ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১

মেয়েশিশুর বিশেষ শিক্ষা

মাহাদিয়া খান

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মেয়েশিশুর বিশেষ শিক্ষা

শিশুর প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র হচ্ছে তার পরিবার

শিশুর প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র হচ্ছে তার পরিবার। একাডেমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে লেখাপড়া করে শিক্ষিত হওয়া যায়, উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করা যায়; কিন্তু পরিবার থেকে সুশিক্ষা না পেলে সব শিক্ষাই ব্যর্থ হয়ে যায়। ‘আর্দশ মানুষ হিসেবে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হলো পারিবারিক  নৈতিক শিক্ষা। আর এই পারিবারিক নৈতিক শিক্ষা একমাত্র পরিবার এবং মায়ের কাছে থেকেই অর্জন করা সম্ভব। কারণ- সভ্যতা, ভদ্রতা, পরোপকার, কৃতজ্ঞতাবোধ, নৈতিকতা, অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল-স্নেহ, উদার মানসিকতা -এগুলো একাডেমিক প্রতিষ্ঠান থেকে খুব বেশি অর্জন করা যায় না।

তাই একাডেমিক শিক্ষার বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে। ‘শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড’ যদি প্রশ্ন করা হয় কোনো শিক্ষা? পরিষ্কার জবাব, অবশ্যই সুশিক্ষা। সন্তানদের সুশিক্ষার প্রথম ধাপ হলো জন্মের পর তার একটি সুন্দর নাম রাখা। এটা প্রত্যেক পিতা মাতার একান্ত কর্তব্য। প্রত্যেক ব্যক্তির নাম তার চরিত্রের ওপর ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। একাডেমিক শিক্ষা আমাদের একটি শিক্ষিত হবার সার্টিফিকেট প্রদান করে, আর সুশিক্ষা আমাদের একজন আদর্শবান মানুষ হওয়ার রূপ বহন করে থাকে।

একটি সন্তান জন্মের পর সে তার মায়ের আচরণ দেখে অভ্যস্ত। আর সন্তানরা মাকেই বেশি অনুসরণ করে। তাই সন্তানদের শেখানো উচিত যে বড়দের সম্মান করা, অচেনা ব্যক্তির সঙ্গে ভদ্র ব্যবহার করা, ছোটদের স্নেহ করা ইত্যাদি। প্রতিটি পরিবারে ছেলে সন্তানদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস শেখানো উচিত যে, তারা মেয়েদের সঙ্গে কেমন আচরণ করবে। তারা যেন মেয়েদের সঙ্গে ইতিবাচক, স্বাভাবিক আচরণ করে সেই শিক্ষাটা দিতে হবে। কোনো নারীর দিকে বিকৃত দৃষ্টিতে না তাকানো, নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলোও সুশিক্ষার অন্তর্ভুক্ত।

অপরদিকে মেয়ে সন্তানকেও মন্দলোক হতে সতর্ক ও সচেতন থাকার শিক্ষা দিতে হবে। তবে মেয়ে সন্তানদের এই শিক্ষাগুলো একান্তই মায়ের কাছে থেকে নেওয়া উচিত। কারণ আমাদের সমাজে কিছু এমনও নোংরা মানুষ আছে যাদের জন্য একটি ছোট মেয়ে সন্তানও ব্যাড টাচ বা মন্দ স্পর্শের সম্মুখীন হয়। ছোট বাচ্চাদের চকলেট, খেলনা দেওয়ার নাম করেও কিছু অসাধু লোক এই কাজটি করে থাকেন। তাই ছোট থেকেই সন্তানদের গুড টাচ এবং ব্যাড টাচের পার্থক্য বুঝিয়ে দেওয়া পিতামাতার অন্যতম শিক্ষা।

অপরিচিত মানুষের কাছে থেকে কিছু না নেওয়া, কিছু না খাওয়া, কাছে না যাওয়া এই প্রতিটি শিক্ষাই হলো মেয়ে সন্তানদের জন্য খুবই সাধারণ ও বেসিক একটি মেসেজ। সুশিক্ষা হলো সেই প্রকৃত শিক্ষা যা মানুষ বাস্তব ক্ষেত্রে এর পজিটিভ দিকগুলোর প্রয়োগ ঘটাতে পারে। সন্তানকে সঠিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা আজকাল মা-বাবার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ ছেলেমেয়েরা এখন একটু বেশি স্বাধীনতা চাই, বেশি আবেগি, তারা একটু বেশি সংবেদনশীল। তাই খুব সহজেই তারা বিপদের সম্মুখীন হয়। 
রাজশাহী কলেজ থেকে

×