ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১

স্বচ্ছ হোক মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া

ওবায়দুল কবির

প্রকাশিত: ২১:১৫, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্বচ্ছ হোক মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া

মালয়েশিয়া সরকার নতুন করে প্লান্টেশন খাতে বিদেশী কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত

মালয়েশিয়া সরকার নতুন করে প্লান্টেশন খাতে বিদেশী কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশটির সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় শুরু করেছে কর্মী নিয়োগের কোটা অনুমোদন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন। তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মালয়েশিয়া সরকার নতুন করে তাদের প্লান্টেশন খাতে বিদেশী কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নানা জটিলতায় তারা বিদেশী কর্মী নিয়োগ বন্ধ করে রেখেছিল। বাংলাদেশ হাইকমিশন প্লান্টেশন সেক্টরের চাহিদাপত্র ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সত্যায়ন করছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। বাংলাদেশের জন্য এটি খুবই ভালো একটি সংবাদ। মালয়েশিয়া আমাদের রেমিটেন্সের বড় একটি বাজার। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আরও কর্মী পাঠাতে পারলে রেমিটেন্সের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে।
মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র সত্যায়নের জন্য যেসব কাগজপত্র লাগবে তার একটি তালিকাও দিয়েছে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনারের বিজ্ঞপ্তিতে। এর মধ্যে রয়েছে কোম্পানির অনুমোদনপত্র, সত্যায়ন ফি’র মূল ব্যাংক স্লিপ, শ্রমিকদের সর্বশেষ বেতন স্লিপ, কোম্পানির পটভূমি তথ্যের একটি প্রোফাইল, ২/৩ জন শ্রমিকের ফোন নম্বর, কোম্পানির বিগত তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট ইত্যাদি।

এছাড়া প্রয়োজন হবে বিদেশী শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ প্রকল্পের সকসো নথি, বিদেশী কর্মীদের হাসপাতালে ভর্তি এবং সার্জিকা ১ স্কিমের নথি, বিদ্যমান শ্রমিকদের আবাসন সম্পর্কে জেটিকে অনুমোদিত সার্টিফিকেট, জমির মালিকানার দলিল/জমি ইজারা দলিল, গ্যারান্টি পত্র, পরিচালকের স্বাক্ষরিত ডিমান্ড লেটার, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি, কর্মসংস্থান চুক্তি, রিক্রুটিং এজেন্ট (বিআরএ) এবং কোম্পানির মধ্যে চুক্তি, মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কর্তৃক কোটা অনুমোদন পত্রসহ সকল নথির ২ সেট  তৈরি করে ১ সেট মূল এবং ১ সেট অনুলিপি হিসেবে দিতে হবে।

চাহিদাপত্রের দীর্ঘ তালিকায় বোঝা যাচ্ছে, চাহিদাপত্র সত্যায়নের আগে হাইকমিশন নিশ্চিত হতে চায় এর মধ্যে কোনো অনিয়ম নেই। 
এত কিছুর পরও ঝামেলা থেকেই যায়। অতীতে দেখা গেছে, সকল শর্ত লঙ্ঘন করে ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে হাইকমিশন থেকে সত্যায়ন নেওয়া হয়। এগুলো পরে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের কাছে ধরা পড়লে এসব কর্মীকে ফেরত পাঠানো হয় অথবা জেলে দেওয়া হয়। এভাবেই মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারকে নষ্ট করেছে একশ্রেণির লোভী ব্যবসায়ী।

তাদের কারণে বারবার হোঁচট খেয়েছে এই সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার। সর্বশেষ বন্ধ হয়েছিল চলতি বছর পহেলা জুন তারিখে। সময় বেঁধে দেওয়ার কারণে সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেও পরিবহন সংকটে তখন যেতে পারেনি ১৭ হাজার কর্মী। এই দফায় অবশ্য ৪ লাখ ৭৬ হাজার কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পেরেছিল। তবে তাদেরকে গুনতে হয়েছে নির্ধারিত অর্থের কয়েকগুণ বেশি।  
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালের প্রথম দিকে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল। এর আগে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে, চিঠি চালাচালি হয়েছে প্রচুর। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রীর ঢাকা সফরের সময় অনুষ্ঠিত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে শর্তসাপেক্ষে শ্রমবাজার উন্মুুক্ত করা হয়।

শর্তের মধ্যে ছিল ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সির একটি সিন্ডিকেটই কেবল মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে পারবে। সাব-এজেন্ট থাকবে ২৫০টি। বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয় কর্মীদের ন্যূনতম বেতন হবে ১৫শ’ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত। অভিবাসন ব্যয় হবে সব মিলিয়ে এক লাখ ৬০ হাজার টাকার কম। বাংলাদেশ প্রান্তের কিছু খরচ বহন করবে কর্মী নিজে।

আসা-যাওয়ার বিমান টিকিট থেকে শুরু করে অন্য সব খরচ বহন করবে মালয়েশিয়ান নিয়োগকর্তা। কোনো এজেন্সি বা নিয়োগকর্তা শর্ত ভঙ্গ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক বছরেই দুই লাখ কর্মী নেবে মালয়েশিয়া। পাঁচ বছরে যাবে আরও পাঁচ লাখ। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর চাপের মুখে সিন্ডিকেটে বাড়ানো হয়েছিল এজেন্সি সংখ্যা।

২৫টি থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছিল ১০১টি। এজেন্সি বাড়লেও দূর করা যায়নি দুর্নীতি। সিদ্ধান্তগুলোও খুব একটা কার্যকর হয়নি। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্ত ছিল ভুল। কারণ শর্ত ভঙ্গ করে কর্মীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে ৫/৬ লাখ টাকা পর্যন্ত।  
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য আকর্ষণীয় ছিল বরাবর। আবহাওয়া, কাজের পরিবেশ, খাদ্য ইত্যাদি অনেকটাই বাংলাদেশের মতো। দূরত্ব বিবেচনায়ও বাংলাদেশীদের জন্য অনুকূল। নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছেও বাংলাদেশী কর্মীদের চাহিদা ব্যাপক। শারীরিক সক্ষমতা, কাজের প্রতি আন্তরিকতা এবং আনুগত্যই এই চাহিদার কারণ।

১৯৮০ ও ৯০ দশকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার একতরফাভাবে দখল করে রেখেছিল বাংলাদেশ। ১৯৭৮ সাল থেকে শুরু হয়ে মালয়েশিয়ায় গেছেন লাখ লাখ কর্মী। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মালয়েশিয়া বাংলাদেশী কর্মীর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। ’১৮ সালের প্রথম ৯ মাসেই মালয়েশিয়ায় গেছেন এক লাখ ৭৫ হাজার কর্মী। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার হচ্ছে মালয়েশিয়া। 
বাংলাদেশী শ্রমিক প্রেরণকারী এজেন্সিগুলোর অতিমুনাফার লোভ এবং নানা অনৈতিক কর্মকা-ে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের একতরফা নিয়ন্ত্রণ শিথিল হতে থাকে। প্রতিযোগিতা শুরু হয় ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপিন্সের সঙ্গে। অনিয়ম চরম আকার ধারণ করলে বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য বন্ধ হয়ে যায় এই আকর্ষণীয় শ্রমবাজার।

অনেক বৈঠক এবং চিঠি চালাচালির পর ২০১৫ সালে এমনই একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য বাজার উন্মুক্ত করা হয়। তখনও ১০টি এজেন্সির সিন্ডিকেটে লোক নিয়োগের শর্ত দেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে জিটুজি পদ্ধতিতে প্রথমে কর্মীপ্রতি ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৭ হাজার টাকা। পরে তা বাড়িয়ে করা হয় এক লাখ ৬০ হাজার টাকা। এর মধ্যে আসা-যাওয়ার বিমান টিকিটের খরচ নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের বহন করার কথা ছিল।

বাস্তবে কোনো শর্তই পালন করা হয়নি। কর্মীদের কাছ থেকে  তিন থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে। কর্মী পাঠানোর জন্য ১০টি এজেন্সির সিন্ডিকেট হলেও ব্যবসা ও মুনাফা করেছে মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠান। বাকি ৬টি এজেন্সিকে কোনো কাজ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। 
অনেক চিঠি চালাচালি ও দেন দরবারের পর ’২২ সালে আবারও চালু হয় মালয়েশিয়া শ্রমবাজার। এবার ১০ এজেন্সির পরিবর্তে ২৫টি এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। পরে এটি বৃদ্ধি করে করা হয়েছিল ১০১টি। সে সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘সরকারিভাবে বৈধ এক হাজার ৫২০ এজেন্সি রয়েছে। গোটা তালিকাই মালয়েশিয়া সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।

সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী তালিকা থেকে বাছাই করার অধিকার মালয়েশিয়ারই। কারণ তারা বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেবে। তারাই এই ২৫টি এজেন্সি বাছাই করেছে।’ বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশ  থেকে মালয়েশিয়া জনশক্তি নেয়। কিন্তু বাংলাদেশ ছাড়া আর সব দেশ নিজেরাই রিক্রুটিং এজেন্ট ঠিক করে দেয়। বাংলাদেশ তার ব্যতিক্রম কেন? সমঝোতা স্মারকে এভাবেই চুক্তি করা হয়েছিল।  
জনশক্তি রফতানির সঙ্গে জড়িত একাধিক রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক জানিয়েছেন, এমন অবস্থা সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশের এজেন্টরাই দায়ী। তারা অতীতে অনেক অনৈতিক কাজ করেছে। অনাকাক্সিক্ষত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অভিবাসন ব্যয় করা হয়েছে আকাশছোঁয়া। কর্মীদের তা বহন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে। এর পরও অনেক কর্মী পাঠানো হয়েছে অবৈধ পথে।

ধরা পড়ে এরা জেল-জুলুম খেটে সর্বস্ব হারিয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছে। এসব ঘটনায় দুই দেশই বিব্রত হয়েছে বারবার।  শেষ পর্যন্ত অনেক দেনদরবারের পর মালয়েশিয়া সরকার জিটুজি পদ্ধতিতে কর্মী নিতে রাজি হয়েছে। এজেন্ট বাছাই করার অধিকার মালয়েশিয়া সরকার চেয়ে নিয়েছে। কর্মী নিয়োগের স্বার্থে বাংলাদেশও খুব একটা আপত্তি করতে পারেনি। বাস্তবে এই পদ্ধতিও খুব একটা কাজে লাগেনি।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানোর সিন্ডিকেটের মতো গড়ে উঠেছে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর চক্র। অভিবাসন ব্যয় বাড়িয়ে রাতারাতি লুটপাট করাই তাদের উদ্দেশ্য। সেই সময় জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সম্মিলিত সমন্বয় ফ্রন্ট এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মী প্রেরণে সকল বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য বাজার উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছিলেন।

২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী রপ্তানির ফলে দেশের বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছিল বলেও তারা দাবি করেন। সে সময় কর্মী যাওয়ার কথা ছিল ১৫ লাখ। বাস্তবে মাত্র ২ লাখ ৭৪ হাজার ৫০০ কর্মী যেতে  পেরেছে। তাও আবার নির্ধারিত খরচের অনেক বেশি তাদের পরিশোধ করতে হয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এমন সিন্ডিকেট অনৈতিক কাজেরই সুযোগ করে দেয়।  
শ্রমবাজার বিশ্লেষকরাও সব সময় এই সিন্ডিকেটের বিপক্ষে মত প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, অতীতে এই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য সবাই দেখেছে। ১০ এজেন্সির সিন্ডিকেট দরিদ্র-অসহায় কর্মীদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে টাকা লুটে নিয়েছে। অনিয়মের কারণে বন্ধ হলে গিয়েছিল মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। একইভাবে ১০১ এজেন্সির সিন্ডিকেট করেও হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে।

মালয়েশিয়া সরকার আবারও শ্রম বাজার খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া দিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া হরে কি পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। শোনা যাচ্ছে পুরনো সিন্ডিকেট আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রম অভিবাসনের প্রবাহকে বারবার যারা ব্যাহত করেছে সেই সিন্ডিকেট ব্যবস্থা ভেঙে ফেলা জরুরি। বাংলাদেশের সকল নিবন্ধিত রিক্রুটিং এজেন্টকে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

এজন্য অবশ্য সংশোধন করতে হবে দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত সমঝোতা স্মারকটির সংশ্লিষ্ট ধারা। দুই দেশের সিন্ডিকেট ব্যবস্থায় অনিয়মের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের জবাবদিহি করা প্রয়োজন। দুর্নীতি ও জালিয়াতির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষকেও অনুরূপ অনুরোধ করা যায়।

নিয়োগ সংক্রান্ত সকল শর্ত সরকারকে মনিটরিং করতে হবে। নিয়োগ ফি, সরকারি চার্জ, মেডিক্যাল পরীক্ষাসহ সব লেনদেন চেকে হবে এবং কর্মীদের এ ধরনের অর্থ প্রদানের জন্য যথাযথ রসিদ সরবরাহ করতে হবে। কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক তালিকাভুক্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, কোনো অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ার জন্য কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। 

মালয়েশিয়া আমাদের অন্যতম শ্রমবাজার। এক সময় এই বাজার বাংলাদেশীদের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণে ছিল। রাতারাতি অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে অনৈতিক প্রতিযোগিতায় এই বাজার বারবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এই সুযোগে ঢুকে পড়েছে আরও কয়েকটি দেশ। নীতি-নৈতিকতা মেনে কর্মী পাঠানোর কারণে এই দেশগুলো এখন অনেকটাই দখল করে নিয়েছে মালয়েশিয়ার বাজরটি।

এখনো সম্ভাবনা ফুরিয়ে যায়নি। এই বাজারে বাংলাদেশী কর্মীদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সবাই আশা করছে, অন্যান্য সেক্টরের মতো মানব সম্পদ রপ্তানি খাতও দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছ হবে। এটি করতে পারলে আমাদের অর্থনীতির মূল নিয়ামক শক্তি রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে আরও অনেকটা। 

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, জনকণ্ঠ

×