যার মাঝে ন্যায়নৈতিকতা, শ্রদ্ধাবোধ ও প্রকৃত মনুষ্যত্ব বিদ্যমান থাকে
মানুষ শুধু একাডেমিক শিক্ষা অর্জন করলেই প্রকৃত শিক্ষিত হিসেবে বিবেচিত হয় না। প্রকৃত শিক্ষিত তাকেই বলা হয় যার মাঝে ন্যায়নৈতিকতা, শ্রদ্ধাবোধ ও প্রকৃত মনুষ্যত্ব বিদ্যমান থাকে। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা অর্জনের বাইরেও প্রতিটি মানুষের অনেক কিছু শেখার বিষয় রয়েছে। আর এই একাডেমিক শিক্ষার বাইরে মানুষ প্রকৃত জ্ঞানী ও মনুষ্যত্ববোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে একটি পরিবার থেকে। আর এই পরিবারে এই সুশিক্ষাদানে বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে মা বাবা এবং পরিবারের সদস্যরা।
সমাজে চলার জন্য সমাজের রীতিনীতি, আদবকায়দা, অপরের সঙ্গে আচরণ, অপরিচিতদের সঙ্গে আচরণ ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা অর্জন করা অতীব জরুরি। সন্তানকে এই শিক্ষাগুলো সঠিক সময়ে দিতে না পারলে বড় হয়ে তারা ভ্রষ্টতার পথ বেছে নেয়, তাদের মাঝে থাকে না কোনো শ্রদ্ধাবোধ, তাদের আচার আচরণ এতটাই হিং¯্রতায় পরিণত হয় যার দরুন তারা সকলের ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়। আর এর জন্যই সমাজ কলুষিত বর্বরতাপূর্ণ হয়ে যায়, এই কলুষিত সমাজকে সুন্দর সুশৃঙ্খল সমাজ গঠনে সন্তানকে আদর্শিক শিক্ষা দেওয়া অভিভাবকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তাইতো এপিজে আবুল কালাম আজাদ বলেছেন- ‘আমরা আজকের দিনটি উৎসর্গ করি যেন আমাদের শিশুরা একটি সুন্দর আগামী পেতে পারে।’ তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে যদি অভিভাবকরা সন্তানকে সুশিক্ষাদানে সময় ব্যয় করে তাহলে এই সন্তানরাই আগামীতে সুন্দর একটা সমাজ, রাষ্ট্র উপহার দেবে। সন্তানকে সুশিক্ষাদানে সব থেকে গুরুদায়িত্ব পড়ে মা বাবার ওপর।
হাদিসে বলা আছে নবী (সা.) বলেন- কোনো পিতা তার সন্তানকে ভালো আদব তথা শিষ্টাচার শিক্ষা দেওয়া থেকে উত্তম কোনো পুরস্কার দিতে পারে না।’ (তিরমিযি শরীফ)
সমাজে চলতে হলে সমাজের স্বার্থে প্রয়োজনীয় রীতিনীতি মেনে চলা একজন আদর্শিক মানুষের বৈশিষ্ট্য। সেই সঙ্গে সন্তানকে শিক্ষা দিতে হবে যে বড়দের প্রতি সর্বদাই শ্রদ্ধাশীল হওয়া, ছোটদের স্নেহ করা, অন্যের সঙ্গে কথা বলার সময় ভদ্রতা বজায় রাখা, অচেনা লোকদের সঙ্গে ভালো আচরণ করা। পরিবার সমাজ, রাষ্ট্রের ক্ষতি হয় বা ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কোনো কাজ না করা।
একজন ছেলে হয়ে মেয়েদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ থাকা অত্যন্ত জরুরি এবং তাদেরকে সুদৃষ্টিতে দেখা। সেই সঙ্গে মেয়েদেরকেও ছেলেদের প্রতি ধারণাটা এমন থাকা উচিত যেন তারাও আমার ভাইয়ের মতো। যদি এই সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গিটা ছেলেমেয়ে উভয়ের মাঝে বিদ্যমান থাকে তাহলে তারা একে অপরের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে কখনোই কোনো রকম বিপদে
পড়বে না।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে