ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১

বদলে যাওয়া বাংলাদেশ

নাজনীন বেগম

প্রকাশিত: ২০:১৭, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বদলে যাওয়া বাংলাদেশ

কোটা সংস্কার থেকে সরকার পতনের আন্দোলনে যে নতুন দিগন্ত সম্প্রসারিত তা দেশ জাতির অনন্য অর্জন। সমাজ এবং রাষ্ট্রের সময়োপযোগী, প্রাসঙ্গিক যৌক্তিক পরিবর্তন, পরিবর্ধন শুধু সময়ের চাহিদা নয়, ঐতিহাসিক বরমাল্যও বটে। সুদীর্ঘ শাসনের নানামাত্রিক বিপন্নতা পুরনো সমাজের গভীরে যে বেসামাল পরিস্থিতি তাও নাকি ইতিহাসের অমোঘ বিধান।

সেই সৃষ্টির ঊষালগ্ন থেকেই পরিবর্তনের যে শুভ সূচনা তাও বন্য আদিম মানুষের সামনে নবদিগন্ত উন্মোচন। নৃ সমাজবিজ্ঞানী লুইস হেনরি মর্গান তারআদিম সমাজগ্রন্থটিতে এমন ধারাবাহিক পর্যায় বানর হতে মানুষের বিবর্তনের রূপরেখা দেন। বন্য থেকে পুরনো প্রস্তরের যুগ এক লাগাতার পর্যায়ক্রম।

সেখান থেকে নতুন পাথরের নবঅধ্যায় আর এক বিশ্ব সৃষ্টির পরম রহস্য। পরপরই পাথরের ঘর্ষণে আগুনের আবিষ্কার যেন সভ্যতা সূর্যের নব অভ্যুদয়। পালাক্রমে হরেক সামাজিক স্তর পার হয়ে মানবসভ্যতা যখন আলোর মুখ দেখে সেখান থেকেই সামাজিক প্রতিষ্ঠানের শুভ সূচনা। সেইভাবে পরিবারই পৃথিবীর আদিম এবং অকৃত্রিম প্রতিষ্ঠান। ধর্ম, রাষ্ট্র, অর্থনীতি, সংস্কৃতি সবই ভিন্ন ভিন্ন আদলে সামাজিক সংহতি দৃঢ় করতে নিয়ামকের ভূমিকা পালন করে। তেমনই রাষ্ট্রও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ সূচক। আদিম সমাজে রাষ্ট্রের কোনো নির্দিষ্ট কাঠামো ছিল না। বিভিন্ন গোত্রে আবদ্ধ আদিম মানুষের জীবনাচরণ গোষ্ঠীকেন্দ্রিক হলে গোত্র প্রধানই সামাজিক দায়ভার নিত নির্দিষ্ট শ্রেণির। আর তাই মানবসভ্যতাকে অপেক্ষমাণ থাকতে হয়েছে রাষ্ট্র নামক সামাজিক প্রতিষ্ঠানের জন্য বহু যুগ। রাষ্ট্রযন্ত্রের উত্থান, বিকাশ আর পতনে মূল নির্ণায়ক শক্তি শাসক শ্রেণি। যার হাতে সর্ববিধ ক্ষমতা পুঞ্জীভূত থাকে। অনেক ক্ষেত্রে একচ্ছত্র আধিপত্যের বিস্তারও বলা যায়। আমার আলোচ্য বিষয়ই রাষ্ট্রতত্ত্ব থেকে রাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং তার সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য শাসকগোষ্ঠী। আধুনিক রাষ্ট্রতত্ত্বের প্রথম ধারণা পাওয়া যায় আরব মনীষী ইবনে খালদুনের তাত্ত্বিক আলোচনায়। চতুর্দশ শতকের এই বিজ্ঞ ইতিহাসবিদ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আফ্রিকার তিউনিসে ১৩৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। সেই সময়ে চলছিল প্লেগ মহামারির। অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর ভয়াবহতা নাকি ইবনে খালদুনের হৃদয়ে গভীর ক্ষত তৈরি করে। যেখানে তিনি হারান পিতা-মাতা-ভাইসহ বহু নিকটাত্মীয়স্বজন। তবে মহামারির ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও খালদুনের তৈরি হওয়া জীবন ছিল এক গভীর অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন বোদ্ধা আর বিজ্ঞজনের অরুণোদয়ের নবদীপ্তি। নিজেকে সমাজের উপযুক্ত হিসেবে তৈরি করাই শুধু নয়, বরং রাষ্ট্রীয় উচ্চ পদে আসীন হওয়াও ছিল সমৃদ্ধ জীবনের অনন্য যাত্রাপথ।

বিভিন্ন রাজবংশের সিংহাসন নিয়ে লড়াই-সংগ্রামের ইতিবৃত্ত খালদুনকে রাষ্ট্রীয় তত্ত্ব উদ্ভাবনে প্রাসঙ্গিক তথ্য-উপাত্ত দিতেও ভূমিকা রাখে। তেমন রাষ্ট্রজ্ঞানসমৃদ্ধ পরম আলেখ্যমুকাদ্দিমা বাস্তবভিত্তিক রচনাশৈল আজও ইতিহাসবিদ, সমাজ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের পাথেয়, যা ন্ডি মহলে তাত্ত্বিক প্রস্তাবনা হিসেবে বহুল পরিচিত খ্যাত। যাতে তিনি মানবসমাজ, রাষ্ট্র, খেলাফত, সাম্রাজ্য, যাযাবর সমাজ, নগরায়ণ, বাণিজ্য, অর্থনীতি প্রযুক্তির কলাকৌশল নিয়েও তার অন্তর্নিহিত বোধ, বিজ্ঞতা আর পান্ডিত্যের অনন্য নিদর্শনের চিরস্থায়ী নজির। ক্ষুরধার জ্ঞানগর্ভ লেখনীতে সমসাময়িককালে তাকে এক ব্যতিক্রম ন্ডি হিসেবে চিহ্নিত করাও তৎকালীন অবস্থার আর এক নবঅধ্যায় সংযোজন তো বটেই। ইবনে খালদুন আগ্রহ তৈরি করেন রাষ্ট্রের উৎপত্তি, বিকাশ অবক্ষয়ের যথার্থ নিশানা, যা প্রসিদ্ধও বটে। বলা হয় তিনি কোনো পূর্বসূরিকে অনুসরণ করেননি। ছিলও না সে সময় তার আগের কোনো বিজ্ঞজন।  আরও অবাক বিস্ময় উত্তরসূরি হয়েও নাকি কাউকে কয়েক শতক কেউই দেখতে পেল না। অবিস্মরণীয় এক ঐতিহাসিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সমাজবিদের আসন অলঙ্কৃত করা যশ্বস্বী রাষ্ট্রতত্ত্বের সময়ের ধারাবাহিকতায় ব্যক্তিত্ব। বংশপরম্পরা রাজন্যবর্গের যে ইতিহাস বিধৃত সেখানে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া ইবনে খালদুনের মহান কীর্তি। সমকালীন রাষ্ট্রযন্ত্রে রাজন্যবর্গের উত্থান-পতনে বিশ্বজুড়ে ছিল রাজা মহারাজার বংশানুক্রমিক শাসন আর দাপট। তাই বিজ্ঞ খালদুন সেখানেই তার রাষ্ট্রতন্ত্রের ব্যাখ্যা ছাড়াও সময় নির্ধারণকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রাখলেন। সময়টা দীর্ঘ হলেও কোনো এক জায়গায় সীমানা তো টেনে দিলেন রাষ্ট্রতত্ত্ববিদ খালদুন।

সুনির্দিষ্ট তাত্ত্বিক বাস্তবিক অভিব্যক্তিতে দৃঢ়কণ্ঠে মত দিলেন কোনো শাসকবর্গই রাজা হোক কিংবা রাষ্ট্রনায়ক তার বংশপরম্পরায় সময় ১০০ থেকে ১২০ বছর। সেটা ছিল মধ্যযুগের আর এক বর্বরতার পালাক্রম। আধুনিক শিল্পোন্নত সভ্য সমাজে বংশানুক্রমিক রাজবংশের তেমন কোনো চিহ্ন নেই বললেই চলে। ব্রিটিশ সংবিধানের বিষয় এখানে উল্লেখ্য নয়। কারণ রাজা বংশানুক্রমিকভাবে সাক্ষী গোপালের মতো থাকেন। মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। আর প্রধানমন্ত্রীই সাংবিধানিকভাবে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। এটাই আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার আইনগত বিধান। যার ব্যত্যয় করা মানেই স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, বিশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার চরম একনায়কতন্ত্র। সেখানে জনগণের আস্থা, বিশ্বাসের জায়গা থাকে না। ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগও হারাতে বসে অতি সাধারণ জনগোষ্ঠী, যা আধুনিক উন্নত প্রযুক্তির যুগে সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনার ওপরও চরম বিধ্বংসী।

আমরা যদি স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট আলোচনায় আনি তাহলে বুঝতে অসুবিধা হয় না শাসকদলের বিভিন্ন কার্যকর ক্ষমতার দাগটিকে কোথায় নিয়ে যায়, আধুনিক রাষ্ট্রযন্ত্রকে নানামাত্রিকে কিভাবে ব্যাহত, বিঘিœ করে। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশ। মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলের দুঃসহ পরিণতিতে সার্বিক দেশের জন্য মঙ্গলজনক হয়নি। সেখানে কোনো পুঁথিগত তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ যৌক্তিকভাবে তোলাও যায়নি। তেমন পালাক্রমে ১৯৮১ সালে সামরিক শাসক এরশাদ ক্ষমতায় আসলেন। লাগাতার নয় বছর ক্ষমতায় থেকে এক চরম গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি।

পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জনগণের ভোটাধিকারের ভিত্তিতে ১৯৯১ সালের নির্বাচন সর্বজনস্বীকৃতি লাভ করে। এরপরে ১৯৯৬, ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সারা জাতির মধ্যে বিপুল সাড়া জাগানো নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার নব অধ্যায়। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনও জনগণের ভোটাধিকারের ভিত্তিতে জাতিকে বহু কাক্সিক্ষত স্বপ্নের দরজায় পৌঁছে দেওয়ার লাগাতার পালাক্রম। দেশের যথার্থ জাতীয় নির্বাচনের এটাই মনে হয় শেষ অধ্যায়। ২০১৪ সালের নির্বাচন থেকে যা শুরু করা হয় সেটা একদলীয় শাসন ব্যবস্থার অগণতান্ত্রিক পর্যায় বললে অতিকথন নয় কিন্তু। ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল ১০ বছরের একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিকরা তাদের ভোটাধিকার থেকে যে মাত্রায় বিচ্ছিন্ন থেকেছে সেটা দেশের ভাবমূর্তি বিভিন্নভাবে লুণ্ঠিত হতেও সময় লাগেনি। মনে হচ্ছিল এরশাদের নয় বছরের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অগণতান্ত্রিক পর্যায়কে যেন আরও মারাত্মক আকারে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া। বাইরে থেকে বোঝা যাচ্ছিল দেশের সার্বিক সংহতি এক অনাসৃষ্টির পালাক্রম। কিন্তু ভেতরের মূল কাঠামোতে যে অবক্ষয় আর পশ্চাদবর্তিতা সেটা দেশ জনগণের জন্য সার্বিক ব্যবচ্ছেদের চরম দুঃসময়। চোখ ধাঁধানো অবকাঠামোর বাহ্যিক আবরণ কোনোভাবেই মূল গণতান্ত্রিক কাঠামোতে জনসংহতির শেষ অবশিষ্টও রাখেনি। পচন ধরেছিল সেখান থেকেই ২০১৪, ২০১৮ ২০২৪ পালাক্রমের সর্বশেষ বিধ্বংসী বাতাবরণ।

তেমন অভেদ্য আচ্ছাদনে সারা জাতির পুঞ্জীভূত ক্ষোভ আর বিদ্রোহে রাষ্ট্রযন্ত্রের ভিত নড়ে ওঠা শুধু তাত্ত্বিক নয়, ব্যবহারিক ব্যবস্থাপনারও চরম ভাঙন আর ধ্বংসের খেলা। যা শুরু করা হয় বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। লাগাতার বৈপ্লবিক উন্মাদনায় বিরাজমান একদলীয় শাসন ব্যবস্থার মর্মমূলে যেন চরম দাবানল। আগুনের লেলিহান শিখা অদৃশ্য থেকে যে বিচ্ছুরণ প্রতিফলিত প্রতিবিম্ব হতে থাকে সেটাকে আর থামানো গেল না কোনোভাবেই।

রাষ্ট্রীয় পেশীশক্তির সর্বাত্মক প্রচেষ্টাকে উড়িয়ে দিয়ে বিজয়ের নিশান হাতে ছাত্রসমাজের যে নব অভ্যুত্থান তাও এক অবিস্মরণীয় নতুন স্বাধীনতা সূর্যের নব প্রভাতের আলোকোদয়। তরুণ উদীয়মান আধুনিক প্রযুক্তির বাংলাদেশের নবাগত স্থপতিরা যে মাত্রায় নিজেদের শক্তি আর সাহস দেখিয়ে গেলেন সেটাই সময়ের প্রজন্মের অদম্য কর্মস্পৃহা। সঙ্গে অন্তর্নিহিত দেশাত্মবোধের পরম নিদর্শন তো বটেই। জয় অর্জিত হলেও অনেক পুরনো সংস্কার আজও কাঠামোর অভ্যন্তরে সূক্ষ্মভাবে জিইয়ে আছে। সেখানে প্রবলভাবে যথার্থ সংস্কারের নবদিগন্ত উন্মোচন সময়ের অপরিহার্যতা। নতুন রাষ্ট্র আর শাসন গঠন প্রক্রিয়ায় হরেক পুরনো অশুভ শক্তি সক্রিয়। যার কারণে সব ক্ষেত্রে সঠিক ব্যবস্থাপনা গ্রহণ ধীরগতিতে হলেও কোনো এক সময় যথাস্থানে গিয়ে ঠেকবে। বিজয়ের অর্জনকে বারেবারে জয় করাও বিজ্ঞজনদের অভিমত। কারণ জয় ছিনিয়ে নেওয়ার নানামাত্রিক অপশক্তি ধারে-কাছেই ওঁৎপেতে থাকে সময় বুঝে মোক্ষম অস্ত্রটি বিদ্ধ করার জন্য। আমরা এখনো বহু সমস্যার জট খুলতে সক্ষম হইনি। দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসন-দুঃশাসনে কত শিকড় ভেতরের মর্মমূলে গেঁথে আছে তাও সমূলে উপড়ে ফেলা পরিস্থিতির ন্যায্যতা। তার ওপর আন্দোলন পরবর্তী বহু ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে সময় নিচ্ছে না।

দফায় দফায় সামনে আসছে বাদ-প্রতিবাদের হিড়িক। নানামাত্রিক দাবি-দাওয়ার আবেদন-নিবেদন। অস্থির পরিস্থিতি সামলানোই এই মুহূর্তে সব থেকে জরুরি। সবচেয়ে বিপন্ন সময় পার করছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বলয়। তেমন বদ্ধ দ্বার খুলে যাওয়াও জরুরি। সেখানেও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসার সুসংবাদ স্বস্তিদায়ক। উচ্চশিক্ষার দ্বারও এখনো সেভাবে নিয়মতান্ত্রিক অবস্থায় ফিরে যায়নি। সেখানে যত দেরি হবে জাতির মেরুদ- ততই উঁচু করতে সময়ক্ষেপণ করবে। গণমাধ্যমে এখনো খবর আসছে বহু কারখানায় উৎপাদন বন্ধ, যা দেশের অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি। আন্দোলন পরবর্তী নানামাত্রিক বিপন্নতাও বিব্রত করার মতো। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হামলার ঘটনায় উদ্বিগ্নÑ উৎকণ্ঠায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মানবসেবামূলক এমন কর্মযোগে সেনা, বিজিবি মোতায়েন করার খবরও গণমাধ্যমে উঠে আসে। আসলে এমন সব অঘটন অযৌক্তিক, অসঙ্গত তো বটেই। এটা পক্ষ-বিপক্ষ কারোরই কাম্য হতে পারে না। দেশটা সকলের। জাতীয় সম্পদ সকল নাগরিকের কল্যাণের জন্য। তার মধ্যে ভাঙচুর, অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করা স্বাধীন দেশের মুক্ত নাগরিকদের জন্য অন্যায্যতার চরম বহির্প্রকাশ মানাও কঠিন। ভাঙচুর মানেই দেশের সম্পদ নষ্ট করে দেওয়া।

আর মৃত্যু এমন এক বিধ্বংসী অকর্ম যার দাম সব মানুষকেই কোনো না কোনোভাবে দিতে হবে। আমাদের প্রত্যাশিত বিজয়, আকাক্সক্ষা, দাবি সবই অর্জনের মধ্য দিয়ে সফল হয়েছে। জেতার আনন্দের মধ্যেই গড়ে তোলার নবউদ্দীপনাও নিতান্ত জরুরি। তবে বিগত স্বেচ্ছাচারী সরকার অনেক ভুল-ভ্রান্তি, অনিয়ম, অপকর্মের চিহ্ন রেখে গেছে। আমাদের সেখান থেকেই শিক্ষা নিতে হবে। অসৎ এবং ধ্বংসাত্মক কাজের পুনরাবৃত্তি একেবারেই নয়। অসৎ-অপরাধীর সঙ্গে তাদের অপকর্মের পরাভূত করে নিজেদের শুভশক্তি আর কর্মদ্যোতনাকে মঙ্গলালোকেই উদ্ভাসিত করা প্রত্যেকের জন্য অনিবার্য এবং জরুরি। ন্যায়নিষ্ঠ আর শুভ কর্মে নিজেকে উৎসর্গ করা।

লেখক : সাংবাদিক

×