ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ জরুরি

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী

প্রকাশিত: ২১:০২, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ জরুরি

বিগত কয়েক বছর দেশ থেকে অর্থ পাচারের ভয়াবহ চিত্র

দুর্বৃত্তায়নের নিকৃষ্ট বেড়াজালে বিগত কয়েক বছর দেশ থেকে অর্থ পাচারের ভয়াবহ চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে। বিগত সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় কতিপয় লুটেরা বিভিন্ন ব্যাংকের মালিকানা দখল করেছে। পবিত্র ইসলামের নামে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ের আড়ালে জবরদস্তিমূলক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা ছিল ভয়ংকর। নানামুখী প্রতারণা-ছলচাতুরী-জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন কথিত প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা ও অর্থ ব্যবস্থাকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে ঋণ গ্রহণ ছিল অসৎ উদ্দেশ্যে পরিচালিত। ব্যাংকের মালিকানা প্রতিষ্ঠায় পরিবার-স্বজন ও নিকটাত্মীয় সমন্বয়ে পরিচালনা পর্ষদ গঠন ছিল সম্পূর্ণ অবৈধ। পছন্দের ব্যক্তিদের বিশাল অংকের বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে অনৈতিক সুবিধার প্রচলন ছিল প্রায় অবারিত।

ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল অসৎ-অযোগ্য ও নষ্ট চরিত্রের কিছু ধিকৃত মানুষ। প্রায় ক্ষেত্রে দানবরূপী এদের চরিত্র সচেতন মহলের কাছে উন্মোচিত ছিল। রাজনৈতিক প্রভাবের অপতৎপরতা ও ফাঁসিয়ে দেওয়ার অযৌক্তিক ভয়ভীতি প্রদর্শনে তারা ছিল পারদর্শী। 
অর্থ-ক্ষমতালিপ্সু, হিং¯্র নরপশুতুল্য মানুষগুলোর আত্মতৃপ্তির কোনো চৌহদ্দি নেই। যে কোনো ঘৃণ্য অবৈধ-অনৈতিক পন্থায় অর্থ উপার্জনই ছিল তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। ব্যক্তিস্বার্থে লোভ-লালসা চরিতার্থে জনগণের জমাকৃত অর্থ-সম্পদ লুণ্ঠনে তারা বিন্দুমাত্র সংকোচ বোধ করেনি। ধর্মপ্রীতি-মৃত্যুভয়-পাপপুণ্য, দেশ-মানবপ্রেম কোনো ধরনের অনুভূতি এই কদাচার মানুষগুলোকে স্পর্শ করেনি।

পাপিষ্ট কতিপয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ মদদে এসব পাপাচার সংঘটিত হয়েছে। অর্থ বিশ্লেষকদের মতে অত্যন্ত নিকৃষ্ট অপকৌশলে ব্যাংকগুলোকে প্রায় ঝুঁকিপূর্ণ করা ঋণখেলাপিরাই অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত। বিদেশে বাড়িঘর ক্রয়সহ সম্পদের পাহাড় গড়েছে অবৈধ উপায়ে অর্থ পাচারকারীরা। দুঃখজনক হলেও সত্য, বিভিন্ন সরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে এসবের প্রকৃত চিত্র জনসম্মুখে আনা হয়নি। দেশপ্রেমিক সাংবাদিকবৃন্দ ও সংবাদ মাধ্যমের নানা অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ভয়ংকর অর্থ পাচারের ঘটনা সম্পর্কে দেশবাসী অবগত হয়েছেন। 
বিশেষ কিছু ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান পারস্পরিক যোগসাজশে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করেনি। বরং ঋণ গ্রহণের নানামুখী কদর্য প্রক্রিয়ায় ঋণ প্রাপ্ত হয়েছে। পুনঃতফসিলকরণের নামে সুদমুক্তি এবং অধিক মাত্রায় ঋণ প্রদানের অপসংস্কৃতি দেশের অর্থ ব্যবস্থাকে প্রায় পঙ্গু করে দিয়েছে। শেয়ারবাজার থেকে শুরু করে প্রতিটি খাত এদের অভিশপ্ত প্রভাবের করায়ত্ত ছিল।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) পরিসংখ্যান অনুসারে ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে ব্যাংক খাতে ২৪টি বৃহৎ ব্যাংকে বড় ধরনের কেলেঙ্কারি হয়েছে। এতে অর্থ লোপাট হয়েছে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা এবং খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। সচেতন লেখক-সাংবাদিক-কলামিস্ট এসব বিষয়ে প্রচুর লেখালেখিও করেছেন।

পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এসবের কিছুই আমলে না নিয়ে অপরাধীদের অর্থ পাচারের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। দেশ বিধ্বংসী এত সব কর্মযজ্ঞের কোনো বিচারও হয়নি। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে আটককৃত কুখ্যাত এক অর্থ পাচারকারীর নিকট আত্মীয়ের কাছ থেকে সুদে-মূলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। প্রায় প্রত্যেক ব্যাংকেই এভাবে কতিপয় মালিকপক্ষ হীন চক্রান্তে লুট করেছে অর্থসম্পদ। 

ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বাংলাদেশে ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বিশ্লষণে দেখা যায় বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ঋণ গ্রহণের বিপরীতে জুন ২০২৪ পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে সুদ আদায় না করার ফলে ঋণের পরিমাণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত থাকা খেলাপি ঋণের তুলনায় জুন প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। উল্লেখ্য সময়ে ঋণ বিতরণও বেড়েছে ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর গত জুন পর্যন্ত সময়ে বিতরণ করা ঋণের ১ লাখ ২ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা বা ৩২ দশমিক ৭৭ শতাংশ খেলাপি হয়ে পড়েছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলো খেলাপি হয়েছে ৯৯ হাজার ৯২১ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। বিদেশী ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ যথাক্রমে ৩ হাজার ২২৯ কোটি এবং ৫ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। 
আমদানি-রপ্তানির বিভিন্ন অপকৌশলের আশ্রয়ে অর্থ পাচারের ভয়াবহ প্রক্রিয়াও ছিল অতিশয় দৃশ্যমান। দেশের আপামর জনগণের মুখে মুখে কানাডায় বেগমপাড়া, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমসহ উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থ বিনিয়োগের বিনিময়ে নাগরিকত্ব গ্রহণের বিষয়টি বিপুল উচ্চারিত।

সংবাদ মাধ্যমসহ বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, মালয়েশিয়া সরকারের ‘মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোম’ প্রকল্পে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের আমলা, রাজনীতিবিদসহ কয়েক হাজার নাগরিক নিবন্ধন করেছে। সেকেন্ড হোমের বাসিন্দাদের মতে সেখানে প্রকৃত বাংলাদেশীর সংখ্যা ১৪ থেকে ১৫ হাজারের মতো।

তাদের অনেকেই বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার করে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছে মালয়েশিয়ার কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে। গড়ে তুলেছে রেস্টুরেন্ট, পাঁচ তারকা হোটেল, গার্মেন্টস কারখানা, শপিং মল, ওষুধ শিল্পসহ নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অনেকে রাজধানী কুয়ালালামপুরসহ বড় বড় শপিং মলে দোকানও কিনেছে। দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি ন্যূনতম মমত্ববোধ এদের চরিত্রে পরিলক্ষিত নয়। সম্পূর্ণ ব্যক্তি-পরিবারের স্বার্থে দল ও সরকারের নানা পর্যায়ে ম্যানেজ করে তারা অহরহ এসব অশুভ কর্ম সম্পন্ন করেছে। 
অর্থ পাচার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক চারটি সংস্থার প্রতিবেদনে বাংলাদেশ থেকে ভয়াবহ টাকা পাচারের তথ্য নিয়মিত প্রকাশ পেয়েছে। সংস্থাগুলো হচ্ছেÑ ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা ও পরামর্শ প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিনান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই), সুইস ব্যাংক, ইউএনডিপি এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন আইসিআইজের পানামা ও প্যারাডাইস পেপার।

১৬ আগস্ট, ২০২৪ গণমাধ্যমে প্রকাশিত জিএফআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ১৫ বছরে দেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় ১১ লাখ কোটি টাকা। তন্মধ্যে ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৭ বছরে পাচার হয়েছে প্রায় ৫ লাখ কোটি টাকা এবং ২০২৩ সাল পর্যন্ত পরবর্তী ৮ বছরে হয়েছে প্রায় ৬ লাখ কোটি টাকা। যার সিংহভাগ কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র-সিঙ্গাপুর-যুক্তরাজ্য ও আরব আমিরাতসহ ১০টি দেশে পাচার হয়েছে বলে সংস্থাটির ধারণা।

উক্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আমদানি ও রপ্তানির আড়ালে দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিগত সরকারের কতিপয় প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপি-আমলা বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারে জড়িত। সংস্থাটির মতে, পাচারকৃত অর্থের ৮০ শতাংশের বেশি পাচার হয় বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমে। তাছাড়াও অবৈধ হুন্ডি, বিটকয়েন বা ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমেও দেশে থেকে প্রচুর পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে গেছে।

অর্থনীতিবিদগণ বিগত সময়ে দেশ থেকে টাকা পাচারের পাঁচটি কারণ নির্দিষ্ট করেছেন। কারণগুলো হচ্ছেÑ দেশে বিনিয়োগের পরিবেশের অভাব, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার শঙ্কা, রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর দুর্বল নজরদারি, আইনের শাসনের ঘাটতি এবং বেপরোয়া দুর্নীতি।  
বর্তমান ছাত্র-জনতার অসাধারণ গণঅভ্যুত্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নেতৃত্বে রয়েছেন বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব শান্তিতে নোবেল জয়ী খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সরকারে যারা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন তারাও সততা-যোগ্যতা-দক্ষতা-দেশপ্রেমে ঋদ্ধ ব্যক্তিত্ব। সমগ্র রাষ্ট্র ব্যবস্থার পর্যুদস্ততা পরিপূর্ণ মেরামতের প্রতিশ্রুতি ইতোমধ্যেই উচ্চারিত।

আপামর জনগণের সার্বিক আস্থায় তারা কর্মকৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অব্যাহত রেখেছেন। সকল প্রকার শোষণ-বঞ্চনা-দুর্বৃত্তায়ন সংহার করে একটি স্থিতিশীল অবস্থানে পৌঁছানো অবশ্যই জরুরি। অবিচল নিষ্ঠার সঙ্গে বর্তমান সরকারের কর্মকা- সম্পাদনে পর্যাপ্ত সময়েরও প্রয়োজন। আইনশৃঙ্খলার যথার্থ সুরক্ষায় জনগণের জানমালের নিরাপত্তা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি অর্থ ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সংস্কারও সমধিক তাৎপর্যপূর্ণ।       
বিশ্লেষকদের দাবি, আন্তর্জাতিক আইন-কানুন মেনেই পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। পাশাপাশি সরকারের সদিচ্ছা। উল্লেখ্য. কারসাজির জন্য দায়ী মূল কুশীলবদের ফিরিয়ে আনতেও পাওয়া যাবে আন্তর্জাতিক সহায়তা। তারা সুইস ব্যাংকসহ বিভিন্ন বিদেশী ব্যাংকে কার কত টাকা রয়েছে সেই তথ্য জানতে বর্তমান সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

১৪ আগস্ট, ২০২৪ মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসের অর্থায়ন প্রতিরোধে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা-নীতি প্রণয়ন-বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটির ২৮তম সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি অর্থ পাচারে জড়িতদের নামের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন। পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট দেশের আইন পর্যালোচনার পাশাপাশি বিদ্যমান আইনগুলো খতিয়ে দেখতে বলেন। দেশে যাতে নতুন করে কালো টাকার জন্ম না হয়, সে ব্যাপারেও পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। 
বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থ পাচার ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া একান্ত আবশ্যক। বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) বিশেষভাবে সক্রিয় হতে হবে। এছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগকেও সচেষ্ট হতে হবে।

যেহেতু অর্থ পাচারের সঙ্গে হুন্ডির বিষয়টি সরাসরি জড়িত, সেহেতু হুন্ডি বন্ধেও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। প্রণোদনা সত্ত্বেও প্রবাসীরা কেন বৈধ চ্যানেলে অর্থ প্রেরণে উৎসাহী হচ্ছেন না তা খুঁজে বের করতে হবে। টাকা পাচার প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধিসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন, আমদানি-রপ্তানি নীতি, জয়েন্ট স্টক আইনসহ আরও যেসব আইন রয়েছে সেগুলো যুগোপযোগী সংশোধন ও বাস্তবায়নের জরুরি উদ্যোগ নিতে হবে।

অর্থ পাচারকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা না হলে এ বিষয়ে কাক্সিক্ষত সুফল বয়ে আনবে না। সামগ্রিক পর্যালোচনায় এটি স্পষ্ট যে, পাচারকৃত অর্থ আদায় করা গেলে দেশের অর্থ ব্যবস্থায় নতুন মাত্রিকতা যোগ হবে। চলমান রাজস্ব আদায়সহ রাষ্ট্রের আয় সমৃদ্ধকরণে উল্লেখ্য উদ্যোগ নবতর দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। খেলাপি ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রেও কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে যথার্থ অর্থে সকল প্রকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে ঋণ সমন্বয় করাই হবে উৎকৃষ্ট উদ্যোগ। 

লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

×