ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা

-

প্রকাশিত: ২০:২৮, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা

সম্পাদকীয়

যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও অর্থ দপ্তরের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেন। এই সফরের উদ্দেশ্য প্রধানত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ- দেশ পুনর্গঠন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং বিদেশে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সেদেশের সহযোগিতা কামনা।

উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে উচ্চ পর্যায়ের কোনো প্রতিনিধি দলের এটাই প্রথম ঢাকা সফর। মূলত, বাংলাদেশ পুনর্গঠনে বর্তমান সরকারের করণীয় কি এবং কোথায় কোথায় যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য ও সহযোগিতার সুযোগ আছে তা বোঝা ও জানার জন্যই এই সফর। আরও যা উল্লেখ্য, গত দুই দশকের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও অর্থ বিভাগ থেকে উচ্চ পর্যায়ের কোনো প্রতিনিধি দলের এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। এ থেকেই বোঝা যায় যে, বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচিতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার বিষয়টিকে ওয়াশিংটন কতটা গুরুত্ব দিয়ে থাকে। 
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের কাছে তাঁর সরকারের গৃহীত রূপরেখা তুলে ধরে বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর স্বল্প সময়ের মধ্যে ভোট কারচুপি প্রতিরোধে নির্বাচন কমিশন সংস্কার, বিচার বিভাগ, পুলিশ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ৬টি কমিশন গঠন করা হয়েছে।

এর পাশাপাশি বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিদেশে বিপুল পরিমাণের অর্থ পাচার এবং পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে যথাসাধ্য সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বের বৃহত্তম প্রভাবশালী পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে সময়ে সময়ে যৎসামান্য টানাপোড়েন পরিলক্ষিত হলেও দেশটি দুই দেশের স্থায়ী অংশীদারিত্বকে গুরুত্ব দেয় সমধিক। এই কথাটি উঠে এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বক্তব্যেও, যা তিনি লিখিতভাবে বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র গ্রহণকালে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে করোনা প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি ভ্যাকসিন দিয়েছে। দু’দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
দেশ পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস মিলেছে, যা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত, অর্থ ও বাণিজ্যÑ এ দুটি দিক নিয়ে বারবার আলোচনার উদ্যোগ থেকে বোঝা যায়, দুদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক  আরও সম্প্রসারণের ওপর দেশটি গুরুত্ব দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রধান ক্রেতা। এর পরিমাণও বাড়ছে দিন দিন।

দেশের ৩১টি বিখ্যাত ব্র্যান্ড ও পোশাক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে আগামী দুই বছরে আরও পোশাক কেনার আগ্রহ দেখিয়েছে। আশা করা যায় যে, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে জেএসপি সুবিধা প্রদান করা হলে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বাড়বে বহু গুণ।

×