গঠন করেছে। যতদূর জানা গেছে, পরিচয়ে শে^তপত্র হলেও প্রকৃত অর্থে এই কমিটির কাজ আসলে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং পদ্ধতিতে বেইজ পয়েন্ট ও বেঞ্চমার্ক সৃষ্টি। অর্থাৎ দেশের অর্থনীতি প্রকৃত অর্থেই কী অবস্থায় পাওয়া গেছে, তা জানার চেষ্টা করা হবে এবং সে আলোকে অর্থনীতিসংক্রান্ত লক্ষ্য-কার্যক্রম ঠিক করা হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এলোপাতাড়ি কার্যক্রম না চালিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করার এই উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছা ও সঠিক পথে থাকার পরিচয় বহন করছে।

স্বীকৃত কাঠামো অনুসরণ করে প্রণীত শ্বেতপত্রটির আলোকে সামগ্রিক কর্মকা- পরিচালিত হলে সংকটে থাকা বাংলাদেশের অর্থনীতি আবার নিশ্চিতভাবে ঘুরে দাঁড়াবে। তবে তারা বলছেন, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি অনেক বিষয়ে জনসাধারণের কাছ থেকে মতামত ও পরামর্শ আহ্বান করেছে। কিন্তু সেখানে অর্থনীতির কাঠামোগত সমস্যার মূলে থাকা দুর্র্নীতি ও কালো টাকার বিষয়ে বড় দাগে কোনো কিছু উল্লেখ করা হয়নি। এ দুটি বিষয় এ কারণে গুরুত্বপূর্ণ যে, পতিত সরকারের আমলে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত কালো টাকাই মূলত দেদার বিদেশে পাচার হয়েছে। তাদের মতে, যেহেতু স্বাধীনতাপরবর্তী সরকার বাদে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারই এ দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি জনসমর্থন ধারণ করে, সেহেতু তাদের উদ্যোগে সমাজ-অর্থনীতি-রাজনীতিকে নিঃশেষ করে দেওয়ার মূল উৎস কালো টাকা ও অর্থপাচার নিয়ে পৃথক একটি শে^তপত্র প্রকাশ করা অতীব প্রয়োজন। কোনো রাজনৈতিক সরকার মহৎ এ কাজটি করবে না।
দীর্ঘ সময় ধরে  অর্থনীতি শাস্ত্রের শিক্ষকতা পেশায় থেকে এবং রাষ্ট্রের পরিচালকদের কর্মকা- দেখে এটুকু জ্ঞান অন্তত হয়েছে যে, মানবসমাজের অর্থনীতি সবসময় পুঁথিগত বিদ্যা কিংবা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে পরিচালনা করা সম্ভব নয়, দিনশেষে তা সমাজপতি ও পরিচালকদের ইচ্ছানির্ভর। এ কথা এ জন্য বলা যে, দেশী-বিদেশী দৃশ্যমান ও অদৃশ্য নানা বাধা-বিপত্তি থাকলেও স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ের পর সবচেয়ে বেশি জনসমর্থন নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হওয়া বর্তমান নীতিনির্ধারকদের পক্ষে দেশের মানুষের বহুকাক্সিক্ষত রাষ্ট্র বিনির্মাণ সব অর্থেই সম্ভব।

শুধু প্রয়োজন সদিচ্ছা ও দৃঢ় মনোবল। এই সদিচ্ছার প্রতিফলন অল্প কয়েকদিনের বর্তমান সরকারের কার্যক্রমে কিছুটা হলেও দেখা যাচ্ছে। এমন এক প্রেক্ষাপটে নির্মোহ অনেক বিশ্লেষকের সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, তারা মনে করেন বাংলাদেশের সমাজ-অর্থনীতি এখনও সত্যিকার অর্থে কোনো স্বীকৃত কাঠামোয় গড়ে উঠতে পারেনি। এর কারণ, ঘটনা-দুর্ঘটনায় বর্গিদের মতো একেকটা সরকার এ দেশের শাসন ক্ষমতায় বসেছে, তারপর তারা মগদের মতো মুল্লুক চালিয়েছে।

আর এই পথ ধরেই বাংলাদেশের সংবিধানে যেসব সুনির্দেশনা ও পথরেখা দেওয়া হয়েছে, তা কেবল কাগজে লিপিবদ্ধ রেখে রাষ্ট্র সর্বদাই উল্টোপথে হেঁটেছে। উপরন্তু সংবিধান ও আইনে সময়ের দাবি না অন্তর্ভুক্ত করে, বারবার বাজে নীতি সন্নিবেশ করেছে। এ কারণেই এখন সংবিধান পুনর্লিখন থেকে শুরু করে জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের মতো আকাশে লাথি দেওয়ার মতো অনেক কথাবার্তা জোর বাতাস পাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে জ¦লজ¦লে উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০ (২)-এ স্পষ্ট নির্দেশ আছে, ‘রাষ্ট্র এমন অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করিবেন, যেখানে সাধারণ নীতি হিসেবে কোন ব্যক্তি অনুপার্জিত আয়ভোগ করিতে সমর্থ হইবেন না’। অথচ স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে এসে দেশের সব নাগরিকের মনে বদ্ধমূল বিশ^াস জন্মেছে, সৎভাবে অর্জিত অর্থ দিয়ে কোনো মানুষের পক্ষে ন্যূনতম মৌলিক চাহিদাটুকু পূরণ করা সম্ভব না। সত্যি কথা বলতে কি, দুর্নীতি নিয়ে আমাদের চারপাশের মানুষের মধ্যে ভয়-চক্ষুলজ্জা উঠে গেছে; যা বিবেকমান শিশু-কিশোর-তরুণদেরই কেবল বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ করেছে। আর তাই তারা রক্ত দিয়ে হলেও একটি পরিবর্তন চাইছে। 
সংবিধানে উল্লেখ থাকলেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অনুপার্জিত আয় বা কালো অর্থনীতির (দুর্নীতি-চুরির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ) বিষয়টি গত ৫৩ বছরে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন কোনো সরকারই আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি। সরকারি কোনো পরিসংখ্যানেও এর উল্লেখ পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, কালো অর্থনীতি বোঝাতে যত ধরনের প্রত্যয়ই ব্যবহার হোক না কেন, কালো অর্থনৈতিক কর্মকা- হলো সেসব লেনদেন, যা দেশের প্রচলিত আইন-নিয়ম-কানুন অনুযায়ী বিধিসাপেক্ষ নয়।

কালো অর্থনৈতিক কর্মকা- সরকারিভাবে গৃহীত যেসব বিধিকে উপেক্ষা করে, সেগুলো হলো প্রধানত শুল্ক ও কর বিধি, লাইসেন্সিং নিয়মকানুন, শ্রম স্ট্যান্ডার্ড ইত্যাদি। কালো অর্থনৈতিক কর্মকা--উদ্ভূত কালো টাকা অবৈধ এবং সেটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনুৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ করা হয়। কালো অর্থনৈতিক কর্মকা- মনুষ্য মূল্যবোধের ধার ধারে না এবং নৈতিকভাবে আদৌ সমর্থনযোগ্য নয়।

সরকারি নীতিনির্ধারকরা যদিওবা কখনো মুখ ফসকে কিংবা ‘অত্যধিক কিছু পানের প্রতিক্রিয়ায়’ আইন প্রণয়নের জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে অনুপার্জিত আয় ও দুর্নীতির কথা যৎসামান্য বলেও ফেলেন, কিন্তু অর্থনীতির মৌলিক কাঠামোগত সমস্যা দুর্নীতি, কালো টাকা ও অর্থপাচার নিয়ে বিন্দুমাত্র শব্দ করেন না। উল্টো অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও সংস্থার এ সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্তকে অতিরঞ্জিত-অমূলক-ভিত্তিহীন উল্লেখ করে হাতেনাতে প্রমাণ দেওয়ার জন্য বলেন। তারা এ কথা মানতেই চান না যে, সংবিধানে সমাজতন্ত্র-গণতন্ত্র উল্লেখ করে আইন প্রণয়নের সংসদে পুঁজিবাদী ব্যবসায়ীদের-রাজনীতিবিদ আর চাটুকার আমলাদের সমম্বয়ে কেবলই দুর্নীতি, কালো টাকা ও অর্থপাচারের উৎপাদন-পুনরুৎপাদন হচ্ছে, যা রাষ্ট্র ও সমাজে ভয়াবহ বৈষম্য ডেকে আনছে।

বাংলাদেশে ১৯৯১ সাল পরবর্তী প্রতিটি রাজনৈতিক সরকারের ইশতেহার ও নেতাদের বক্তব্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা ঘোষণা হলেও, তাদের মেয়াদ শেষে প্রশাসন ও দলের ছোট থেকে বড় প্রতিটি কর্মকর্তা, নেতা ও কর্মীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত কালো টাকার মালিক হওয়া ও অর্থপাচারের অভিযোগ উঠেছে। 
বাংলাদেশের প্রখ্যাত কয়েকজন অর্থনীতিবিদ দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে বৈষম্য, কালো টাকা ও অর্থপাচারের বিস্তার বিষয়ে গবেষণাতথ্য ও মতামত প্রকাশ করে আসছেন।

অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতের এক গবেষণামতে, স্বাধীনতাপরবর্তী ৪৬ বছরে (১৯৭২/৭৩-২০১৮/১৯ অর্থবছরে) সৃষ্ট মোট পুঞ্জীভূত কালো টাকার ন্যূনতম পরিমাণ হবে ৮৮ লাখ ৬১ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা (এই পরিমাণ অর্থে কমপক্ষে ১১ বছরের বাজেট করা সম্ভব)। ড. বারকাতের এই হিসাবকে বিবেচনায় নিলে বলা যায়, প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৯৩ হাজার কোটি কালো টাকা সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) প্রয়াত মহাপরিচালক ড. সদরেল রেজা আশির দশকের মাঝামাঝি এক বছরের অর্থনীতি মূল্যায়ন করে মত দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক অর্থনীতির এক-তৃতীয়াংশই কালো অর্থনীতি।

অধ্যাপক বারকাতের হিসাবে, দেশে কালো টাকার পরিমাণ বর্তমান বা বাজারমূল্যে বার্ষিক মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বা ৩৩ শতাংশ। তবে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছিল একজন গদিনশীন অর্থমন্ত্রীর মুখ থেকে। অনেকের ধারণা কোনো বেসামাল অবস্থায় তিনি সত্যি প্রকাশ করে দিয়েছিলেন। ২০১৩ সালে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত তার বাজেট পরবর্তী প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, অর্থনীতিতে অপ্রকাশিত অর্থের পরিমাণ (দুর্নীতিবাজ সরকার ও ব্যক্তিরা কালো টাকা বলতে নারাজ) দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৪১-৪২ শতাংশ।

স্বাধীনতাপরবর্তী ৫৩ বছরে এটাই ছিল কালো অর্থনীতির আধিপত্য নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে একমাত্র আনুষ্ঠানিক বিবৃতি। আর এই বিবৃতির উৎস ছিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণ। ওদিকে গত নভেম্বরে ওয়াশিংটনভিত্তিক গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৬৪ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। সেই হিসাবে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় ১০ লাখ কোটি টাকা।

সংস্থাটির মতে, ২০০৫-১৪ সময়কালেই বাংলাদেশ থেকে ৬১.৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে অর্থাৎ ৭,৩৬১,৯৮৮,৪৮০,০০০ কোটি বাংলাদেশী টাকা। শুধু মিথ্যা ইনভয়েসিং বাণিজ্যের কারণেই বাংলাদেশ বার্ষিক ৮.২৭ বিলিয়ন ডলার হারায়, যা ২০৩০ সালের মধ্যে বার্ষিক ১৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, ২০১৬ সালে দেশটির ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশীদের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বেড়েছিল।

এর পরের ৯ বছরে তা যে আরও বেড়েছে, তা হলফ করেই বলা যায়। কারণ, কোনো প্রতিকারই নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোম প্রোগ্রামের জন্য আবেদনকারীদের তালিকায় বাংলাদেশীরা তৃতীয়। কানাডা সরকারের মতে, দেশটিতে মানি লন্ডারিং নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোর মূলে রয়েছে বাংলাদেশীদের বেগমপাড়ায় বিপুল পাচারকৃত অর্থ বিনিয়োগ। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের কাস্টমস হিসাব করে দেখেছে, মাত্র ৩৩টি তৈরি পোশাক কারখানা ও বায়িং হাউস গত ৬ বছরে অন্তত ৮২১ কোটি টাকা পাচার করেছে। 
বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থে মালয়েশিয়া, দুবাই, ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায়সহ আরও অনেক দেশে বাংলাদেশী সাহেব-বিবি-গোলামদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেগমপাড়া-সেকেন্ডহোম আর দুনিয়ার বেহেশত তৈরি হওয়ার মতো খবর সর্বজনবিদিত। অনেকে আবার দেশের মধ্যেই প্রাসাদোসম অট্টালিকা ও প্রমোদভবন বানিয়েছেন। নেতা-মন্ত্রী-এমপি-সরকারঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী-আমলা-পিয়ন-চাপরাশী থেকে শুরু করে বিচারক-শিক্ষক-ডাক্তার-সাংবাদিক কেউই বাদ যাননি।

এ জন্য নির্দ্বিধায় বলা যায়, গত ৫৩ বছর ধরে বাংলাদেশে ধীরে ধীরে দুর্নীতি, কালো টাকা, অর্থপাচারের যে বিস্তার ঘটেছে, তা এখন অনেকটাই মচ্ছবে-মহোৎসবে রূপ নিয়েছে। আর এ কারণে অনুকূল পরিস্থিতি ভেবে কিছু কিছু মানুষ যাকে-তাকে লুটেরা-কালো টাকা আর অর্থপাচারকারীর তকমা দিচ্ছে। এভাবে হরেদরে অভিযোগ তুলে সমস্যার মূলে যাওয়া যাবে না, সমস্যাটি চিরকালই থেকে যাবে।

এ অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকার তার সংস্কার প্রচেষ্টাকে সফল করতে চাইলে নিজ উদ্যোগে দুর্নীতির অবশ্যম্ভাবী কুফল অর্থাৎ কালো টাকা ও অর্থপাচার বিষয়টির একটি সুষ্ঠু সমাধান করতে হবে একটি পৃথক শে^তপত্র প্রণয়নের মাধ্যমে। যদিও বিদ্যমান আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক ব্যবস্থায় কালো টাকা-অর্থপাচার সমস্যাটি সমূলে উৎপাটন সম্ভব নয়, কিন্তু ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা সৃষ্টি করা খুবই সম্ভব। 


লেখক : অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি

×