ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১

সুশিক্ষাতেই সুসন্তান

আফরিনা আক্তার

প্রকাশিত: ২০:৪৮, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সুশিক্ষাতেই সুসন্তান

প্রকৃত শিক্ষা মানুষের ধ্যান-ধারণাকে সংস্কার করে

প্রকৃত শিক্ষা মানুষের ধ্যান-ধারণাকে সংস্কার করে, জাগ্রত করে অন্তর্নিহিত শক্তিকে। কিন্তু সেই শিক্ষাকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে নৈতিক শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। নৈতিক শিক্ষার প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হলো পরিবার। একটি শিশু জন্মের পর  থেকেই পারিবারিক আচার-আচরণ,  শিক্ষা- দীক্ষা, ন্যায়- নিষ্ঠা, নিয়মকানুন সবকিছুই অর্জন করে পরিবার থেকে।  পারিবারিক এই শিক্ষা একটি শিশুর জীবনকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে। ভবিষ্যৎ ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে  নৈতিক শিক্ষার গুরুত্ব অত্যধিক।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থিত বিদ্যা অর্জন করলেই পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা অর্জন করা যায় না। বর্তমানে গ্রন্থিত শিক্ষাকে প্রাধান্য দিলেও নৈতিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। যার কারণে সমাজে অস্থিরতা,  নৈতিকতার অবক্ষয় ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা বেড়েই চলেছে। মানুষে মানুষে হানাহানি,ঝগড়া-বিবাদ, নানা অনিয়ম, অন্যায়-অত্যাচার যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। সমাজে নৈতিকতার প্রাধান্য থাকলে সামাজিক এসব অন্যায় পাপাচার এত সক্রিয় থাকতো না। তাই স্কুল-কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি  প্রয়োজন নৈতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করা।

এজন্য একটি শিশুকে শৈশবেই নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। শিখাতে হবে পরিবারের সবার সঙ্গে কেমন আচরণ করা উচিত। যেমন, ছোটদের প্রতি বড়দের শ্রদ্ধা বড়দের প্রতি ছোটদের সম্মানস্বরূপ আচরণ, ঘরে ও বাইরে  বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কেমন আচরণ করা উচিত, অসহায়কে সাধ্যমতো সহায়তা করা, কারও বিপদে সহায়তা করা,  দুঃখীদের দুঃখে ব্যথিত হওয়া, শিশুর মানবতাবোধকে জাগ্রত করাসহ সকল গুণাবলীকে উন্মোচন করানোই পরিবারের দায়িত্ব। তাছাড়া একটি শিশুর মনুষ্যত্ববোধকে জাগানো,  দেশপ্রেম ও দেশের কল্যাণে নিজেকে সচেষ্ট থাকার নির্দেশনাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে নৈতিক শিক্ষা অর্থাৎ পারিবারিক শিক্ষায়।

শিশুকে শিখাতে হবে সমাজের সবার সঙ্গে কেমন আচরণ করতে হয়, ছেলে শিশুকে জানতে হবে মেয়ে শিশুর সঙ্গে কেমন আচরণ করা উচিত। এক্ষেত্রে অবশ্যই পরিবারের বাবা-মাসহ অন্যরাও দিকনির্দেশনা দিবেন। কারণ ভালো অথবা খারাপ সকল কিছুই পরিবার ও আশপাশে মানুষদের দেখে শিখে নেয়। পরিবারের কেউ যদি কোনো অনিয়ম বা অন্যায় আচরণ করে তবে সে আচরণই এই শিশুর জীবনকে প্রভাবিত করবে। এজন্য পরিবারের সকলের উচিত অন্যায় ও খারাপ আচরণ পরিত্যাগ করা।

এমন  কোনো আচরণ না করা যাতে শিশুর আচরণে খারাপ কিছু প্রতিফলন ঘটে। তাছাড়া ছেলে শিশু ও মেয়ে শিশুর সমতা ও উভয়ের সমঅধিকার চর্চাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। শিশু ছেলে  হোক আর মেয়ে হোক তাদের জানতে হবে কোনটি ভালো স্পর্শ এবং কোনটি খারাপ স্পর্শ। তাদের আগামীর পথ সম্পর্কে এবং তাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে সতর্ক করা অভিভাবক অর্থাৎ পরিবারে দায়িত্ব। তাই নৈতিক শিক্ষা অর্থাৎ পারিবারিক শিক্ষায় গুরুত্বারোপ করে প্রত্যেক মানুষের উচিত নিজেদের সমাজ ব্যবস্থার সংস্কার করা। তাহলেই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ আরও সুগঠিত হবে।
 সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা থেকে

×