ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১

জয়ের অনবদ্য ইতিহাস

অলিউর রহমান ফিরোজ

প্রকাশিত: ২০:৫০, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জয়ের অনবদ্য ইতিহাস

বাংলাদেশ দেখল টাইগারদের হুঙ্কার

বাংলাদেশ দেখল টাইগারদের হুঙ্কার। তাদের গর্জে ওঠা। রয়েল বেঙ্গল টাইগাররা যখন গর্জে ওঠে তখন তাদের সামনে কেউ দাঁড়াতে পারে না। পাকিস্তানের মাটিতে তাদের হোয়াইট ওয়াশ ইতিহাসের স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়ে থাকবে এ সিরিজটি। দেশে রাজনৈতিক উত্তাল তার উপরে ক্রিকেট বোর্ডে নতুন মুখ। অনিশ্চিত জীবন ধারা মাঝেও তাদের পারফর্মস যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে তা ভাবা যায় না। আমাদের ছেলেরা যে একটু ভালো সুযোগ এবং সুবিধা পেলে জ্বলে উঠতে পারে তা এবারে বোঝা গেছে।

ক্রিকেট থাকবে সকল দলীয় সংকীর্ণতার বাইরে। সকল প্রপাগান্ডা এড়িয়ে ক্রিকেটকে রাখতে হবে তার স্বতন্ত্রধারায়। তাহলেই বারবার ক্রিকেট জেগে উঠবে। দেশের মানুষও তাদের খেলা দেখে প্রাণটা জুড়াতে পারবে। ২৪ বছর পর বাংলাদেশ দেখাল ঝড়ো হাওয়া টেস্ট ক্রিকেট। যা ইতিহাসের অন্যতম অধ্যায় হয়ে থাকবে। পাকিস্তানের গতিশীল বোলার শোয়েব আক্তারের ঘরের মাঠেই ১৫০ কিলোমিটার গতিতে দুর্দান্ত বোলিংয়ে যে গতিতে যে ঝড় বইয়ে দিল তাতে পাকিস্তান শিবির লন্ডভন্ড হয়ে যায়।

আগে যেখানে বাংলাদেশ হেরে যাওয়ার আগেই হেরে যেত, মানসিক চাপে থকতো তার বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে খেলায়। খাদের কিনারায় পড়ে গেলে কিভাবে সামলে আবার ঘুরে দাঁড়াতে হয় তা আমাদের টাইগাররা বুঝে গেছে। ওপেনার সাদমান ইসলাম অনিকের ১৮৩ বলে ৭টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৯৩ রানের হিসাবটা জটিল সমীকরণ অনেক সহজ হয়ে যায়। খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলতে বড় ধরনের সহায়ক হয় তার ইনিংসটি।

মুসফিক রহিমের ৮ ঘণ্টা ৪২ মিনিটের ৩৪২ বলে ১৯১ রানের ইনিংসটা ছিল অনবদ্য। এখানেই ম্যাচ ঘুড়ে দাঁড়ায়। তার ২২ চার এবং ১টি ছক্কায় যে ধৈর্যশীলতার পরিচয় দেন তা ছিল অবভাবনীয়। তাছাড়া অল রাউন্ডার হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজ বিরাট ভূমিকা পালন করেন। বোলিংয়ে কিছুটা ঘাটতি থাকলেও সেটা ব্যাটিংয়ে পুষিয়ে দেন। ১৭৯ বলে ৬টি চার মেরে ৭৭ রানের ইনিংস এবং দ্বিতীয় টেস্টেও প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে করেছেন ১২৪ বলে ৭৮ রান।

বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ২৬ রান  হারিয়ে বিপদে পড়ে যাওয়ার পর দলকে খাদের কিনারা থেকে তুলতে লিটন দাসের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে গড়েন রেকর্ড ১৬৫ রানের জুটি। দুই টেস্টে ১০ উইকেট আর ১৫৫ রান করে সিরিজ সেরা হন মিরাজ। এ টেস্টে হাসান মামুদের কীর্তি কম নয়। পর পর দুই ওভারে দুই উইকেট তুলে পরে আরও ৩ উইকেট নিয়ে ইনিংসে মোট ৫ উইকেটের ভালো কীর্তিতে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

নাহিদ রানা ক্রিকেট মাঝে ঝড়ো বাতাস তুলে ভয়াবহ গতি দেখিয়েছেন। তাতইে প্রতিপক্ষের কাঁপন ধরে যায়। তিনি ১৫০ কিলোমিটার বেগে বল করেন এবং ৬ উইকেট শিকার করেন। সব মিলিয়ে পুরো টিমের একটা ভালো বোঝা পড়ার জন্যই ইতিহাস সাক্ষী হয়ে থাকবে আমাদের এ টেস্ট জয়।                                                                                                          
রিকাবীবাজার, মুন্সীগঞ্জ থেকে

×